Reading Time: 2 minutes

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের শুরু থেকেই ইউক্রেনে স্টারলিংক সেবা চালু করে বিশ্ববাসীর প্রশংসা অর্জন করে যাচ্ছিলেন ইলন মাস্ক। তবে সম্প্রতি জানা গিয়েছে ইউক্রেনে স্টারলিংক সেবার খরচ আর বহন করতে রাজি নয় স্পেসএক্স। স্পেসএক্স বলছে, ইউক্রেনে আরও স্যাটেলাইট টার্মিনাল পাঠানো বা অনির্দিষ্টকালের জন্য বিদ্যমান টার্মিনালগুলোর খরচ বহন করার অবস্থায় তারা এখন নেই। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে স্টারলিংক সেবা সীমিত করে দেওয়া অথবা বন্ধ করে দেওয়ার কথা পেন্টাগনকে জানিয়েছে ইলন মাস্কের কোম্পানি।

সিএনএন জানিয়েছে, পেন্টাগনের কাছে আর্থিক সাহায্য চেয়ে স্পেসএক্সের পাঠানো নথিপত্র দেখার সুযোগ হয়েছে তাদের। ইউক্রেনে স্টারলিংক সেবা চালু রাখতে এখন পর্যন্ত প্রায় ১০ কোটি ডলার খরচ হয়েছে বলে সেখানে দাবি করা হয়েছে। চলতি বছরের বাকি সময় ইউক্রেনে স্টারলিংক সেবা চালু রাখার খরচ হিসেবে প্রায় সাড়ে ১২ কোটি ডলার পেন্টাগনকে দিতে বলেছে স্পেসএক্স। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহেই যুদ্ধক্ষেত্রে স্টারলিংকে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার খবর জানিয়েছিল ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী।

সিএনএনের প্রতিবেদন বলছে, ইউক্রেনের যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহৃত প্রায় ২০ হাজার স্টারলিংক স্যাটেলাইট হার্ডওয়্যারের মধ্যে কেবল ১৫ শতাংশ অনুদান হিসেবে দিয়েছিল মাস্কের কোম্পানি, সার্বিক অর্থায়ন এসেছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য এবং পোল্যান্ডসহ বিভিন্ন পক্ষ থেকে। জুলাই মাসে আরও প্রায় আট হাজার স্টারলিংক টার্মিনাল চেয়ে সরাসরি ইলন মাস্কের কাছে চিঠি লিখেছিলেন ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর জেনারেল ভ্যালেরি জোলুসনি।

উত্তরে জোলুসনিকে বাড়তি টার্মিনালের অনুরোধ সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে পাঠাতে বলেছে স্পেসএক্স। তবে সংযোগ বন্ধ করে দেয়ার পেছনে স্পেসএক্স বা ইলন মাস্ক সরাসরি দায়ী কি না, সে বিষয়ে ইউক্রেনের কর্মকর্তারাও সন্দিহান বলে উঠে এসেছে সিএনএনের প্রতিবেদনে। ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসনের শুরুতেই যুদ্ধ থামাতে টুইট করে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে মল্লযুদ্ধের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিলেন টেসলা নির্মাতা ইলন মাস্ক।

ইউক্রেনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে স্টারলিংক সেবা চালু করে প্রশংসিত হয়েছিলেন। কিন্তু অক্টোবর মাসের শুরুতে হঠাৎ করেই পাল্টে গেছে সে দৃশ্যপট। ৩ অক্টোবর টুইটারে এক জরিপ চালু করে ব্যাপক বিতর্ক ও সমালোচনার মুখে পড়েছেন মাস্ক। পুতিনের সঙ্গে মাস্কের গোপন যোগাযোগের অভিযোগও এখন আসছে। ইউরেশিয়া গ্লোবাল এর প্রতিষ্ঠাতা ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক আয়ান ব্রেমার সম্প্রতি বলেছেন, রাশিয়ার পক্ষ নিয়ে টুইট করার আগে প্রেসিডেন্ট ভ্লাতিমির পুতিনের সঙ্গে কথা বলেছিলেন মাস্ক।

বিজ্ঞাপন (কেন?)

সে আলাপাচারিতায় নাকি যুদ্ধ থামানোর জন্য রাশিয়ার নূন্যতম চাহিদা নিয়ে পুতিনের সঙ্গে আলোচনা হয়েছিল, আর মাস্ক নিজেই নাকি সে কথা ব্রেমারকে বলেছেন। মঙ্গলবারে টুইট করে ওই দাবি নাকচ করেছেন মাস্ক। তিনি বলেছেন, পুতিনের সঙ্গে একবারই যোগাযোগ হয়েছিল তার, সেটাও ১৮ মাস আগে। মাস্ক টুইট করার পর ব্রেমার তার নিজের বক্তব্য থেকে সরে আসেননি, উল্টো আরও কঠোর অবস্থান নিয়েছেন বলে জানিয়েছে সিএনবিসি।

ইউক্রেন-রাশিয়া প্রশ্নে মাস্কের এই হঠাৎ সুর পরিবর্তনকে ইউক্রেনীয়দের সাহস ও ত্যাগের সঙ্গে বিশ্বাঘাতকতা হিসেবে বর্ণনা করেছেন রুশ গ্র্যান্ডমাস্টার গ্যারি কাসপারভ। ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ থামিয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠান লক্ষ্যে চারটি পরামর্শ দিয়ে জরিপে ফলোয়ারদের সমর্থন চেয়েছিলেন মাস্ক। ওই চার পরামর্শের মধ্যে ক্রাইমিয়ার নিয়ন্ত্রণ রাশিয়ার হাতে তুলে দেওয়ার এবং গতমাসে দখলকৃত অঞ্চলগুলোতে জাতিসংঘের অধীনে গণভোট আয়োজনের পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি।

মাস্ক তার বক্তব্যকে শান্তি প্রতিষ্ঠার শর্ত হিসেবে উপস্থাপন করলেও তার সবগুলোই কার্যত রাশিয়ার পক্ষে যায়। রাতারাতি ইউক্রেনের নাগরিক ও কর্মকর্তাদের চোখে নায়ক থেকে ভিলেনে পরিণত হন মাস্ক।

সাবস্ক্রাইব করুন The Penguins Club খবরপত্রিকায়

প্রতি শুক্রবার বিশেষ খবর এবং আলোচনায় অংশগ্রহন করতে আপনার ইমেইল দিন।


Tagged:
About the Author

বিগত প্রযুক্তি বিষয়ক লেখালেখি করছি - বাংলা লেখিকা

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.