Reading Time: 2 minutes

গত বছরের প্রায় মাঝামাঝি সময়ে বিটকয়েনের দাম বহু গুণে বেড়ে গিয়েছিল। প্রতিটি বিটকয়েনের দাম তখন ৬৮ হাজার ডলার পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিল। কিন্ত এ বছরের গেল মাসে বিটকয়েনের দাম মাত্র একদিনের ব্যবধানে কমে গিয়ে ৩০ হাজার ডলারে পৌঁছায়। যার ফলে বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন যে ক্রিপ্টো মুদ্রাটির দামে আবারো এমন উর্ধ্বমুখী আচরণের জন্য বিনিয়োগকারীদের ২০২৪ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে। গেল মাসে রয়টার্সের মাধ্যমে জানা যায় যে হঠাৎ মূল্যপতনে ৩৪ হাজারে ডলারে নামার আগে এটি ৩৫ হাজার ৪৯ ডলারে ছিল।

বিশ্বের বৃহত্তম এবং সবচেয়ে প্রচলিত এই ক্রিপ্টোকারেন্সির মূল্য এখন দুই মাস আগের তুলনায় প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। শেয়ার বাজারে পতনের ঢেউ এসে বাণিজ্যের বাজারে অন্যান্য ঝুঁকিও এসেছে। এরই মধ্যে এসএন্ডপি ৫০০ এবং গত বছরের মার্চ মাসে ন্যাসড্যাক মহামারী শুরু হওয়ার পর সবচেয়ে বড় পতনের মুখোমুখি হয়েছে। ওএএনডিএ-এর আমেরিকা চ্যাপ্টারের সিনিয়র বাজার বিশ্লেষক এডওয়ার্ড মোয়া এক গবেষণা নোটে বলেন যে শেয়ারবাজারে ভয়াবহ পতনের পর ক্রিপ্টো ব্যবসায়ীরা ঝুঁকি নিতে না চাওয়ার ফলে বিটকয়েনের মূল্যও হ্রাস পেয়েছ।

তিনি আরো বলেন যে বিটকয়েন বিপদসীমার মধ্যে রয়েছে এবং যদি এই মূল্য ৩৭ হাজার ডলার পর্যন্ত পৌছায় তবে এটি ৩০ হাজার ডলারে যেতে বেশি সময় নেবে না। ইথেরিয়াম ব্লকচেইন নেটওয়ার্কের মুদ্রা ইথারের দামও শনিবার ৬.৭ শতাংশ কমে দুই হাজার তিনশ’ ৯৬ ডলারে গিয়ে পৌঁছেছে। রয়টার্সের প্রতিবেদনে একদিকে মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ থেকে সুদের হার বৃদ্ধির সম্ভাবনা অপরদিকে মুদ্রাস্ফীতির আশঙ্কায় বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকি নেওয়ার প্রবণতা হ্রাস পাওয়ায় মুদ্রাটির বাজার মূল্যের বড় আকারে ধ্বস খেয়েছে বলে উঠে এসেছে।

এই ধ্বসের কারনে বৃহত্তম ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জগুলোর একটি হুওবি এর প্রধান ডু জুন বলেন যে ২০২৪ সালের শেষের দিকে অথবা ২০২৫ সালের শুরুর দিকে বিটকয়েন বাজার আবারো বুল মার্কেট দেখতে পারে। ২০১৭ এবং ২০২১ সালে বিটকয়েনের দাম বাড়লেও দু’বারই অল্প সময় বাদেই ক্রিপ্টো মুদ্রাটির দাম কমতে শুরু করে। সিএনবিসি বলে যে বর্তমানে বিটকয়েনের দাম এর ইতিহাসে সর্বোচ্চ দামের ৪০ শতাংশে নেমে স্থিতিশীল আছে। ডু জুন বলেন যে তারা এই চক্র যদি চলতে থাকে তবে বেয়ার মার্কেট এর শুরুর দিকে আছেন।

বিজ্ঞাপন (কেন?)

এই চক্র অনুসরণ করলে তারা ২০২৪ সালের শেষের দিকে বা ২০২৫ সালের শুরুর দিকে বিটকয়েনের বুল মার্কেটের প্রত্যাশা করতে পারেন। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সিএনিবিসি ক্রিপ্টো মুদ্রার দাম কমতে থাকায় এই খাতের বিনিয়োগকারীদের অনেকেই শঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন বলে জানিয়েছে। ডু জুন জানান যে ক্রিপ্টো মুদ্রার বাজারে বিটকয়েনের দামের এই ওঠা-নামা হাফিং নামক এক ধরনের প্রক্রিয়ায় প্রভাবিত এবং এটি নির্দিষ্ট সময় পরপর ঘটে বলে জানিয়েছেন। আর বিটকয়েনের মূল কোডেই হাফিং বিষয়টি লেখা থাকে। প্রায় চার বছর পর পর এই হাফিং এর ঘটনা ঘটে। 

বিটকয়েন নেটওয়ার্কে ২০২০ সালের মে মাসে শেষবার হাফিং হয়েছিল। হাফিং প্রক্রিয়াটি ক্রিপ্টোকারেন্সি নেটওয়ার্কে লেনদেন যাচাই করার জন্য পুরস্কার হিসেবে মাইনাররা যে বিটকয়েন পান তা অর্ধেক করে ফেলে। শেয়ার বাজার সংশ্লিষ্টদের কাছে বুল মার্কেট কথাটির মানে হলো বাজারের এমন অবস্থা যেখানে শেয়ারের দাম বাড়তে থাকে এবং বিনিয়োগকারীরা আরো বেশি শেয়ার কিনতে উদ্বুদ্ধ হন। আর এর বিপরীত পরিস্থিতিকে বেয়ার মার্কেট বলা হয়। অন্যদিকে হাফিং প্রক্রিয়াটির সঙ্গে বিটকয়েন নেটওয়ার্কের মাইনারদের সংশ্লিষ্টতাই বেশি।

বিশেষায়িত ও শক্তিশালী কম্পিউটারে জটিল গাণিতিক সমস্যার সমাধান করে বিটকয়েনের নেটওয়ার্কে সংগঠিত লেনদেন যাচাই করেন মাইনাররা এবং পুরস্কার হিসেবে বিটকয়েন পান।

সাবস্ক্রাইব করুন The Penguins Club খবরপত্রিকায়

প্রতি শুক্রবার বিশেষ খবর এবং আলোচনায় অংশগ্রহন করতে আপনার ইমেইল দিন।


Tagged:
About the Author

বিগত প্রযুক্তি বিষয়ক লেখালেখি করছি - বাংলা লেখিকা

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.