Reading Time: 2 minutes

২০২০ সালে প্রযুক্তি সেক্টরে বেইজিংয়ের ক্র্যাকডাউনের পর থেকে চীনভিত্তিক প্রযুক্তি ও কর্পোরেট জায়ান্ট আলিবাবার যুক্তরাষ্ট্র অংশের শেয়ারে দরপতন ঘটেছে প্রায় ৭০ শতাংশ। আর এরই মধ্যে আলিবাবা গ্রুপ পুনর্গঠনের ঘোষণা এসেছে। এতে এই দানবীয় কর্পোরেশন ছয়টি ভিন্ন ভিন্ন কোম্পানিতে ভাগ হবে। ঘোষণার পরপরই শেয়ারমুল্য বেড়ে গেছে চীনা এই প্রযুক্তি জায়ান্ট আলিবাবা গ্রুপের। মঙ্গলবার নিউ ইয়র্কে আলিবাবার শেয়ারমূল্য বেড়েছে ১৪ শতাংশ।

আর বুধবার হংকংয়ে কোম্পানিটির শেয়ারমূল্য বেড়েছে ১৩ শতাংশের বেশি। কোম্পানি বলছে, এই পদক্ষেপের মাধ্যমে তৈরি ছয়টি বিভাগের পাঁচটিই বিভিন্ন ফান্ডিং ও আইপিও বা ইনিশিয়াল পাবলিক অফারিং বিকল্প খুঁজে দেখবে। গত তিন বছরে খুব কমই জনসমক্ষে এসেছেন আলিবাবার প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক মা। তবে, দীর্ঘ অনুপস্থিতির পর এই সপ্তাহে তাকে চীনে আবার দেখতে পাওয়ার খবর ব্যাপক ভাবে সাড়া পাওয়ার পরপরই এই ঘোষণা এলো।

কোম্পানির বিভিন্ন ইউনিটের নিজস্ব প্রধান নির্বাহী ও পরিচালনা পর্ষদ থাকবে। তবে, অনলাইন কেনাকাটার প্ল্যাটফর্ম তাওবাও টিমল কমার্স গ্রুপ পুরোপুরি আলিবাবার মালিকানায় থাকবে। আর বাকি কোম্পানিগুলো নিজেদের মূলধন বাড়ানোর ও শেয়ারবাজার তালিকা খোঁজার অনুমতি পাবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে বিবিসি। আলিবাবা বলেছে, নিজেদের ব্যবসা ভেঙে ফেলার এই সিদ্ধান্ত কোম্পানির ২৪ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় পুনর্গঠনের ঘটনা।

চীনা প্রযুক্তি বিশ্লেষক রুই মা বিবিসিকে বলেন, বিনিয়োগকারীরা এই পুনর্গঠন ব্যবস্থায় সম্ভাবনা দেখেছেন কারণ আলিবাবার বিভিন্ন ব্যবসায়িক বিভাগ নিজস্ব গতিতেই এগিয়ে যেতে সক্ষম। তিনি আরও বলেন যে, প্রতিটি ইউনিট আরও সুবিন্যস্ত হবে ও এতে অ্যান্টিট্রাস্ট নীতিমালা লঙ্ঘনের শিকার হওয়ার ঝুঁকিও তুলনামূলক কম। যুক্তরাষ্ট্রের সিকিউরিটিস অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন ও হংকং স্টক এক্সচেঞ্জে জমা দেওয়া নথিতে আলিবাবা বলেছে, এইসব ইউনিট নিজ নিজ বাজার ও শিল্পের বিভিন্ন সুযোগ কাজে লাগাবে।

বিজ্ঞাপন (কেন?)

এর ফলে, আলিবাবা গ্রুপের ব্যবসায়িক মানও বৃদ্ধি পাবে। বাজার হলো সেরা লিটমাস পরীক্ষা। আর প্রতিটি ব্যবসায়িক দল ও কোম্পানি চাইলেই বিভিন্ন উন্মুক্ত তহবিল ও আইপিও গ্রহণ করতে পারে বলে কর্মীদের এক চিঠিতে বলেন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী ড্যানিয়েল ঝাং। এদিকে, এক বছরের বেশি সময় বিদেশে কাটিয়ে সম্প্রতি আলিবাবার প্রতিষ্ঠাতা মার চীনে ফেরা নিয়ে এই সপ্তাহে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে আলিবাবা মালিকানাধীন সংবাদপত্র চায়না মর্নিং পোস্ট।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, নিজের কর্মীদের সঙ্গে দেখা করার পাশাপাশি হাংঝউ শহরের ইউংগু স্কুলের বিভিন্ন ক্লাসরুম পরিদর্শন করেন তিনি। আর এখানেই আলিবাবার সদর দপ্তর অবস্থিত। চীনের প্রযুক্তি উদ্যোক্তাদের ওপর ক্র্যাকডাউনের ঘটনায় গুম হয়ে যাওয়া সবচেয়ে হাই প্রোফাইল ধনী ব্যক্তি ছিলেন জ্যাক মা। ২০২০ সালে চীনের আর্থিক নিয়ন্ত্রকদের সমালোচনা করার পর থেকে অনেকটা আড়ালেই আছেন ৫৮ বছর বয়সী মা। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে আলিবাবার চেয়ারম্যানের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ান তিনি।

কোম্পানিটির ওপর বেশ কয়েক বছর নিয়ন্ত্রণের চাপ নেমে আসার পর আলিবাবার এই পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত এসেছে বলে জানান বিনিয়োগ গবেষণা কোম্পানি থার্ড ব্রিজের প্রযুক্তি, গণমাধ্যম ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রধান স্কট কেসলার। গত কয়েক মাসে বিভিন্ন প্রযুক্তি কোম্পানির ওপর সরকার কিছুটা কম নির্দয় ছিল। মানুষ ভাবছে, এটা এমন এক সময়ের সূচনা হতে পারে, যেখানে সরকার বিভিন্ন কোম্পানির প্রতিপক্ষ হিসেবে না দাঁড়িয়ে তাদের সমর্থন জানাবে বলে যোগ করেন তিনি।

সাবস্ক্রাইব করুন The Penguins Club খবরপত্রিকায়

প্রতি শুক্রবার বিশেষ খবর এবং আলোচনায় অংশগ্রহন করতে আপনার ইমেইল দিন।


Tagged:
About the Author

বিগত প্রযুক্তি বিষয়ক লেখালেখি করছি - বাংলা লেখিকা

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.