Reading Time: 2 minutes

চীনের ক্রিপ্টো মাইনাররা নিষেধাজ্ঞা জারির পরেও কোন কিছু তোয়াক্কা না করে বিটকয়েন মাইনিং চালিয়ে যাচ্ছে। ২০২১ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে চীনের মাইনিং শিল্পে বড় ধাক্কা লাগে। চীন কয়েক ধাপে নীতিমালা পরিবর্তন করে ক্রিপ্টো মাইনিং নিষিদ্ধ করে দেয়। কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটির গবেষণা অনুযায়ী চীনের ক্রিপ্টো মাইনিং সক্ষমতা কার্যত শূন্যের ঘরে নেমে এসেছিল বলে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনবিসি জানিয়েছে। গোপনে মাইনিং শুরু করে চীনের বিটকয়েন মাইনিং খাত গত বছরের সেই ধাক্কা কাটিয়ে উঠেছে। গত বছরের প্রথমার্ধেও চীন বিশ্বের বৃহত্তম ক্রিপ্টো মাইনিং হাব ছিল।

বিটকয়েন ক্রিপ্টো মুদ্রা তার খনি ব্যবসায় বা কয়েন মাইনিং-এ মধ্য এশিয়ার এই দেশটি এখন দ্বিতীয় স্থানে যে দেশ সেটি হচ্ছে কাজাখস্তান। আমেরিকার পর বিটকয়েন মাইনিং এ দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে কাজাখস্তান। গত বছর চীন ক্রিপ্টোকারেন্সির খনিগুলো নিষিদ্ধ করে দেয়, তখন থেকেই প্রতিবেশি কাজাখস্তানে এই ব্যবসা দ্রুত প্রসার লাভ করতে শুরু করে। কাজখস্তান বর্তমানে বিটকয়েন লেনদেনের দ্বিতীয় তালিকায়। মলডির শুবাইয়েভা নামের এই প্রথম একজন নারী নতুন ব্যবসায়ে যোগ দিয়েছেন। তার জমির উপর তার প্রকৌশলী ও নির্মান শ্রমিকেরা নতুন বিটকয়েন খনি গড়ে তুলছেন।

কাজাখস্তানে ক্রিপ্টোকারেন্সির যে নতুন ব্যবসা দ্রুত জমে উঠেছে, তাতে নেমে পড়া নতুন ব্যবসায়ীদের মধ্যে মলডির শুবাইয়েভা একজন। আলমাটি শহরে তার নতুন খনি তৈরির যাবতীয় বিষয়গুলো তিনি দেখাশোনা করছেন। বৈশ্বিক বিটকয়েন নেটওয়ার্কের প্রসেসিং সক্ষমতার ৬৫ থেকে ৭৫ শতাংশ ছিল চীনের একার। ক্রিপ্টো মাইনিংয়ের বিদ্যুৎ খরচ বরাবরই বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। চীন মাইনিং প্রক্রিয়া নিষিদ্ধ করার পর মাইনারদের অনেকেই দেশ ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্র ও কাজাখস্তানে পাড়ি জমিয়েছেন। জুলাই মাসে সিএনবিসি চীনের মাইনিং সক্ষমতা শূন্যের ঘরে নেমে এলেও কিছুদিন পড়েই দেশটিতে গোপন মাইনিং শুরু হওয়ার খবর জানিয়েছিল।

এর আগেও চীন সরকার ক্রিপ্টো মুদ্রা নিয়ে একাধিকবার সতর্ক করে দিয়েছিল। তবে চীনের গত বছরের পদক্ষেপগুলোই সম্ভবত সবচেয়ে কঠোর ছিল। এছাড়াও গত বছরেও বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটি টানা কয়েক মাস ধরে বিদ্যুৎ শঙ্কটে ছিল। ২০৬০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণের হার শূন্যে নামিয়ে আনার লক্ষ্যে নবায়োনযোগ্য শক্তি খাতে ব্যাপক হারে চীন বিনিয়োগ করছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য চীন এখনও কয়লার ওপর নির্ভরশীল। চীন সরকার ক্রিপ্টো মাইনিংকে এই লক্ষ্য অর্জনের প্রতিবন্ধকতা হিসেবে দেখছে। সিএনবিসি বলছে যে ক্রিপ্টো মাইনিং নিয়ে বেইজিংয়ের মাথা ব্যথার একটি বড় কারণ হচ্ছে এর অতিরিক্ত বিদ্যুৎ খরচ।

বিজ্ঞাপন (কেন?)

সুইডেন বা নরওয়ের আকারের একটি দেশের বার্ষিক বিদ্যুৎ চাহিদার সমান বিদ্যুৎ খরচ হয় চীনের বিটকয়েন মাইনিং খাতে। গবেষকগণ বড় আকারের বিটকয়েন মাইনিং পুল এর ভৌগলিক অবস্থানের তথ্যের ভিত্তিতে গবেষণা প্রতিবেদনটি তৈরি করেছেন। এর মাধ্যমে তারা কোন দেশে সবচেয়ে বেশি মাইনিং চলছে সেটি নির্ধারণ করেছেন। সেইসাথে গবেষণার প্রক্রিয়ায় সম্ভাব্য ত্রুটির বিষয়েও গবেষকগণ সতর্ক করে দিয়েছেন। এক্ষেত্রে মাইনারদের ভিপিএন বা ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্কের ব্যবহার ভুল তথ্য দিতে পারে বলে গবেষকগণ জানিয়েছেন।

ভিপিএনের মাধ্যমে ব্যবহারকারী ইন্টারনেট ট্রাফিক ভিন্ন কোনো দেশের সার্ভারের মাধ্যমে আদান-প্রদানের সুযোগ পান। চীনে ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ থাকায় দেশটির নাগরিকদের মধ্যে ভিপিএন অ্যাপের বহুল ব্যবহারের চল রয়েছে। এক্ষেত্রে ভিপিএনের কারণে চীনে বিটকয়েন মাইনিংয়ের বাস্তবিক তথ্যে কিছুটা কম-বেশি হওয়ার সুযোগ থাকলেও সার্বিক পরিস্থিতির ভুল উপস্থাপন হচ্ছে না মনে করেন গবেষকরা। সরকারের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও বিশ্ববাজারে বিটকয়েন মাইনিংয়ে শীর্ষদের তালিকায় চীন আবারও জায়গা করে নিয়েছে।

কেমব্রিজ সেন্টার ফর অল্টারনেটিভ ফাইন্যান্স এর নতুন এক গবেষণা চীনের পরিস্থিতির ওপর নতুন করে আলোকপাত করেছে। গবেষণায় উঠে এসেছে যে খুব দ্রুতই চীনের বিটকয়েন মাইনিং জগত নিষেধাজ্ঞার বিরূপ প্রভাব কাটিয়ে উঠেছে। ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে চীনে বৈশ্বিক বিটকয়েন মাইনিং খাতের ২২ শতাংশ কার্যকর ছিল। এর আগেও ক্রিপ্টো মুদ্রা নিয়ে একাধিকবার সতর্ক করে দিয়েছিল চীন সরকার। তবে, চীনের গত বছরের পদক্ষেপগুলোই সম্ভবত সবচেয়ে কঠোর ছিল। অন্যদিকে, গত বছরেও টানা কয়েক মাস ধরে বিদ্যুৎ শঙ্কটে ছিল বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটি।

সাবস্ক্রাইব করুন The Penguins Club খবরপত্রিকায়

প্রতি শুক্রবার বিশেষ খবর এবং আলোচনায় অংশগ্রহন করতে আপনার ইমেইল দিন।


Tagged:
About the Author

বিগত প্রযুক্তি বিষয়ক লেখালেখি করছি - বাংলা লেখিকা

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.