সম্প্রতি ম্যাক ল্যাপটপের বাটারফ্লাই কিবোর্ড নিয়ে অ্যাপল এক ক্লাস অ্যাকশন মামলা নিষ্পত্তি করতে পাঁচ কোটি ডলার জরিমানা দিতে রাজি হয়েছে। নির্দিষ্ট কিছু ম্যাকবুক মডেলে এই কিবোর্ড নিয়ে ব্যবহারকারীদের অভিযোগের শেষ ছিল না। ল্যাপটপের পাতলা শ্যাশি তৈরিতে বাটারফ্লাই কিবোর্ড সহায়তা করলেও মেশিনের ভেতরে ধুলোময়লা ঢোকার ফাঁদও ছিল এটি। পাশাপাশি কি প্রেস করার পর বাটন সেঁটে থাকা যেটি স্টিকি বাটন নামে পরিচিত এবং সহজেই বাটন ভেঙে যাওয়ার অভিযোগও ছিল।
গ্রাহকরা দীর্ঘদিন ধরে কিবোর্ডগুলির এইসব ত্রুটি নিয়ে অভিযোগ করেছেন। ক্যালিফোর্নিয়ার সান হোসে আদালতে সোমবার দাখিল করা এক নথিতে এই সমঝোতার খোঁজ মিলেছে বলে প্রতিবেদনে সিএনএন উল্লেখ করেছে। তবে, এর বাস্তবায়নে আগে আদালতের অনুমতি লাগবে। ক্লাস-অ্যাকশন মামলায় মূল বাদী একজন হলেও একই পরিস্থিতিতে থাকা সকল ভুক্তভোগীর প্রতিনিধিত্ব করেন তিনি। বিজয়ী হলে মামলার রায়ও সকল ভুক্তভোগীর জন্য প্রযোজ্য হয়।
জমা দেওয়া ফাইলে অ্যাপল এই কিবোর্ড নিয়ে কোনও ত্রুটি বা অন্যায় বিষয়ে কিছু বলেনি এবং কোনও ম্যাকবুকের কিবোর্ডে ত্রুটি আছে এমন কোনো কথা স্বীকারও করেনি। ২০১৯ সালে অ্যাপল তাদের ল্যাপটপে ফের পুরোনো সিজর্স কিবোর্ডে ফিরিয়ে এনেছে। ২০১৯ সালে মার্কিন দৈনিক ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এই কিবোর্ড নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে যেটি পরে বিশেষ এই কিবোর্ডের দলিল হিসেবে দাঁড়ায়। পত্রিকাটি ওই প্রতিবেদন টাইপ করার সময় যতোগুলো ‘টাইপো’ বা মুদ্রণ বিভ্রাট তৈরি হয়েছিল সেগুলো সংশোধন না করেই প্রকাশ করে।
অপর এক প্রভাবশালী প্রযুক্তি ব্লগার ওই একই বছর এই কিবোর্ডকে অ্যাপলের ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে পণ্য বলে চিহ্নিত করেন। প্রস্তাবিত সমাধানে যে সব গ্রাহককে একাধিকবার কিবোর্ড বদলাতে হয়েছে তারা ৩৯৫ ডলার পর্যন্ত ক্ষতিপূরণের আশা করতে পারেন। আর যারা একবার কিবোর্ড বদলেছেন তারা পাবেন ১২৫ ডলার। আর যারা কি ক্যাপ বদলেছেন তারা ৫০ ডলার পেতে পারেন। বহু সমালোচিত এই কিবোর্ড অ্যাপল ল্যাপটপের পুরুত্ব কমিয়ে আনার লক্ষ্যে এনেছিল।
২০১৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত বাজারে আসা ম্যাকবুকের মডেলগুলোয় অ্যাপল যোগ করেছিল এই কিবোর্ড। এর আগের ল্যাপটপগুলোয় অ্যাপল ব্যবহার করেছে ‘সিজর্স সিস্টেম’ কিবোর্ড যেখানে দুটি ‘ইন্টারলকিং’ সুইচ থকে। কি চাপলে বাটনের নিচে থাকা সুইচ দুটি অনেকটা কাঁচির মতো চেপে আসে। অ্যাপলের বাটারফ্লাই কিবোর্ডে সুইচ দুটি পরস্পরের প্রতিবিম্বের মতো কাজ করে এবং কি চাপলে এদের অনেকটা প্রজাপতির ডানার ছড়িয়ে যাওয়ার মতো লাগে। কিন্তু বিভিন্নরকম ইস্যুর থাকার কারনে কিবোর্ডটি এখন বিরক্তির কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে।