শুক্রবারের এক পোস্টে ফেসবুকের মালিক কোম্পানি মেটা বলছে, কানাডার প্রস্তাবিত অনলাইন নিউজ অ্যাক্ট ধরেই নিচ্ছে যে, অনৈতিকভাবে বিভিন্ন প্রকাশকের সঙ্গে বিদ্যমান সম্পর্কের সুবিধা নিচ্ছে মেটা। কানাডায় বিভিন্ন কনটেন্টের জন্য সংবাদ মাধ্যমকে অর্থ প্রদানের আইন চালু হলে দেশটিতে সংবাদ প্রচার বন্ধ করে দিতে পারে ফেসবুক। সেই সাথে রয়েছে ইনস্টাগ্রাম ও। এপ্রিলে ফেসবুক ও গুগলের মতো বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মকে প্রকাশকের কাছ থেকে সংগৃহীত বিভিন্ন সংবাদের আয়ের অংশ দিতে বাধ্য করা আইনটি চালু হয়।
প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট ভার্জের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই আইনের লক্ষ্য বিভিন্ন সংবাদ প্রকাশকের কাজের জন্য ন্যায্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করা। এ বছরের শুরুতে ফেসবুকের তথ্য ফাঁসকারী একটি দল দাবি করে, ফেসবুকের ওই পদক্ষেপ আসলে দর কষাকষির কৌশল ছিল। কোম্পানিটি এবারও তাদের অবস্থানে অটল। এই প্রস্তাবনাকে এটি আখ্যা দিয়েছে অবৈজ্ঞানিক হিসেবে।
ভার্জের প্রতিবেদন অনুযায়ী, কানাডায় এই আইন পরিবর্তন না করলে সংবাদ প্রচার বন্ধ করতে প্রস্তত আছে ফেসবুক।
এক বছর আগে একই ধরনের একটি আইন চালু করেছে অস্ট্রেলিয়া, যা নিউজ মিডিয়া বার্গেনিং কোড নামে পরিচিত। এতেও ফেসবুক ও গুগলের মতো কোম্পানিকে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে প্রচারিত সংবাদের বিপরীতে অর্থ প্রদান করতে হয়। অস্ট্রেলিয়ায় ওই আইন পাস হওয়ার পরপরই ফেসবুক ও গুগলের কাছ থেকে ব্যাপক বাধার মুখে পড়েছিল এটি। এর প্রতিক্রিয়ায় দেশটিতে সংবাদ শেয়ার করা বন্ধ করেছিল ফেসবুক। আর নিজস্ব সার্চ ইঞ্জিন দেশটি থেকে সরিয়ে ফেলার হুমকি দিয়েছিল গুগল।
পরবর্তীতে, বিভিন্ন সংবাদ সংস্থার সঙ্গে চুক্তির পর গুগল পুনরায় আগের পরিকল্পনায় ফিরলেও ফেসবুক এই নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত পাল্টেছে আইনটি সংশোধনের পর। ফেসবুকের এই ক্ষণস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা কেবল সংবাদ সংস্থাগুলোতে প্রভাব ফেলেছে, এমন নয়। সে সময় স্থানীয় অগ্নি নির্বাপণ ও স্বাস্থ্য বিভাগের মতো সরকারী সংস্থার বিভিন্ন পোস্টও সরিয়ে দিয়েছিল কোম্পানিটি। গত সপ্তাহে এই আইন নিয়ে কানাডার হাউস অফ কমন্স হেরিটেজ কমিটি একটি বৈঠক ডাকলেও মেটা বলছে, তারা এতে আমন্ত্রণ পায়নি।
কানাডার ঐতিহ্য বিষয়ক মন্ত্রী পাবলো রড্রিগেজ ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলেছেন, অস্ট্রেলিয়ায় ব্যবহৃত কৌশল থেকে টান দিচ্ছে ফেসবুক। ফেসবুকের মতো টেক জায়ান্টদের বল হয়েছে বিভিন্ন সংবাদ সংস্থার সঙ্গে ন্যায্য চুক্তি করতে, যখন তাদের কাজ থেকে লাভবান হচ্ছে প্ল্যাটফর্মগুলো। মেটা বলছে, ব্যবহারকারীর ফেসবুক ফিডের তিন শতাংশেরও কম জায়গা নেয় সংবাদ প্রতিবেদনযুক্ত বিভিন্ন লিংক। মেটার মতে, এইসব কনটেন্ট প্ল্যাটফর্মটির ব্যবহারকারীর আকর্ষণের জায়গা নয় ও এটি ব্যাপক আয়েরও উৎস নয়।
এই খসড়া আইন পাস হলে, সংবাদের লিংক বা কনটেন্টের জন্য এটি বিশ্বব্যাপী একটি অভূতপূর্ব আর্থিক দায়বদ্ধতা তৈরি করবে বলে জানিয়েছে মেটা। মেটা আরও দাবি করছে, ফেসবুকে কনটেন্ট প্রকাশ করে ঠিক কিন্তু লাভবান হয় বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা। মে মাসে মেটা বলেছে যে কানাডায় নিবন্ধিত বিভিন সংবাদ প্রকাশকের কনটেন্টে গত ১২ মাসে ক্লিক পড়েছে একশ ৯০ কোটিরও বেশিবার, যেটি থেকে প্রায় ২৩ কোটি কানাডিয়ান ডলার সমমূল্যের আয় করেছে তারা।