রোববার টুইটার চিফ টুইট ইলন মাস্ক টুইট করেন, প্লাটফর্মে ঘন ঘনই বিজ্ঞাপন আসে আর এগুলোর দৈর্ঘ্যও বেশি। আসন্ন সপ্তাহগুলোতে উভয় সমাধানের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। সামাজিক প্ল্যাটফর্ম টুইটারে তুলনামূলক ব্যয়বহুল গ্রাহক সেবা আনার ঘোষণা দিয়েছেন ইলন মাস্ক। সেই সাথে তার সিদ্ধান্তে রয়েছে টুইটার বিজ্ঞাপনমুক্ত করার। এর মানে, গ্রাহকরা এখন থেকে প্ল্যাটফর্মে বিজ্ঞাপনবিহীন অভিজ্ঞতাও পাবেন। টুইটে তিনি আরও বলেন, সেবাটির দাম তুলনামূলক বেশি হওয়ায় এতে কোনো বিজ্ঞাপন থাকবে না।
গত বছরের ডিসেম্বরে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, প্ল্যাটফর্মটির বিজ্ঞাপনবিহীন সংস্করণ নিয়ে কাজ চলছে। প্ল্যাটফর্মে এরইমধ্যে থাকা আর্থিক ফির গ্রাহক সেবার নতুন সংযোজন হিসেবে যোগ হতে যাচ্ছে এটি। আর ব্যবহারকারী এতে বিনামূল্যের সংস্করণের চেয়ে ভালো অভিজ্ঞতা পাবেন, যেখানে একটি এডিট বাটন ও ভেরিফিকেশন চেকমার্ক থাকবে বলে উঠে এসেছে ব্রিটিশ সংবাদপত্র দ্যা ইন্ডিপেন্ডেন্টের প্রতিবেদনে। তিনি বলেন, সাধারণ ‘ব্লু’ সেবায় বিজ্ঞাপন অর্ধেকে নেমে আসবে।
আগামী বছর থেকে তুলনামূলক উচ্চমানের বিজ্ঞাপনবিহীন সেবা চালু করা হবে বলে সে সময় টুইট করেন ইলন মাস্ক। এই মাসের শুরুতে প্ল্যাটফর্মের আয় বাড়ানো ও এর খরচ কমানোর উদ্দেশ্যে নিজেদের পুরোনো রাজনৈতিক বিজ্ঞাপনে নিষেধাজ্ঞা বিষয়ক নীতিমালা শিথিল করে টুইটার। সামনের দিকে এগিয়ে যেতে আমরা নিজস্ব বিজ্ঞাপনী নীতিমালার সঙ্গে টেলিভিশন ও অন্যান্য গণমাধ্যমের নীতিমালায় সামঞ্জস্য আনা হবে। নিজেদের অফিসিয়াল অ্যাকাউন্টে ঘোষণা দেয় ‘টুইটার সেফটি’।
নতুন সেবাটি চালু হলে প্ল্যাটফর্মে কী ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে, তা এখনও পরিষ্কার নয়। এই প্রসঙ্গে ইন্ডিপেন্ডেন্ট টুইটারের মন্তব্য জানতে চাইলে তাৎক্ষণিক কোনো জবাব পাওয়া যায়নি। যদিও টুইটার সাবস্ক্রিপশনের মূল্য বাড়ানোতে বিজ্ঞাপনমুক্ত টুইটার আনার সিদ্ধান্তটি পুরোটাই বোকামি এবং অনর্থক। লাভের আশায় তিনি বিভিন্ন সিদ্ধান্তে টুইটারের গতিবিধি পরিবর্তন করেও তেমন কোন ফল যেহেতু পাননি, তেমনি এই সিদ্ধান্তেও লাভের চেয়ে বেশি লোকসান বৈ কিছুই হবে না।
বেশ কিছুদিন আগে বিভিন্ন প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, টুইটারের সামগ্রিক আয়ের ৯০ শতাংশই আসে প্ল্যাটফর্মে পোস্ট করা ডিজিটাল বিজ্ঞাপন থেকে। বেশ কিছু কোম্পানি জানিয়েছে, নিজেদের ‘ব্র্যান্ডের সুরক্ষা’ নিয়ে শঙ্কা তৈরি হওয়ায় তারা টুইটারে বিজ্ঞাপন দেখানো বন্ধ রেখেছে। কর্মী অপসারণের পাশাপাশি কোম্পানির সামগ্রিক কর্মশক্তি অর্ধেকে নামিয়ে আনার ফলে প্ল্যাটফর্মে ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়া কনটেন্ট মডারেশন ব্যবস্থার কারনে বিভিন্ন সংস্থা ও অধিকারকর্মী দলের চাপের মুখে ব্র্যান্ডগুলো টুইটারে বিজ্ঞাপন দেখানো বন্ধ করে দেয়।
এর পরে কোম্পানির আয়ে বিশাল ধস নামার বিষয়টি জানিয়েছিলেন মাস্ক। টুইটারের অডিও বার্তাভিত্তিক ফিচার ‘স্পেসেস’ এর আলোচনায় মাস্ক টুইটারকে এমন এক প্লেনের সঙ্গে তুলনা করেন, যার ইঞ্জিন পুড়ে গেছে, কোনো নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নেই ও ভূপৃষ্ঠে দ্রুতগতিতে নেমে আসছে।