বহুল জনপ্রিয় টেক কোম্পানি অ্যাপল ২১ বছর বয়সী এক মেয়ে শিক্ষার্থীর সাথে একটি মামলা নিষ্পত্তি করে। ঘটনাটি ২০১৬ সালের যেখানে মেয়েটি তার ফোন রিপেয়ার সেন্টারে পাঠায় এবং সেখানে তাদের কর্মকর্তারা মেয়েটির গোপন ছবি এবং ভিডিও তার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রকাশ করে।
অ্যাপল একটি জায়ান্ট টেক কম্পানি যারা কিনা গোপনীয়তার জন্য বিপুল সমাদ্রিত। ছাত্রীটি যেখানে তার ফোন রিপেয়ার করার জন্য পাঠায় সেখানে অ্যাপলের কর্মকার্তারাই মেয়াটির গোপনীয়তা ক্ষুণ্ণ করে। ঘটনাটি বেশ হতাশাজনক। ঘটনাটি ছিলো Pegatron দ্বারা পরিচালিত California-র এক রিপেয়ার সেন্টারে। The Telegraph এর রিপোর্ট অনুযায়ী অ্যাপল মেয়েটিকে মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ প্রদান করে।
অ্যাপল গোপনীয়তা এবং ডেটা সুরক্ষার দিক দিয়ে নিজেদের প্রতি গর্বিত। কিন্তু উক্ত ঘটনা থেকে বোঝা গেল তাদের সেবা খাতের কর্মকর্তারা অ্যাপল এর এ গর্বটি ধরে রাখতে পারেনি।
মেয়েটির মোবাইলের লাইব্রেরি থেকে প্রায় ১০ টি ছবি এবং একটি ভিডিও প্রকাশ করেছিলো রিপেয়ার টেকনিশিয়ান রা। এই পরিপ্রেক্ষিতে অ্যাপল এর বিপক্ষে গোপনীয়তা ক্ষুণ্ণ এবং মানসিক বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে মামলা করা হয়। এবং যারা ঘটনাটির সাথে সম্পৃক্ত তাদের বহিষ্কার করা হয়।
২ জন টেকনিশিয়ান কাজ করতে সময় মেয়েটির “১০ টি নগ্ন ছবি এবং একটি ভিডিও” মেয়েটির ফেসবুক একাউন্ট থেকে এমনভাবে প্রকাশ করে যেন মেয়েটি নিজে সেগুলো পোস্ট করেছিলো। যখন মেয়েটির বন্ধু বান্ধব বষয়টি মিলিয়ন্য করে এবং তাকে জানায় তখন মেয়েটি তখন বিষয়টি বুঝতে পারে এবং পোস্ট গুলো সরিয়ে ফেলে।
অ্যাপল মেয়েটিকে ঠিক কত ডলার ক্ষতিপুরণ দিয়েছিলো তা সঠিক জানা যায়নি, তবে এটা জানা গিয়েছে যে মেয়েটির আইনজীবীরা “গুরুতর ইমোশনাল ডিস্ট্রেস” এর জন্য ৫ মিলিয়ন ডলার ক্ষতিপুরণ দাবী করেছিলো। The Telegraph এর একটি বিবৃতি অনুযাইয়ী, অ্যাপল বলেছে, “আমরা আমাদের গ্রাহকদের তথ্যের গোপনীয়তা এবং নিরাপত্তাকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে নিই এবং মেরামত প্রক্রিয়া জুড়ে ডেটা সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য আমাদের বেশ কয়েকটি প্রোটোকল রয়েছে। ২০১৬ সালে যখন আমরা আমাদের একজন বিক্রেতার কাছে আমাদের নীতির এই মারাত্মক লঙ্ঘনের কথা জানতে পারি, তখন আমরা তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিই এবং তারপর থেকে আমাদের বিক্রেতা প্রটোকল গুলো শক্তিশালী করা অব্যাহত রেখেছি।”
সমস্যা হচ্ছে অ্যাপল ফোন রিপেয়ারে পাঠানোর পুর্বে তার পাসওয়ার্ড ডিজেবল করে পাঠানোর পরামর্শ দেয়। এতে করে মোবাইলের সকল ডাটা তখন অ্যাক্সেস করার একটি সু্যোগ তৈরি হয়ে যায়। যদিও অ্যাপল সবসময় ডিভাইসটি ফ্যাক্টোরি রিসেট দিয়ে পাঠানোর নির্দেশ দেয় কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে ফোন রিসেট করা সম্ভবপর হয় না।
অতঃপর ২০১৯ সাল থেকে অ্যাপল ৩য় পক্ষের মাধ্যমে মোবাইল রিপেয়ার বন্ধ করতে শুরু করে যেন তা ব্যবহারকারীর গোপনীয়রতাকে প্রভাবিত করতে না পারে। সেই বছরের শেষের দিকে অ্যাপল তার মানসিকতা পরিবর্তন করতে শুরু করে এবং ইন্ডিপেন্ডেন্ট রিপেয়ার প্রোভাইডার প্রোগ্রাম উন্মোচন করে। প্রথমে, এই প্রোগ্রামটি কেবল মাত্র তৃতীয় পক্ষের সরবরাহকারীদের দ্বারা ওয়ারেন্টির বাইরে থাকা আইফোন গুলোকে ঠিক করার অনুমতি দেয়। ২০২০ সালে, অ্যাপল মিনিয়াপোলিস ভিত্তিক খুচরা বিক্রেতার টেকনিশিয়ান্দের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যে কোনো বেস্ট বাই স্টোরে আইফোন ঠিক করার অনুমতি দেওয়ার জন্য বেস্ট বাই-এর সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। এই বছরের শুরুতে, অ্যাপল বলেছে যে অ্যাপল পণ্যের নিরাপদ এবং নির্ভরযোগ্য মেরামতের প্রস্তাব দেওয়ার জন্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট রিপেয়ার প্রোভাইডার প্রোগ্রামটি বিশ্বজুড়ে ২০০ টিরও বেশি দেশে প্রসারিত হচ্ছে। এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং ইউরোপ জুড়ে গ্রাহকদের সেবা প্রদানকারী ১৫০০ টিরও বেশি ইন্ডিপেন্ডেন্ট রিপেয়ার প্রোভাইডার রয়েছে।