আগামী বছরেই ক্রিপ্টো মুদ্রা বাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি গঠিত হতে পারে বলে পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানিয়েছেন। মূল ধারার বাজার ব্যবস্থার পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলো ক্রিপ্টো মুদ্রা বাজারে স্থিতিশীলতা আনতে যৌথ উদ্যোগে একটি আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রক সংস্থা গঠন করতে চাইছে। আইওএসসিও (ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অফ সিকিউরিটিজ কমিশন) এর প্রধান অ্যাশলি অল্ডার বলছেন যে বিটকয়েনের মতো ডিজিটাল মুদ্রাগুলোর ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা কর্তৃপক্ষ যে তিনটি বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছে তার মধ্যে একটি।
যে কারনে আসছে আন্তর্জাতিক ক্রিপ্টো মুদ্রা নিয়ন্ত্রক সংস্থা
চলতি সপ্তাহেই বিটকয়েনের দাম পড়েছে প্রায় ২০ শতাংশ। কেবল ক্রিপ্টো মুদ্রা বাজার নয় চলতি মাসেই বিবিসির মাধ্যমে জানা যায় যে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের শেয়ার বাজারেও দরপতন হচ্ছে। চলতি মাসে ৯ তারিখও এশিয়ার বাজারগুলোয় নিম্নমুখী প্রবণতা ছিল। কেবল বিটকয়েন নয়, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ ক্রিপ্টো মুদ্রা ইথেরিয়ামেরও দরপতন হয়েছে। কিছুদিন আগে ইথার কয়েনের দাম কমেছে ১০ শতাংশ। অন্যান্য বছরের তুলনায় ২০২২ সালে ক্রিপ্টো মুদ্রা বাজারে তেমন এমন ঘটনা ঘটেনি বললেই চলে। অ্যাশলি বলেন যে ক্রিপ্টো লেনদেনের নিয়মনীতি একিভূত করার জন্য একটি আন্তর্জাতিক সংস্থা এখন অতিজরুরী।
আইওএসসিও এর পাশাপাশি হংকংয়ের সিকিউরিটিজ অ্যান্ড ফিউচার কমিশনের প্রধান নির্বাহীর দায়িত্বে থাকা অ্যাশলি আরো বলেন যে এই মুহুর্তে ক্রিপ্টোর জন্য এমন কিছু নেই। বৃহস্পতিবার এক অনলাইন সম্মেলনে অ্যাশলি বলেন তাদের যে ঝুঁকির মোকাবেলা করতে হচ্ছে যদি সেগুলো ভালভাবে পর্যবেক্ষণ করে দেখা হয়, তবে দেখা যাবে যে ঝুঁকি একাধিক এবং প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ের আলোচনাগুলোর মধ্যে ক্রিপ্টো মুদ্রা ব্যবস্থা নিয়ে শঙ্কা রয়েছে। এরপর বাকি যে দুটি বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে কোভিড মহামারী এবং জলবায়ু পরিবর্তন।
টেরাইউএসডি এর লেনদেন ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার পর সিনেট ব্যাংকিং কমিটির চেয়ারম্যান মার্কিন আইপ্রণেতাদের ক্রিপ্টো নীতিমালা আরও কঠোর করার আহ্বান জানিয়েছেন। আইওএসসিও এর পাশাপাশি এক্ষেত্রে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় নির্মিত কাঠামোর আদলে ক্রিপ্টো মুদ্রা বিষয়ক সংস্থাটি গঠন করা হতে পারে বলে তিনি জানিয়েছেন। রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে যে ভার্চুয়াল সম্মেলনে নিজের বক্তব্যে অ্যাশলি ক্রিপ্টো মুদ্রা ব্যবস্থার মূল ঝুঁকিগুলো চিহ্নিত করেছেন। তার মতে, সাইবার নিরাপত্তা, স্বচ্ছতার অভাব এবং কর্মকাণ্ড কতোটা টেকসই, এই বিষয়গুলো নিয়েই বাজার নিয়ন্ত্রকরা শঙ্কিত রয়েছেন।
