Reading Time: 2 minutes

বর্তমানে ডিজিটাল মুদ্রা ক্রিপ্টো কারেন্সিকে ভবিষ্যতের মুদ্রা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ডিজিটাল মুদ্রা কোন কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষ কিংবা কোন ব্যাংক নিয়ন্ত্রণ করে না। কারণ ভার্চুয়াল জগতে এই মুদ্রার লেনদন হয়। যদিও এই মুদ্রার হিসাব রাখা অনেকটাই কঠিন তাই এই ধরনের হিসাব নিকাশের জন্য কম্পিউটারের দরকার হয়। কম্পিউটার নেটওয়ার্ক জটিল হিসাবনিকাশ করে একেকটি ডিজিটাল মুদ্রা সংগ্রহ করে। নিজস্ব উদ্যোগে ব্যক্তি পর্যায়ে পরিচালিত বিশাল একটি কম্পিউটার নেটওয়ার্ক প্রতিটি পেমেন্ট এবং মুদ্রার লেনদেন তত্ত্বাবধান করে এবং সেগুলোর উপর নজর রাখে।

অন্যান্য দেশের মত উগান্ডাতেও ক্রিপ্টো মুদ্রার প্রচলন রয়েছে। বর্তমানে উগান্ডার কেন্দ্রীয় ব্যাংক নতুন ডিজিটাল মুদ্রা প্রচলনের সম্ভাব্যতা বিবেচনা করে দেখছে। দেশটির সরকার এখনও ক্রিপ্টো মুদ্রা ব্যবস্থার ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি। উগান্ডার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জেষ্ঠ্য কর্মকর্তা অ্যান্ড্রু কাউইরি এর বক্তব্য তুলে ধরে রয়টার্স জানিয়েছে যে উগান্ডার কেন্দ্রীয় ব্যাংক ভোক্তাদের নিরাপত্তা এবং অংশগ্রহণের প্রশ্নে প্রযুক্তিগত ঝুঁকি ও সীমবদ্ধতা নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছে। অন্যদিকে গেল বছরের সেপ্টেম্বর মাসেই মধ্য আমেরিকার দেশ এল সালভাদর বিটকয়েনকে রাষ্ট্রীয় এবং অনুমোদিত মুদ্রার স্বীকৃতি দিয়েছে।

এল সালভাদর বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে বিটকয়েনের ব্যবহারকে বৈধতা দিয়েছে। ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবস্থা চালু করতে দেশটির প্রেসিডেন্ট নায়িব বুকেলে একটি প্রস্তাবনা দিয়েছিলেন। কংগ্রেস থেকে প্রস্তাবনা গ্রহণ করার পর পরই এ স্বীকৃতি দেয়া হয়।

কংগ্রেসে ৮৪টির মধ্যে ৬২টি ভোটে আইনপ্রণেতারা বিটকয়েন গ্রহণ ও এর ব্যবহারে আইন প্রণয়নের প্রস্তাবনা প্রদান করেন। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে এল সালভাদরের যে প্রকল্প রয়েছে, সেখানে গুরুতর প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা থাকলেও এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

কংগ্রেসে এ বিষয়ে ভোটগ্রহণের আগে এক টুইটে বুকেলে বলেন যে এ অর্থ ব্যবস্থা চালু হলে তা দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি বিনিয়োগ, পর্যটন ও নতুন উদ্ভাবনের ক্ষেত্র প্রসারিত করবে। তিনি আরো বলেন, ব্যক্তির ইচ্ছার ওপর বিটকয়েনের ব্যবহার নির্ভর করবে এবং এটি ব্যবহারকারীদের কোনো ক্ষতির মুখে ফেলবে না। এছাড়া ডলারকে বিটকয়েনে রূপান্তরের ক্ষেত্রে সরকার সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। এছাড়া দেশের অধিবাসীরা বিটকয়েনের মাধ্যমে তাদের কর প্রদান করতে পারবেন। এল সালভাদর এর মত সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক এ বছরের এপ্রিল মাসে একই পদক্ষেপ নিয়েছে।

বিজ্ঞাপন (কেন?)

