ফেসবুকের প্যারেন্ট প্রতিষ্ঠান ‘মেটা প্ল্যাটফর্মস ইনকের্পারেটেড’-এর বিরুদ্ধে ট্রেডমার্ক নীতিমালা লঙ্ঘনের মামলা করে বসেছে ভার্চুয়াল-রিয়ালিটি সেবাদাতা কোম্পানি ‘মেটাএক্স এলএলসি’।
ভার্চুয়াল রিয়ালিটি কোম্পানি মেটাএক্স-এর অভিযোগ, ফৌজদারি ট্রেডমার্ক নীতিমালা লঙ্ঘন করে ‘মেটা’ শব্দটি ব্যবহার করছে ফেইসবুকের মূল কোম্পানি। আর্থিক ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি, ফেইসবুকের মূল প্রতিষ্ঠানের পণ্য ও সেবায় ‘মেটা’ নামটির ব্যবহার বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ চেয়ে আদালতের কাছে আবেদন করেছে ভার্চুয়াল রিয়ালিটি কোম্পানিটি।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ‘মেটা প্ল্যাটফর্মস’-এর বিরুদ্ধে ম্যানহাটনের ফেডারেল আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে মঙ্গলবার। ফেইসবুকের মূল কোম্পানি নাম চুরি করে নিজের ব্যবসার মোড় ঘোরাতে চাইছে বলে মামলার আবেদনে অভিযোগ করেছে মেটাএক্স।
আদালতে নিউ ইয়র্কভিত্তিক মেটাএক্স বলেছে, ফেইসবুক নিজের ব্র্যান্ড পাল্টানোয় ‘ধ্বংস হয়ে গেছে’ তাদের ব্যবসা; মেটা হিসেবে ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালু রাখা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে কোম্পানিটির জন্য।
২০২১ সালের অক্টোবরে নাম পাল্টে রিব্র্যান্ডিং করেছে ফেইসবুকের মূল কোম্পানি। সে সময়ে কোম্পানিটি হঠাৎ নাম পরিবর্তনের ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছিল, ‘মেটাভার্স’ ভাবনাই মোবাইল ইন্টারনেট প্রযুক্তিকে প্রতিস্থাপন করবে, আর তাই এ প্রযুক্তি বাস্তবায়নের অগ্রদূতের ভূমিকা পালন করতে চায় তারা।
তবে, সমালোচক ও বাজার বিশ্লেষকদের মতে, ফাঁস হয়ে যাওয়া অভ্যন্তরীণ নথিপত্র থেকে উঠে আসা অনৈতিক ব্যবসা কৌশল অবলম্বনের অভিযোগের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করতেই নাম পাল্টানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তৎকালীন ফেইসবুক।
এদিকে, মেটাএক্স প্রতিষ্ঠাতা জাস্টিন বলোনিনো এক বিবৃতিতে বলেছেন, মেটা প্ল্যাটফর্মস “কেবল আমাদের ব্যবসাকেই ঝুঁকির মুখে ফেলেনি, বরং পুরো শিল্প এবং যে উদ্ভাবকরা এটি (মেটাভার্স) নির্মাণে সহযোগিতা করেছেন তাদের সবার বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদের অধিকারকে ঝুঁকির মুখে ফেলেছে।”
উল্লেখ্য, ‘মেটাভার্স’ ভাবনা বা নাম কোনোটিরই প্রবর্তক ফেইসবুকের মূল কোম্পানি নয়। বরং, কোম্পানিটি নাম পাল্টানোর পর থেকেই সংশ্লিষ্টরা অভিযোগ করছেন, ‘মেটাভার্স’ প্রযুক্তির কৃতিত্ব নিজেদের কুক্ষিগত করার চেষ্টা করছে মার্ক জাকারবার্গের প্রতিষ্ঠান।
নুতন মামলা নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে মেটার সঙ্গে যোগাযোগ করেও তাৎক্ষণিক কোনো উত্তর পায়নি রয়টার্স।
অন্যদিকে, সেবাগ্রাহকদের ভিআর এবং এআর প্রযুক্তির মাধ্যমে ‘পরীক্ষামূলক ভার্চুয়াল জগতে নিজেকে নিমজ্জিত করার’ সেবা দেয় মেটাএক্স।
কোম্পানিটি মামলার অভিযোগে জানিয়েছে, ২০১৭ সালেও সম্ভাব্য অংশীদারিত্ব নিয়ে তৎকালীন ফেইসবুকের সঙ্গে আলোচনা হয়েছিল তাদের। সে সময়ে মেটাএক্সের সেবাগুলোর প্রশংসাও করেছিলেন ফেইসবুকের নির্বাহী কর্মকর্তারা।
মেটাএক্স বলছে, ‘মেটা প্ল্যাটফর্মস’ এখন মেটাভার্স এবং সংশ্লিষ্ট ভিআর-এআর প্রযুক্তির দিকে ঝোঁকায় ঝুঁকির মুখে পড়েছে কোম্পানির ব্যবসা। এ পরিস্থিতি বজায় থাকলে একদিকে ব্যবসা বন্ধ করে দিতে হবে কোম্পানিটিকে, অন্যদিকে দুই প্রতিষ্ঠানকে একে অন্যের সঙ্গে জড়িত ভেবে বিভ্রান্ত হবেন সেবাগ্রাহকরা।