সর্বশেষ মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ক্রিপ্টো মুদ্রা বাজারের অস্থিতিশীলতা আবারও মূলধারার বাজার নিয়ন্ত্রকদের নজর কেড়েছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।
সংকেতবিহীন বাজার ও ক্রিপ্টো মুদ্রার দরপতন
আগের বছগুলোতে ক্রিপ্টো মুদ্রা বাজারে অপেশাদার বিনিয়োগকারীদের আধিপত্য ছিল। সে দৃশ্যপট এখন পাল্টেছে, বাজারে পেশাদার বিনিয়োগকারী এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের উপস্থিতি ও অংশগ্রহণ বেড়েছে। জাপানে পূঁজি বাজারের মান হিসেবে বিবেচিত নিককেই ইনডেক্সে পতন হয়েছে দুই শতাংশ। গত বছরের ডিসেম্বরে বিটকয়েনের দাম বহু গুণে বেড়ে গিয়েছিল। প্রতিটি বিটকয়েনের দাম তখন ৬৮ হাজার ডলার পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিল। কিন্ত এ বছরের জানুয়ারির দিকে বিটকয়েনের দাম মাত্র একদিনের ব্যবধানে কমে গিয়ে ৩০ হাজার ডলারে পৌঁছায়।
বিটকয়েনের দাম অবিরতভাবে এবং আকস্মিকভাবে ওঠানামা করে। ২০২০ সালের মার্চ মাসে একটি বিটকয়েন এর মূল্য ছিল প্রায় পাঁচ হাজার ডলার। বিটকয়েন নেটওয়ার্কে ২০২০ সালের মে মাসে শেষবার হাফিং হয়েছিল। হাফিং প্রক্রিয়াটি ক্রিপ্টোকারেন্সি নেটওয়ার্কে লেনদেন যাচাই করার জন্য পুরস্কার হিসেবে মাইনাররা যে বিটকয়েন পান তা অর্ধেক করে ফেলে। শেয়ার বাজার সংশ্লিষ্টদের কাছে বুল মার্কেট কথাটির মানে হলো বাজারের এমন অবস্থা যেখানে শেয়ারের দাম বাড়তে থাকে এবং বিনিয়োগকারীরা আরো বেশি শেয়ার কিনতে উদ্বুদ্ধ হন। আর এর বিপরীত পরিস্থিতিকে বেয়ার মার্কেট বলা হয়।
অন্যদিকে হাফিং প্রক্রিয়াটির সঙ্গে বিটকয়েন নেটওয়ার্কের মাইনারদের সংশ্লিষ্টতাই বেশি। ওএএনডিএ-এর আমেরিকা চ্যাপ্টারের সিনিয়র বাজার বিশ্লেষক এডওয়ার্ড মোয়া এক গবেষণা নোটে বলেন যে শেয়ারবাজারে ভয়াবহ পতনের পর ক্রিপ্টো ব্যবসায়ীরা ঝুঁকি নিতে না চাওয়ার ফলে বিটকয়েনের মূল্যও হ্রাস পেয়েছে। গেল মাসে রয়টার্সের মাধ্যমে জানা যায় যে হঠাৎ মূল্যপতনে ৩৪ হাজারে ডলারে নামার আগে এটি ৩৫ হাজার ৪৯ ডলারে ছিল। বিশ্বের বৃহত্তম এবং সবচেয়ে প্রচলিত এই ক্রিপ্টোকারেন্সির মূল্য এখন দুই মাস আগের তুলনায় প্রায় অর্ধেকে নেমে আসে।
