Reading Time: 2 minutes

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের বাইডেন প্রশাসন জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে টেসলা নির্মাতা ইলন মাস্কের ব্যবসায়িক উদ্যোগগুলো নিয়ে তদন্তের কথা ভেবে দেখছে। স্পেসএক্সের স্টারলিংক স্যাটেলাইট নেটওয়ার্ক এবং আলোচিত টুইটার অধিগ্রহণ চুক্তিও আছে তার মধ্যে। মাস্ক টুইটার কিনতে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে জোট বাঁধায় এ চুক্তি নিয়েও শঙ্কিত তারা। পরিচয় গোপন রাখার শর্তে ওয়াশিংটনের এক সূত্র ব্লুমবার্গকে জানিয়েছে মাস্ক আদৌ জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি কি না, সে আলোচনা এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে আছে।

মাস্কের ব্যবসায়িক উদ্যোগগুলো নিয়ে তদন্তে নামার কোনো সুযোগ আদৌ আছে কি না, সে বিষয়টি বিবেচনা করে দেখছেন মার্কিন সরকার ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কর্মকর্তারা। ব্লুমবার্গ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, মাস্ক সম্প্রতি ইউক্রেনে স্টারলিংক সেবা বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেওয়ায় এবং টুইটে রাশিয়াপন্থি বক্তব্য দেওয়ায় নড়েচড়ে বসেছেন ওয়াশিংটনের কর্মকর্তারা। ওই সূত্রের ভাষ্যমতে, যুক্তরাষ্ট্রের কমিটি অফ ফরেইন ইনভেস্টমেন্ট ইন দ্য ইউনাইটেড স্টেটস বা সিএফআইইউএস এর মাধ্যমে মাস্ক ও তার ব্যবসায়িক উদ্যোগগুলোকে তদন্তের অধীনে আনা যেতে পারে।

টুইটার কিনতে মাস্ক বিনিয়োগকারীদের যে জোট গঠন করেছেন, তাতে সৌদি রাজপুত্র আলওয়ালিদ বিন তালাল, চীনা কোম্পানি বাইন্যান্স হোল্ডিংস লিমিটেড এবং কাতারের জাতীয় বিনিয়োগ তহবিলের উপস্থিতি সিএফআইইউএসের তদন্তের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে জানিয়েছে ব্লুমবার্গ। বিদেশি কেউ যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান কেনার চেষ্টা করলে সে বিষয়ে তদন্ত চালানোর অধিকার রয়েছে সিএফআইইউএসের। সংস্থাটি তদন্তে নামলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং গোয়েন্দা কর্মকর্তারাও তাতে সম্পৃক্ত থাকবেন।

এর মাধ্যমে মাস্কের ব্যবসা নিয়ে তদন্ত চালানোর আইনি সুযোগ পাবে যুক্তরাষ্ট্রের সরকার। সিএফআইইউএসের প্যানেল তদন্ত প্রক্রিয়ার পুরোটাই গোপন রাখে। তদন্ত চলমান থাকলেও তা জনসম্মুখে স্বীকার করে না সংস্থাটি। আর বিনিয়োগ চুক্তি সম্পন্ন হয়ে গেলেও সে বিষয়ে তদন্তে নামার অধিকার আছে সংস্থাটির। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে স্পেসএক্সের পাঠানো নথি বিশ্লেষণ করে সিএনএন জানায়, ইউক্রেনে সেবা চালু রাখার আর্থিক সক্ষমতা নেই বলে দাবি করেছে ইলন মাস্কের কোম্পানি। যুদ্ধের শুরুতেই ইউক্রেনে স্টারলিংক সেবা চালু করে বিশ্ববাসীর প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন ইলন মাস্ক।

বিজ্ঞাপন (কেন?)

কিন্তু সিএনএনের প্রতিবেদন এখন বলছে, ইউক্রেনে ব্যবহৃত প্রায় ২০ হাজার স্টারলিংক টার্মিনালের মধ্যে কেবল ১৫ শতাংশ অনুদান হিসেবে দিয়েছে স্পেসএক্স; ৮৫ শতাংশ এসেছে তৃতীয় পক্ষের কাছ থেকে। অবশ্য টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়লে যুক্তরাষ্ট্র সরকার স্টারলিংক ব্যবহারের পরিকল্পনাই করে রেখেছে বলে ব্লমবার্গকে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। এ প্রসঙ্গে মাস্কের মন্তব্য জানার চেষ্টা করেছিল ব্লুমবার্গ। সংবাদমাধ্যমটি ইলন মাস্ককে একাধিক ইমেইল পাঠালেও তার উত্তর দেননি তিনি। ৩ অক্টোবর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ বন্ধের চার শর্ত ‘শান্তি পরিকল্পনা’ হিসেবে টুইট করে কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েন মাস্ক।

যুদ্ধের শুরুতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে মল্লযুদ্ধের আহ্বান জানালেও, ৩ অক্টোবরের টুইটে কার্যত রাশিয়ার পক্ষেই কথা বলেন মাস্ক। তার টুইটে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের সরকারি কর্মকর্তারা খেপলেও রাশিয়ার প্রতিনিধিরা প্রশংসা করেছেন। এর পরপরই খবর ছড়িয়ে পড়ে, প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে গোপন যোগাযোগ হয়েছে মাস্কের। অন্যদিকে, সংবাদমাধ্যম সিএনএন এক প্রতিবেদনে জানায়, ইউক্রেনে স্টারলিংকের খরচ চালাতে আর রাজি নয় স্পেসএক্স। ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, মাস্ক বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগের কর্মকর্তাদের মন্তব্য জানার চেষ্টা করেছিল তারা।

কিন্তু, কোনো লেনদেন নিয়ে তদন্ত চলছে না কি চলছে না, সে বিষয়ে সিএফআইইউএস কোনো মন্তব্য করে না বলে তাদের জানিয়েছেন ট্রেজারি বিভাগের একজন মুখপাত্র।

সাবস্ক্রাইব করুন The Penguins Club খবরপত্রিকায়

প্রতি শুক্রবার বিশেষ খবর এবং আলোচনায় অংশগ্রহন করতে আপনার ইমেইল দিন।


Tagged:
About the Author

বিগত প্রযুক্তি বিষয়ক লেখালেখি করছি - বাংলা লেখিকা

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.