রুশ সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে রাশিয়া থেকে তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিতে চলেছে গুগল, তা সংস্থার মুখপাত্রের কথাতেই স্পষ্ট।
সমস্ত ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত করায় দেউলিয়া ঘোষনা করতে চলেছে রাশিয়ার গুগল শাখা। দেউলিয়া ঘোষণার জন্য আবেদন করার পরিকল্পনা করেছে তারা। এ নিয়ে একটি নোটিসও দিয়েছে গুগলের রাশিয়া শাখা। ফলে অচল হয়ে পড়েছে গুগল রাশিয়ার অফিসের সকল কার্যক্রম। রয়টার্সকে গুগলের এক মুখপাত্র বলেন, ‘সরকার আমাদের সব ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত করেছে। ফলে এ দেশে কাজ চালানোর মতো পরিস্থিতি নেই। কর্মীরা বেতন পাচ্ছেন না। চরম এক সংকটের মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে সংস্থা।’ তবে অফিস বন্ধ হলেও বিনা মূল্যের সেবা, যেমন: জিমেইল, গুগল ম্যাপ, গুগল প্লে-স্টোর এবং ইউটিউব সচল থাকবে।
দীর্ঘদিন ধরেই কিছু কনটেন্ট ডিলিট করতে বলছিল রুশ সরকার। পাশাপাশি তাদের দাবি, ইউটিউবে নির্দিষ্ট কয়েকটি রুশ মিডিয়াকে ঢুকতে দেওয়া যাবে না। এই দাবি না মানায় গত ২২ মার্চ গুগলের রাশিয়া অফিসের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করে দেয় তারা। এতে বন্ধ হয়ে গেছে রুশভিত্তিক গুগল কর্মীদের বেতন।
রুশ সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে যে রাশিয়া থেকে তাদের ব্যবসা গুটিয়ে নিতে চলেছে গুগল, সংস্থার মুখপাত্রের কথাতেই তা স্পষ্ট। ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের বিরোধিতা করে গুগল-সহ বেশি কিছু সংস্থা তাদের পরিষেবা বন্ধ করে রুশ সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা করে। কিন্তু গুগলের সেই সিদ্ধান্তই এ বার ব্যুমেরাং হয়ে ফিরে এল বলে মনে করা হচ্ছে।
এর আগে বিতর্কিত ভিডিও সরাতে ব্যর্থ হওয়ায় গুগলের প্যারেন্ট কোম্পানি অ্যালফাবেট ইনকরপোরেশনকে জরিমানা করেছিলো মস্কোর একটি আদালত। ‘প্রশাসনিক লঙ্ঘনের’ অভিযোগ এনে মার্কিন এ টেক জায়ান্টকে দুই ধাপে মোট ১১ মিলিয়ন রুবল (১ লাখ ৩৫ হাজার ডলার) জরিমানা করা হয়েছিলো।
মাসখানেক ধরে রুশ সরকার গুগলের ওপর পালটা চাপ বাড়াতে শুরু করে। শেষ পর্যন্ত গুগলের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্ত করে দেয় তারা। এর আগেও রাশিয়ায় গুগল জরিমানার মুখে পড়েছিল। ২০১২ সালে প্রতিষ্ঠানটিকে ৭ দশমিক ২ বিলিয়ন রুবল (৯০ মিলিয়ন ডলার) জরিমানা করা হয়েছিল। অপরাধ ছিল রাশিয়ায় অবৈধ এমন কনটেন্ট সরাতে ব্যর্থ হওয়া। গুগলকে তখন বলা হয়েছিল—সরকারবিরোধী বেশ কিছু বিষয় মুছে ফেলতে হবে। কিন্তু, গুগল তা না করায় তাদের জরিমানার মুখে পড়তে হয়।