শেয়ার বাজারে পতনের ঢেউ এসে বাণিজ্যের বাজারে অন্যান্য ঝুঁকিও এসেছে। এরই মধ্যে এসএন্ডপি ৫০০ এবং গত বছরের মার্চ মাসে ন্যাসড্যাক মহামারী শুরু হওয়ার পর সবচেয়ে বড় পতনের মুখোমুখি হয়েছে। মোয়া আরো বলেন যে বিটকয়েন বিপদসীমার মধ্যে রয়েছে এবং যদি এই মূল্য ৩৭ হাজার ডলার পর্যন্ত পৌছায় তবে এটি ৩০ হাজার ডলারে যেতে বেশি সময় নেবে না। ইথেরিয়াম ব্লকচেইন নেটওয়ার্কের মুদ্রা ইথারের দামও শনিবার ৬.৭ শতাংশ কমে দুই হাজার তিনশ’ ৯৬ ডলারে গিয়ে পৌঁছেছে। রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানা যায় যে একদিক থেকে মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ থেকে সুদের হার বৃদ্ধির সম্ভাবনা ছিল।
আর অপরদিকে মুদ্রাস্ফীতির আশঙ্কায় বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকি নেওয়ার প্রবণতা হ্রাস পাওয়ায় মুদ্রাটির বাজার মূল্যের বড় আকারে ধ্বস খেয়েছে বলে উঠে এসেছে। এছাড়াও স্টেবলকয়েন টেরাইউএসডি এর লেনদেন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। মূলধারার মুদ্রার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মূল্যায়িত ডিজিটাল মুদ্রাগুলোই স্টেবলকয়েন নামে পরিচিত।
আবার কবে ঊর্ধ্বমূখী হতে পারে ক্রিপ্টো মুদ্রার বাজার?
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন যে ক্রিপ্টো মুদ্রাটির দামে আবারো এমন উর্ধ্বমুখী আচরণের জন্য বিনিয়োগকারীদের ২০২৪ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে। এই ধ্বসের কারনে বৃহত্তম ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জগুলোর একটি হুওবি এর প্রধান ডু জুন বলেন যে ২০২৪ সালের শেষের দিকে অথবা ২০২৫ সালের শুরুর দিকে বিটকয়েন বাজার আবারো বুল মার্কেট দেখতে পারে।
২০১৭ এবং ২০২১ সালে বিটকয়েনের দাম বাড়লেও দু’বারই অল্প সময় বাদেই ক্রিপ্টো মুদ্রাটির দাম কমতে শুরু করে। সিএনবিসি বলে যে বর্তমানে বিটকয়েনের দাম এর ইতিহাসে সর্বোচ্চ দামের ৪০ শতাংশে নেমে স্থিতিশীল আছে।
ডু জুন বলেন যে তারা এই চক্র যদি চলতে থাকে তবে বেয়ার মার্কেট এর শুরুর দিকে আছেন। এই চক্র অনুসরণ করলে তারা ২০২৪ সালের শেষের দিকে বা ২০২৫ সালের শুরুর দিকে বিটকয়েনের বুল মার্কেটের প্রত্যাশা করতে পারেন। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সিএনিবিসি ক্রিপ্টো মুদ্রার দাম কমতে থাকায় এই খাতের বিনিয়োগকারীদের অনেকেই শঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন বলে জানিয়েছে। ডু জুন জানান যে ক্রিপ্টো মুদ্রার বাজারে বিটকয়েনের দামের এই ওঠা-নামা হাফিং নামক এক ধরনের প্রক্রিয়ায় প্রভাবিত এবং এটি নির্দিষ্ট সময় পরপর ঘটে বলে জানিয়েছেন। আর বিটকয়েনের মূল কোডেই হাফিং বিষয়টি লেখা থাকে।
ক্রিপ্টো মুদ্রা লেনদেনে বৈধতা পেয়ে এগিয়ে যে দেশগুলো
বর্তমানে ডিজিটাল মুদ্রা ক্রিপ্টো কারেন্সিকে ভবিষ্যতের মুদ্রা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ডিজিটাল মুদ্রা কোন কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষ কিংবা কোন ব্যাংক নিয়ন্ত্রণ করে না। কারণ ভার্চুয়াল জগতে এই মুদ্রার লেনদন হয়। যদিও এই মুদ্রার হিসাব রাখা অনেকটাই কঠিন তাই এই ধরনের হিসাব নিকাশের জন্য কম্পিউটারের দরকার হয়। কম্পিউটার নেটওয়ার্ক জটিল হিসাবনিকাশ করে একেকটি ডিজিটাল মুদ্রা সংগ্রহ করে। নিজস্ব উদ্যোগে ব্যক্তি পর্যায়ে পরিচালিত বিশাল একটি কম্পিউটার নেটওয়ার্ক প্রতিটি পেমেন্ট এবং মুদ্রার লেনদেন তত্ত্বাবধান করে এবং সেগুলোর উপর নজর রাখে।
গত মাসে ইউক্রেনে ক্রিপ্টো মুদ্রা বৈধতা পেয়েছে। রাশিয়ার আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে ইউক্রেন কয়েক কোটি ডলারের অনুদান ক্রিপ্টো মুদ্রা হিসেবে পেয়েছে। প্রযুক্তিভিত্তিক সাইট ভার্জ জানিয়েছে যে জেলেনস্কি যে বিলটিতে স্বাক্ষর করেছেন তাতে ফেব্রুয়ারি মাসেই ইউক্রেনের পার্লামেন্ট অনুমোদন দিয়েছিল। নতুন একটি বিলে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি স্বাক্ষর করেছেন, যা তাৎক্ষণিকভাবে দেশটিতে ক্রিপ্টো মুদ্রার লেনদেনকে বৈধতা দিয়েছে। ক্ষেত্রবিশেষে মূল ধারার আর্থিক ব্যবস্থার বিকল্প হিসেবে বিবেচিত মুদ্রা ব্যবস্থাটিকে জেলেনস্কি বৈধতা দিয়েছেন।
রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধের শুরু থেকেই ক্রিপ্টো মুদ্রা একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ইউক্রেনে আসা আর্থিক অনুদানের সিংহভাগ ক্রিপ্টো মুদ্রা হিসেবে এসেছে। অন্যদিকে, ক্রিপ্টো মুদ্রাগুলোকে বাণিজ্যিক অবরোধের জেরে দুর্বল হয়ে পড়ে রাশিয়ার অর্থনীতিতে নাগরিকদের শেষ ভরসা হিসেবে দেখা হচ্ছে। এক প্রতিবেদনে ভার্জ জানায় যে ইউক্রেনের সাধারণ নাগরিকরাও লক্ষ্যণীয় হারে ক্রিপ্টো সম্পদ কিনছেন। স্বাক্ষকৃত বিলটি ইউক্রেনে ভার্চুয়াল সম্পদের বৈধ বাজার প্রচলনের পরিস্থিতি সৃষ্টি করবে বলে ভার্জ জানিয়েছে।
বিশ্বের বৃহত্তম ক্রিপ্টো মুদ্রা এক্সচেঞ্জ বাইন্যান্স বাহরাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছ থেকে প্রথম ক্রিপ্টো সেবাদাতা লাইসেন্স পেয়েছে। এ প্রসঙ্গে বাহরাইনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক যৌথ বিবৃতিতে বাইন্যান্স প্রধান চ্যাংপেং ঝাও বলেন যে বাহরাইন থেকে পাওয়া এই লাইসেন্সটি বিশ্বের সবখানে লাইসেন্সধারী হওয়ার যাত্রায় একটি বড় মাইলফলক। জিসিসি (গালফ কো অপারেশন কাউন্সিল) এবং বাহরাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক মঙ্গলবারেই প্রথম ক্রিপ্টো সম্পদ সেবাদাতা লাইসেন্স দেওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে। তিনি আরো বলেন যে নীতিনির্ধারণী শর্তগুলো অর্থপাচার এবং সন্ত্রাস-বিরোধী কঠোর আর্থিক নীতিমালার মাধ্যমে ব্যবহারকারীদের নিরাপদ রাখবে।
