Reading Time: 2 minutes

মূলত বিশ্বের বিভিন্ন দেশের গেমারদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা, যোগাযোগ ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনে অনলাইন গেমিংয়ের প্রসার হচ্ছে। গেমিং বর্তমানে বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি খাত। কিশোর থেকে তরুণ সবাই গেমিংয়ের সঙ্গে যুক্ত। অনলাইন ও অফলাইন দুভাবেই গেম খেলা যায়। তবে অনলাইন বর্তমানে বেশি জনপ্রিয়। আর এই অনলাইন গেমিংয়ের সঙ্গে সাইবার হামলাও বাড়ছে। বিশেষ করে কম বয়সীদের ওপর বেশি আক্রমণ করা হচ্ছে।

গেম খেলার জন্য শিশু ও কিশোরদের নিজস্ব কম্পিউটার থাকে না। এক্ষেত্রে তারা অভিভাবকের ডিভাইস ব্যবহার করে থাকে। সাইবার আক্রমণগুলোর মাধ্যমে মূলত প্রাপ্তবয়স্কদের ক্রেডিট কার্ড ও ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা চালানো হয়। ইন্টারনেটের নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা দেখতে পান, ২০২২ সালে সাইবার অপরাধীরা কম বয়সী গেমারদের ওপর ৭০ লাখের বেশি আক্রমণ চালিয়েছে। রবলক্স, মাইনক্রাফট, ফোর্টনাইট ও অ্যাপেক্স লিজেন্ডস গেমসের মাধ্যমে এসব হামলা পরিচালনা করা হয়েছে।

দ্যা ডার্ক সাইড অব কিডস ভার্চুয়াল গেমিং ওয়ার্ল্ডস শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে। প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, ২০২২ সালে ৩-১৬ বছর বয়সী শিশুদের ওপর আক্রমণের হার ৫৭ শতাংশ বেড়েছে। ২০২১ সালে এর পরিমাণ ছিল ৪৫ লাখ। প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, গত বছরের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৪০ হাজারের বেশি ব্যবহারকারী শিশুদের জনপ্রিয় গেম রবলক্সের নামে ছদ্মবেশে থাকা ক্ষতিকর ফাইল ডাউনলোডের চেষ্টা চালিয়েছে, যা ২০২১ সালের ৩৩ হাজার গেমারের তুলনায় ১৪ শতাংশ বেশি।

রবলক্সের ছয় কোটি ব্যবহারকারীর অর্ধেকের বয়সই ১৩-এর নিচে। ফলে যারা হামলার শিকার হয়েছে তারা সবাই অপ্রাপ্তবয়স্ক ও সাইবারনিরাপত্তার বিষয়ে অজ্ঞ। তরুণ গেমারদের অনেকেই গেম টাইটেলযুক্ত ফিশিং পেজ ভিজিট করেছে। আর তারাই বেশি সাইবার আক্রমণের শিকার হয়েছে। প্যারেন্ট ডিভাইসগুলোয় পৌঁছানোর জন্য শিশু-কিশোরদের ফিশিং সাইটে প্রবেশ করে ক্ষতিকর ফাইল ডাউনলোড করার জন্য প্রলুব্ধ করা হয়। গত বছর ২ লাখ ৩২ হাজার ৭৩৫ গেমার ৪০ হাজারের বেশি ক্ষতিকর ফাইলের মুখোমুখি হয়েছে।

বিজ্ঞাপন (কেন?)

যেগুলোর মধ্যে ম্যালওয়্যার থেকে শুরু করে অপ্রয়োজনীয় অ্যাপও ছিল। অধিকাংশ ফাইলই শিশুদের গেম টাইটেল হিসেবে ছদ্মবেশ ধারণ করেছিল। এমনকি তিন-আট বছর বয়সী শিশুদের জন্য তৈরি করা পপি প্লেটাইম ও টোকা লাইফস ওয়ার্ল্ডের মতো গেমকেও ছাড় দেয়া হয়নি। সাইবার আক্রমণ থেকে শিশুদের সুরক্ষিত রাখতে বেশকিছু পদ্ধতির কথাও জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রথমত, শিশুদের অনলাইন অ্যাক্টিভিটির বিষয়ে আগ্রহ দেখাতে হবে।

দ্বিতীয়ত, ডিভাইসে প্যারেন্টাল কন্ট্রোল অ্যাপ ইনস্টল করা। তবে অ্যাপ ইনস্টল করার কারণ জানাতে হবে শিশুদের। তৃতীয়ত অভিভাবককে নিজের স্বভাব পরিবর্তন করতে হবে। যেমন কথা বলার সময় ও খাওয়ার সময় সেলফোন ব্যবহার না করা। শিশুরা কী শিখছে সেটিও যাচাই করতে হবে। চতুর্থ ধাপ হিসেবে শিশুর সঙ্গে ইন্টারনেট নিরাপত্তার বিষয়ে কথা বলতে হবে। দ্যা ডার্ক সাইড অব কিডস ভার্চুয়াল গেমিং ওয়ার্ল্ডসের তথ্যানুযায়ী, গত বছর রবলক্স, মাইনক্রাফট, ফোর্টনাইট ও অ্যাপেক্স লিজেন্ডসের নামে ৮ লাখ ৭৮ হাজারের বেশি ফিশিং পেজ তৈরি করা হয়েছে।

এসব সাইটে গেমগুলোর জন্য চিট কোড ও মডিফিকেশন পাওয়ার বিষয়ে জানানো হতো। এমনকি সেখানে কীভাবে চিট কোড ও মডগুলো ইনস্টল করা যায় সে সম্পর্কিত নির্দেশনাও ছিল। ফাইল ইনস্টলের জন্য কীভাবে ডিভাইসে থাকা অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার বন্ধ করতে হবে সে-সংক্রান্ত বর্ণনাও দেয়া হয়। ব্যবহারকারীর ডিভাইসে যতক্ষণ অ্যান্টিভাইরাস বন্ধ থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত আক্রমণকারীরা তথ্য হাতিয়ে নিতে পারবে। প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, গত বছর মাইনক্রাফট ও রবলক্সকে কেন্দ্র করেই বেশি আক্রমণ পরিচালনা করা হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব করুন The Penguins Club খবরপত্রিকায়

প্রতি শুক্রবার বিশেষ খবর এবং আলোচনায় অংশগ্রহন করতে আপনার ইমেইল দিন।


Tagged:
About the Author

বিগত প্রযুক্তি বিষয়ক লেখালেখি করছি - বাংলা লেখিকা

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.