Reading Time: 2 minutes

মঙ্গলবার মার্কিন মেডিকেল জার্নাল “জামা পেডিয়াট্রিক্স” এর গবেষণা পত্রে উঠে এসেছে, সামাজিক মাধ্যম ঘন ঘন ও অতিমাত্রায় ব্যবহারের পাশাপাশি সামাজিক মাধ্যমের পুরস্কার বা সাজার ফলে কিশোর মস্তিষ্ক আগের চেয়ে বেশি স্পর্শকাতর হয়ে উঠতে পারে। কিশোর-কিশোরীদের সামাজিক মাধ্যমে ঘন ঘন প্রবেশের প্রবণতা তাদের মস্তিষ্কের উন্নয়নে প্রভাব ফেলতে পারে। এমন সতর্কবার্তাই উঠে এসেছে নতুন এক গবেষণায়। এই গবেষণার জন্য গত তিন বছরে উত্তর ক্যারোলাইনার গ্রামীণ এলাকার বিভিন্ন পাবলিক স্কুল থেকে একশ ৭০ জন শিক্ষার্থীকে বাছাই করা হয়।

গবেষণার শুরুতে, গবেষকগণ  পর্যবেক্ষণ করেন অংশগ্রহনকারীরা কতক্ষণ পরপর ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম ও স্ন্যাপচ্যাটের মতো বিভিন্ন জনপ্রিয় সামাজিক মাধ্যমে প্রবেশ করছেন। দেখা গেছে, সামাজিক মাধ্যমে কারও প্রবেশের সংখ্যা দিনে একবারেরও কম, আবার কেউ কেউ দৈনিক ২০বারেরও বেশিবার প্রবেশ করেছেন। এইসব অনুসন্ধান থেকে ইঙ্গিত মেলে, যেসব শিশু সামাজিক মাধ্যম দেখতে দেখতে বড় হয়, তারা প্রায়শই সহপাঠীদের প্রতিক্রিয়া জানানোর বেলায় অতিমাত্রায় সংবেদনশীল হয়ে উঠছে।

বিষয়টি এক বিবৃতিতে বলেন ইউনিভার্সিটি অফ নর্থ ক্যারোলাইনা-চ্যাপেল হিল গবেষক ও এই গবেষণার সহ-লেখক ইভা টেলজার। গবেষণার সহ-লেখক মারিয়া মাজা বলেন সামাজিক প্রতিক্রিয়ার বেলায় এই বেড়ে যাওয়া সংবেদনশীলতা ভবিষ্যতে সামাজিক মাধ্যমে আসক্ত হয়ে থাকায় উৎসাহিত করতে পারে। এটি সম্ভাব্য অভিযোজিত আচরণেরও প্রতিফলন ঘটাতে পারে, যা কিশোর কিশোরীদের ক্রমবর্ধমান ডিজিটাল বিশ্বে চলাফেরার সুযোগ দেবে।

গবেষণায় উঠে এসেছে, যেসব অংশগ্রহনকারী অভ্যাসগতভাবেই সামাজিক মাধ্যমে প্রবেশের মতো আচরণ করেছেন, তাদের মধ্যে মস্তিষ্ক গড়ে ওঠায় বিশেষ কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে। এর মধ্যে আছে, সামাজিক মাধ্যমে বিভিন্ন পুরস্কার ও শাস্তি প্রত্যাশার বিপরীতে প্রতিক্রিয়া জানানোর বেলায় মস্তিষ্কের অনুপ্রেরণামূলক ও সচেতন নিয়ন্ত্রণ নেটওয়ার্ক সমন্বিত করার বিষয়। এর চেয়ে তুলনামূলক ভালো করেছেন যাদের এমন অভ্যাস নেই। বিজ্ঞানীরা বলছেন, সামাজিক প্ল্যাটফর্মের লাইক, কমেন্ট, নোটিফিকেশন ও মেসেজ সামাজিক প্রতিক্রিয়ার অপ্রত্যাশিত প্রবাহ তৈরি করে।

বিজ্ঞাপন (কেন?)

গবেষণার আরেক লেখক কারা ফক্স বলেন এইসব সামাজিক ইনপুট ঘন ঘনই আসে, তবে নির্দিষ্ট বিরতিতে নয়, এবং অনেক সময়ই এগুলো মন ভাল করে দেয়। এগুলো বিশেষ ক্ষমতাধর যা ব্যবহারকারীদের ক্রমাগত সামাজিক মাধ্যমে প্রবেশের শর্ত দিতে পারে। গবেষকগণ  বলছেন, যেসব কিশোর কিশোরী ঘন ঘন দৈনিক প্রায় ১৫ থেকে ২০ বার সামাজিক মাধ্যমে প্রবেশ করছেন, তারা সামাজিক মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানানোর বেলায় তুলনামূলক বেশি সংবেদনশীল হয়ে উঠছে।

আমেরিকান সাইকোলজিকাল অ্যাসোসিয়েশনের গবেষক ও এই গবেষণার অন্যতম এক লেখক মিচ প্রিনস্টিন জানান, জীবদ্দশায়, বেশিরভাগ কিশোর-কিশোরী মস্তিষ্কের বিকাশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে প্রযুক্তি ও সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার শুরু করেন। তাদের গবেষণায় দেখা গেছে, সামাজিক মাধ্যমে আচরণ পরীক্ষা কিশোর কিশোরীদের স্নায়ু বিকাশে দীর্ঘস্থায়ী ও গুরুত্বপূর্ণ পরিণতি বয়ে আনতে পারে। কিশোর কিশোরীদের প্রযুক্তি ব্যবহার সম্পর্কিত বিভিন্ন সুবিধা ও সম্ভাব্য ক্ষতি সম্পর্কে বাবা-মা ও নীতি-নির্ধারকদের বিবেচনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এর আগের বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, ১৩ থেকে ১৭ বছর বয়সী কিশোর কিশোরীদের ৮০ শতাংশই ঘন্টায় অন্তত একবার নিজস্ব মোবাইল ডিভাইসে প্রবেশ করেন। আর তাদের ৩৫ শতাংশ শীর্ষ পাঁচ সামাজিক প্ল্যাটফর্মের অন্তত একটি প্রায় ক্রমাগতই ব্যবহার করছেন। নতুন এই গবেষণা থেকে ইঙ্গিত মিলছে, ১২ থেকে ১৩ বছর বয়সীরা এই ধরনের প্ল্যাটফর্মগুলো বারবার ব্যবহারের কারণে সম্ভবত তিন বছরের মধ্যে তাদের মস্তিষ্ক বিকাশে বেশ কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করা গেছে।

সাবস্ক্রাইব করুন The Penguins Club খবরপত্রিকায়

প্রতি শুক্রবার বিশেষ খবর এবং আলোচনায় অংশগ্রহন করতে আপনার ইমেইল দিন।


Tagged:
About the Author

বিগত প্রযুক্তি বিষয়ক লেখালেখি করছি - বাংলা লেখিকা

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.