Reading Time: 2 minutes

অগাস্ট মাসে প্রযুক্তি দৌঁড়ে চীনের কাছে যুক্তরাষ্ট্র পিছিয়ে পড়ছে এ আশঙ্কায় প্রেসিডেন্ট বাইডেন ২৮ হাজার কোটি ডলার অনুদানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে নতুন আইনে স্বাক্ষর করেছেন। তবে আগামী ১০ বছর এ কোম্পানিগুলো চীনে ‘সর্বাধুনিক প্রযুক্তির’ কারখানা নির্মাণ করতে পারবে না বলে শর্ত দিয়েছে বাইডেন প্রশাসন। সরকারী অনুদানের গ্রহীতা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর চীনে কারখানা নির্মাণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। যুক্তরাষ্ট্র এ তহবিলের পুরোটাই খরচ করবে প্রযুক্তির উৎপাদন ও বৈজ্ঞানিক গবেষণার খাতে।

স্থানীয়ভাবে সেমিকন্ডাক্টর শিল্প নির্মাণে পাঁচ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। সে পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর চীনে কারখানা নির্মাণে এ নিষেধাজ্ঞা এলো বলে বিবিসি জানিয়েছে। চীনের ওপর নির্ভরতা কাটিয়ে উঠতে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য সংগঠনগুলো সরকারের সহযোগিতার জন্য বাইডেন প্রশাসনকে চাপ দেওয়ার পর এমন ঘোষণা এলো বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমটি। এ ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রেখেছে বৈশ্বিক পর্যায়ে সেমিকন্ডাক্টর চিপ ঘাটতি।

আইনি পরিবর্তনগুলোর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের ভূখণ্ডে অবস্থিত কারখানায় কম্পিউটার চিপ উৎপাদন করলে কর ছাড় পাবে নির্মাতা কোম্পানিগুলো। এদিকে মার্কিন সরকারের এ সিদ্ধান্তকে এনভিডিয়ার জন্য তলপেটে আঘাত করার সমান বলে আখ্যা দিয়েছেন বাজার বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান ওয়েডবুশ সিকিউরিটিজের জ্যেষ্ঠ কর্মী ড্যান আইভস। চীনের জন্য সব দিক থেকেই এটি একটি বড় ধাক্কা এবং ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা আরও বাড়াবে এ বিষয়গুলো বিবিসিকে বলেন তিনি।

কিছুদিন আগেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রথমসারির চিপ নির্মাতা এনভিডিয়ার উপর যুক্তরাষ্ট্র সরকার আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এআই খাতে বহুল ব্যবহৃত দুটি চিপ চীনের বাজারে রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করেছে। কোম্পানিটি জানিয়েছে যে  যুক্তরাষ্ট্র মেশিন লার্নিং কাজে ব্যবহারের জন্য নকশা করা এ১০০ এবং এইচ১০০ চিপের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এতে এইচ১০০ সিরিজের চিপগুলোর নির্মাণ প্রক্রিয়াও বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কাও করছে কোম্পানিটি।

বিজ্ঞাপন (কেন?)

এর ফলে কেবল যে এআই প্রযুক্তিনির্ভর চীনা কোম্পানিগুলো বিপাকে পড়বে এমনটা নয়, সেই সাথে নিজেদের ব্যবসাও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা করছে এনভিডিয়া। এনভিডিয়ার মতো একই বিপাকে পড়ার খবর জানিয়েছে আরেক চিপ নির্মাতা অ্যাডভান্সড মাইক্রো ডিভাইসেস বা এএমডি। যুক্তরাষ্ট্রের সদ্য আরোপিত বাধ্যবাধকতার কারণে এমআই২৫০ এআই চিপ চীনে রপ্তানি করতে পারবে না কোম্পানিটি। তবে, যুক্তরাষ্ট্রের পরিবর্তিত নীতিমালায় সার্বিক ব্যবসার ওপর বিরূপ প্রভাবের আশঙ্কা করছে না কোম্পানিটি।

বাণিজ্য ও প্রযুক্তি খাত নিয়ে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বেশ কয়েক বছর ধরে রেষারেষি চলছে। বিবিসি জানিয়েছে, বর্তমানে বিশ্ববাজারে সরবরাহকৃত সেমিকন্ডাক্টর চিপের ১০ শতাংশ উৎপাদন করে যুক্তরাষ্ট্র। মোবাইল ফোন থেকে শুরু করে যানবাহনেও ব্যবহৃত হয় চিপগুলো। অথচ ১৯৯০ সালে বিশ্ববাজারে সেমিকন্ডাক্টর চিপের ৪০ শতাংশ সরবরাহ করতো দেশটি। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন সেমিকন্ডাক্টর আইনের বিরোধীতা করে ওয়াশিংটনের অবস্থিত চীনা দূতাবাস বলেছে, এটি এক প্রকার স্নায়ু যুদ্ধের মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ।

যুক্তরাষ্ট্রের ‘চিপস অ্যান্ড সায়েন্স অ্যাক্ট’-এর ব্যাখ্যা দিয়ে দেশটির বাণিজ্যমন্ত্রী জিনা রাইমোন্ডো বলেন, “যারা চিপস তহবিল থেকে অনুদান পাবে তারা যেন জাতীয় নিরাপত্তা ঝুঁকিতে না ফেলেন সে জন্যই আমরা এ সীমাবদ্ধতাগুলো প্রয়োগ করছি। তাদের এই অনুদানের অর্থ চীনে বিনিয়োগের অনুমতি নেই এবং তারা ১০ বছরের জন্য চীনে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির উৎপাদনে যেতে পারবে না। তিনি আরো বলেন যে কোম্পানিগুলো আর্থিক সহযোগিতা পাবে তারা কেবল চীনের স্থানীয় বাজারে সরবরাহ দেওয়ার জন্য চীনের বিদ্যমান কারখানাগুলো প্রসারণের অনুমতি পাবেন।

সাবস্ক্রাইব করুন The Penguins Club খবরপত্রিকায়

প্রতি শুক্রবার বিশেষ খবর এবং আলোচনায় অংশগ্রহন করতে আপনার ইমেইল দিন।


Tagged:
About the Author

বিগত প্রযুক্তি বিষয়ক লেখালেখি করছি - বাংলা লেখিকা

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.