Reading Time: 2 minutes

ফেসবুক যুক্তরাজ্যভিত্তিক রাজনৈতিক পরামর্শদাতা প্রতিষ্ঠান কেমব্রিজ অ্যানালিটিকাকে অনুমতি ছাড়াই আট কোটি ৭০ লাখ সেবাগ্রাহকের গোপন তথ্য সরবরাহ করছিল। প্রতিষ্ঠাতা জাকারবার্গ নিজেই ব্যবহারকারীদের অনুমতি ছাড়া ডেটা সংগ্রহের পথ করে দিয়েছিলেন বলে ডিস্ট্রিক্ট অফ কলোম্বিয়ার অ্যাটর্নি জেনারেল কার্ল রাসিন অভিযোগ তুলে মামলা করেছিলেন। ব্যবহারকারীর অনুমতি ছাড়াই তাদের ডেটা সংগ্রহ করার পেছনে মূল হোতা যে মার্ক জাকারবার্গই তা প্রমাণিত হয়েছে আগেই।

কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা কেলেঙ্কারির ঘটনায় ২০১৮ সালেই মেটার বিরুদ্ধে রাসিন মামলা দায়ের করেছিলেন। এরপর থেকেই এ খবর ফাঁস হওয়ার পর ক্লাস অ্যাকশন মামলার মুখে পড়ে বিশ্বের বৃহত্তম সামাজিক মাধ্যমটি। সেবাগ্রাহকদের অনুমতি ছাড়াই তাদের ডেটায় কেমব্রিজ অ্যানালিটিকাসহ তৃতীয় পক্ষীয় প্রতিষ্ঠানকে প্রবেশাধিকার দেওয়া নিয়ে ক্লাস-অ্যাকশন মামলায় ৭২ কোটি ৫০ লাখ ডলারে আপোস করতে রাজি হয়েছে ফেসবুকের মূল কোম্পানি মেটা

রয়টার্স জানিয়েছে, মেটার সমঝোতা প্রস্তাব প্রকাশ্যে এসেছে বৃহস্পতিবারের আদালতে জমা দেওয়া নথিপত্র থেকে। বাদীপক্ষের আইনজীবীরা বলছেন, প্রস্তাবিত ক্ষতিপূরণের ওই অংক যুক্তরাষ্ট্রের ডেটা গোপনীয়তা আইনে এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ। একই সঙ্গে এটা হবে মেটার এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ। গত তিন বছরে তারা গোপনীয়তা প্রশ্নে তাদের কার্যপ্রণালী দেখিয়েছেন সবাইকে এবং সামগ্রিক গোপনীয়তা প্রকল্প চালু করা হয়েছে বলে বিবৃতিতে বলেছে মেটা।

এই ঐতিহাসিক আপোস এই জটিল ও অভূতপূর্ব মামলার বাদীদের স্বস্তি দেবে, আদালতে বলেন বাদীপক্ষের প্রধান আইনজীবী ডেরেক লোজার। তবে আপোসের অংশ হিসেবে নিজেদের কোনো ভুল স্বীকার করেনি ফেসবুকের মূল কোম্পানি মেটা। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কোম্পানির বিনিয়োগকারীদের স্বার্থের কথা ভেবেই এ আপোস প্রস্তাব। স্যান ফ্রান্সিসকোর ফেডারেল আদালত অনুমোদন দিলে তবেই তা কার্যকর হবে। বর্তমানে বিলুপ্ত কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা ২০১৬ সালে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিয়েছিল।

ভোটারদের টার্গেট করে বিজ্ঞাপনী প্রচার চালানোর লক্ষ্যে কয়েক কোটি ফেসবুক ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ করেছিল তারা। তবে বৃহস্পতিবারের আপোস প্রস্তাবের মাধ্যমে সেবাগ্রাহকদের পক্ষ থেকে জাতীয় আইন ভঙ্গের অভিযোগে যে মামলা করা হয়েছিল, তা থেকে নিস্তার পাওয়ার পথে একধাপ এগোলো মেটা। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ ছিল, মেটা তাদের গোপন তথ্যের নিরাপত্তা দিতে পারে এমন ধারণা দিয়ে বিভ্রান্ত করেছিল।

বিজ্ঞাপন (কেন?)

কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে কয়েক হাজার তৃতীয় পক্ষীয় প্রতিষ্ঠানকে সাধারণ ব্যবহারকারীদের ডেটায় প্রবেশাধিকার দিয়েছিল কোম্পানিটি। ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ট্রেড কমিশনের বা এফটিসি এর সঙ্গে আপোস করতে ৫০০ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ দিতে রাজি হয়েছিল মেটা। সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সেচেঞ্জ কমিশন বা এসইসি এর বিনিয়োগকারীদের বিভ্রান্ত করার অভিযোগ নিষ্পত্তি করতে আরও ১০ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ দিয়েছিল মেটা।

রয়টার্স জানিয়েছে, কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা কেলেঙ্কারি নিয়ে এখনও তদন্ত করছেন কয়েকটি অঙ্গরাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেলরা। ওয়াশিংটন ডিসির অ্যাটর্নি জেনারেলের দায়ের করা একটি মামলা এখনও চালু আছে। ট্রাম্প নির্বাচনে ভোটারদের গোপন তথ্য সংগ্রহ করা নিয়ে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা একটি তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেছিল ফেসবুকের অনুমোদনপ্রাপ্ত এক গবেষকের মাধ্যমে। ফেসবুক প্ল্যাটফর্মে নিজস্ব একটি অ্যাপ চালু করার অনুমোদন ছিল ওই গবেষকের যা কয়েক কোটি ব্যবহারকারীর তথ্য সংগ্রহ করেছিল।

ওই কেলেঙ্কারির ঘটনায় মেটার ব্যবসায়িক কৌশল নিয়ে তদন্তে নেমেছিল যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি সংস্থাগুলো। সশরীরে কংগ্রেসে গিয়ে সাক্ষ্য দিতে বাধ্য হয়েছিলেন মেটা প্রধান মার্ক জাকারবার্গ।

সাবস্ক্রাইব করুন The Penguins Club খবরপত্রিকায়

প্রতি শুক্রবার বিশেষ খবর এবং আলোচনায় অংশগ্রহন করতে আপনার ইমেইল দিন।


Tagged:
About the Author

বিগত প্রযুক্তি বিষয়ক লেখালেখি করছি - বাংলা লেখিকা

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.