প্রজেক্ট ক্লোভার নামের নতুন এক প্রকল্পে আলাদা এক নিরাপত্তা কোম্পানিকে ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম টিকটক ‘ডেটা প্রবাহ তদারকি’ করতে দেখা যাবে। ফলে, ডেটার মাধ্যমে কোনো নির্দিষ্ট ব্যবহারকারীকে শনাক্তের উপায় টিকটক তুলনামূলক জটিল করে ফেলছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে বিবিসি। টিকটক ব্যবহারকারীর ডেটা চীন ব্যবহার করবে এমন উদ্বেগ কমাতে নতুন নিরাপত্তা ব্যবস্থা চালু করেছে ভিডিও শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম টিকটক।
কোম্পানি বলছে, তাদের সিকিউরিটি গেটওয়ে কোনো কর্মীর ইউরোপীয় ব্যবহারকারীর তথ্যে প্রবেশাধিকারের পাশাপাশি ইউরোপের বাইরে ডেটা স্থানান্তরের নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় বাড়তি স্তর যোগ করবে। এদিকে, নিজস্ব কর্মীদের ডিভাইসে বাইটড্যান্স মালিকানাধীন এই অ্যাপ নিষিদ্ধ করেছে ইউরোপীয় কমিশন। প্রজেক্ট ক্লোভার ঘোষণার আগের দিন যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্র্যাট পার্টি থেকে নির্বাচিত সিনেটর মার্ক ওয়ার্নার ও রিপাবলিকান পার্টির সিনেটর জন থুনের প্রচারিত এক বিলে সমর্থন জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
এর মাধ্যমে বিভিন্ন বিদেশী মালিকানাধীন প্রযুক্তি নিষিদ্ধ করার ক্ষমতা পাবেন তিনি। এই মাসের শেষে মার্কিন কংগ্রেসের সামনে সাক্ষ্য দেবেন টিকটকের প্রধান নির্বাহী শউ জি চিউ। এই বিস্তৃত ভূ-রাজনীতির মধ্যে আটকা পড়ে যাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করা কঠিন। তবে, এর সঙ্গে সত্যিই কোম্পানির কোন সম্পর্ক নেই বলেন টিকটকের যুক্তরাষ্ট্র অংশের জননীতি প্রধান মাইকেল বেকারম্যান। চীনে প্রায় সকল শীর্ষ প্রযুক্তি কোম্পানিরই নিজস্ব প্রকৌশলী আছে।
তিনি আরও বলেন, টিকটকই একমাত্র কোম্পানি নয়, যারা ব্যপক হারে ডেটা সংগ্রহ করে। আর তাই এর কিছু সংখ্যক উদ্বেগ সকল কোম্পানিতেও ছড়িয়ে পড়বে। সেজন্যই তারা এমন এক সিস্টেম তৈরি করছি, যা নিশ্চিত করবে যে ব্যবহারকারীর ডেটা সুরক্ষিত আছে। মঙ্গলবার বিবিসি রেডিও ৪ এর ‘ওয়ার্ল্ড টুনাইট’ অনুষ্ঠানে টিকটক বলেছে, তাদের শঙ্কা, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান কুটনৈতিক অস্থিরতায় তাদের ব্যবসায় ক্ষতি হচ্ছে। স্থানীয়ভাবে ইউরোপীয় ব্যবহারকারীর ডেটা সংগ্রহের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে, দুটি নতুন ডেটা সেন্টা চালুর পরিকল্পনা প্রকাশ করেছে টিকটক।
দুটো ডেটা সেন্টারেই নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহৃত হবে। আর এগুলো থার্ড পার্টির সহায়তায় পরিচালিত হবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে বিবিসি। এগুলোর সর্বমোট বার্ষিক খরচ একশ ২০ কোটি ডলার। এর একটি আয়ারল্যান্ডের রাজধানী ডাবলিনে, অন্যটি নরওয়ের হামার শহরে অবস্থিত। ২০২২ সাল থেকেই প্রজেক্ট ক্লোভার নিয়ে কাজ করছে কোম্পানিটি। নিজেদের প্রয়োজনীয়তার কথা বিবেচনায় নিয়েই এই পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
কারণ কোম্পানিকে বিশ্বাস অর্জন করতে হবে বলেন টিকটকের ইউরোপ অংশের সরকার সম্পর্ক ও জননীতি বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট থিও বারট্রাম। ‘প্রজেক্ট টেক্সাস’ নামে একই ধরনের প্রকল্পের কাজ চলছে যুক্তরাষ্ট্রে।