পেনিনসুলার দক্ষিণে অবস্থিত জিব্রাল্টার একসময়ে ‘ট্যাক্স হেভেন’ হিসেবে পরিচিতি ছিল। গত বছর ব্লকচেইন প্রতিষ্ঠান ভ্যালেরিয়াম এই জিব্রাল্টারের স্টক এক্সচেঞ্জ কিনে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল। আইবেরিয়ান ভ্যালেরিয়ামের প্রস্তাব অনুমোদন পেলে জিব্রাল্টার ডোজকয়েন ও বিটকয়েনসহ অন্যান্য ক্রিপ্টো মুদ্রা লেনদেন প্ল্যাটফর্মের ভূমিকা পালন করবে বলে জানা যায়। পাশাপাশি প্রচলিত বন্ডের লেনদেন হবে বলে ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ান প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে। এর পর এ বছরের জানুয়ারিতে জিব্রাল্টারের ৯০% শেয়ার ক্রয় করে ভ্যালেরিয়াম।
এছাড়াও এল সালভাদর বিশ্বের প্রথম ‘বিটকয়েন সিটি’ নির্মাণের পরিকল্পনা করেছে। এল সালভাদরের প্রেসিডেন্ট সেন্ট্রাল আমেরিকার দেশটিতে বিনিয়োগ বাড়াতে প্রধান উৎস হিসেবে ক্রিপ্টোকারেন্সি প্রযুক্তিকেই বাছাই করছেন। তার ঘোষিত বিটকয়েন সিটির প্রাথমিক তহবিল বিটকয়েন বন্ডের মাধ্যমে আসবে। সম্প্রতি বিটকয়েন নিয়ে প্রচারণা চালাতে এল সালভাদরে ‘বিটকয়েন সপ্তাহ’ পালিত হয়েছে। পুরো সপ্তাহজুড়ে চলা প্রচারণার শেষ দিনে প্রেসিডেন্ট নাইব বুকেলে জানিয়েছেন যে প্রস্তাবিত বিটকয়েন সিটিতে ভ্যাট ছাড়া আর কোন কর থাকবে না।
অর্থাৎ, এখানে ভ্যাট ছাড়া আলাদা করে কর প্রদান করার কোন প্রয়োজন নেই। জিব্রাল্টার, ইউক্রেন, বাহরাইন ও এল সালভাদরের পাশাপাশি ক্রিপ্টো মুদ্রা বিটকয়েন তার খনি ব্যবসায় বা কয়েন মাইনিং-এ মধ্য এশিয়ার যে দেশটি এখন দ্বিতীয় স্থানে, সেটি কাজাখস্তান এবং প্রথম যে দেশ সেটি হচ্ছে আমেরিকা। এক সময় চীনেও বিটকয়েনের মাধ্যমে ব্যবসায়িক লেনদেন হতো, কিন্তু হঠাৎ করেই গত বছর চীন ক্রিপ্টোকারেন্সির খনিগুলো নিষিদ্ধ করে দেয়, তখন থেকেই প্রতিবেশি কাজাখস্তানে এই ব্যবসা দ্রুত প্রসার লাভ করতে শুরু করে। কাজখস্তান বর্তমানে বিটকয়েন লেনদেনের দ্বিতীয় তালিকায়।
মলডির শুবাইয়েভা নামের এই প্রথম একজন নারী নতুন ব্যবসায়ে যোগ দিয়েছেন। তার জমির উপর তার প্রকৌশলী ও নির্মান শ্রমিকেরা নতুন বিটকয়েন খনি গড়ে তুলছেন। কাজাখস্তানে ক্রিপ্টোকারেন্সির যে নতুন ব্যবসা দ্রুত জমে উঠেছে, তাতে নেমে পড়া নতুন ব্যবসায়ীদের মধ্যে মলডির শুবাইয়েভা একজন। আলমাটি শহরে তার নতুন খনি তৈরির যাবতীয় বিষয়গুলো তিনি দেখাশোনা করছেন। মলডির বলছেন যে কাজাখস্তানে এই বিটকয়েনের ব্যবসা এবং একই সাথে তার নিজের ব্যবসাও ভালোই উন্নতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছিল। বিশেষ করে গত বছরে ব্যবসার ঊর্ধ্বগতিতে কোন সময়ই সমস্যার সৃষ্টি হয়নি।