ব্যাংক অফ উগান্ডা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডিজিটাল মুদ্রা বিবেচনায় নেওয়া উচিত কি না সে বিষয়ে এ মুহুর্তে প্রাথমিক অনুসন্ধান চালাচ্ছে। প্রাথমিক অনুসন্ধান কবে নাগাদ শেষ হবে বা ডিজিটাল মুদ্রার প্রচলন হলেও সেটি কবে নাগাদ হবে, তার কোনো সময়সীমা কাউইরি উল্লেখ করেননি। তবে, আপাতত তারা প্রযুক্তিগত ঝুঁকির দিকেই বেশি মনোযোগ দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

এতে আর্থিক নীতিমালার কোনো লক্ষ্যগুলো প্রভাবিত হবে সে বিষয়টি বিচার-বিশ্লেষণ করে দেখার কথা অ্যান্ড্রু কাউইরি রয়টার্সকে জানিয়েছেন। তিনি রয়টার্সকে বলেন যে তারা আর্থিক লেনদেন ব্যবস্থায় সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার চেষ্টা করছেন, নাকি লেনদেন জটিলতা সমাধান করতে চাচ্ছেন, না কি অর্থনীতিতে উদ্ভাবনী প্রযুক্তিকে সমর্থন দিতে চাচ্ছেন এই প্রশ্নের এখনও কোনো উত্তর নেই।

ব্লকচেইন ডেটা বিশ্লেষক প্ল্যাটফর্ম চেইনঅ্যানালাইসিসের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালের মার্চ মাস থেকে ২০২২ সালের মার্চ পর্যন্ত ৪৮০ কোটি ডলার সমমূল্যের ক্রিপ্টো মুদ্রা উগান্ডায় গিয়েছে। ইতোমধ্যেই উগান্ডায় ক্রিপ্টো মুদ্রার অনানুষ্ঠানিক চল রয়েছে। তবে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক লাইসেন্সপ্রাপ্ত সেবাদাতাদের সতর্কতার সঙ্গে লেনদেন করার পরামর্শ দিয়েছে। দেশটির বিশেষজ্ঞরা এই প্রযুক্তি বিচার বিশ্লেষণ করে নীতিমালা গঠনের চেষ্টা করছেন। রয়টার্সকে কাউইরি বলেন যে ব্যাংক অফ উগান্ডা ক্রিপ্টো মুদ্রা নিষিদ্ধ করেনি। শুধু কয়েকটা স্পিড ব্রেকার বানিয়ে দেয়া হয়েছে।

তবে কাউইরি এটিও বলেন যে ভোক্তাদের নিরাপত্তা ব্যাংক অফ উগান্ডার জন্য একটি শঙ্কার বিষয়। এ ছাড়াও বাজারের প্রচলিত ক্রিপ্টো মুদ্রা ব্যবস্থাগুলোর অস্থিতিশীলতা নিয়েও উগান্ডার কেন্দ্রীয় ব্যাংক শঙ্কিত বলে জানিয়েছেন তিনি। উগান্ডায় ডিজিটাল আর্থিক ব্যবস্থায় শিক্ষিতের হার কম। দেশের নাগরিকদের এই অত্যাধুনিক আর্থিক উদ্ভাবন থেকে কিছুটা হলেও নিরাপত্তা প্রয়োজন। উগান্ডার সকল নাগরিকের সমান হারে স্মার্টফোন, কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগও নেই। এমন পরিস্থিতিতে ডিজিটাল মুদ্রা ব্যবস্থা চালু করা হলে জনসংখ্যার একটা অংশ এই প্রযুক্তি ব্যবহারের সুযোগই পাবেন না। 

সাবস্ক্রাইব করুন The Penguins Club খবরপত্রিকায়

প্রতি শুক্রবার বিশেষ খবর এবং আলোচনায় অংশগ্রহন করতে আপনার ইমেইল দিন।


Tagged:
About the Author

বিগত প্রযুক্তি বিষয়ক লেখালেখি করছি - বাংলা লেখিকা

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.