অ্যাপল-চীন-গোপন-চুক্তি
Reading Time: 2 minutes

অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী টিম কুক অ্যাপলকে তিন লক্ষ কোটি ডলার বাজার মূল্যের কাছাকাছি নিয়ে এসেছেন। ২০১৬ সালে কুক চীনের এক ভ্রমণে গিয়ে ওই সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন। চীনের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার জন্য কুকের এই সক্ষমতা অ্যাপলের এই অগ্রগতিকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতি এক সংবাদ প্রতিবেদন বলছে যে এতদিন অ্যাপল ও তার প্রধান নির্বাহী টিম কুক চীনের সঙ্গে গোপন সমঝোতায় ছিল। প্রযুক্তি প্রকাশনা দ্যা ইনফরমেশন জানিয়েছে যে উক্ত সমঝোতা স্মারকে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক টানাপোড়েনের প্রভাব পড়েছে।

বেনামী গোপন সূত্র আর অভ্যন্তরীণ নথিপত্রের কথা তুলে ধরে দিয়ে দ্যা ইনফর্মেশন আরো বলছে যে অ্যাপল চীনের সঙ্গে ন্যাশনাল ডেভেল্পমেন্ট অ্যান্ড রিফর্ম কমিশন-এর সঙ্গে পাঁচ বছর মেয়াদের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছিল। এক হাজার দুইশত পঞ্চাশ শব্দের ওই সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী অ্যাপলের চীনের বিভিন্ন খাতে সাতাশ হাজার পাঁচশ কোটি ডলার বিনিয়োগ করার কথা ছিল। ২০১৪ এবং ২০১৫ সালে চীনের কাছ থেকে অ্যাপল ম্যাপস টিম দুটি অদ্ভুত অনুরোধ পেয়েছিল। চীনের অনুরোধটি ছিল ম্যাপ থেকে জুম আউট করার পরেও বিতর্কিত মালিকানার দ্বীপগুলো যাতে বড় দেখায় সেই ব্যবস্থা যেন করা হয়।

দ্যা ইনফর্মেশন এর প্রতিবেদন অনুসারে পরবর্তীতে জানা যায় যে অনুরোধটির পরে অ্যাপল চীনের ওই বিষয়টি কেবল মেনেই নেয়নি বরং এখন চীনের ভূখণ্ড থেকে কেউ যদি অ্যাপলের ম্যাপসে দ্বীপগুলো দেখতে চায় তাহলে আশপাশের সবকিছুর থেকে আকারে বড় করে যাতে দেখা যায় সেই ব্যবস্থাও করে দিয়েছে। চীন-জাপান সীমান্তের কয়েকটি ছোট দ্বীপের মালিকানা নিয়ে উভয় দেশের সরকারের মধ্যে রেষারেষি পরিপ্রেক্ষিতে চীন অ্যাপেল ম্যাপের কাছে এরকম অনুরোধ করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। চীনের এই অনুরোধ মেনে নেয়ার জন্যে অ্যাপলকে সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়েছে।

শুধু তাই নয়, চীনের সঙ্গে এই গোপন সম্পর্কের ফলে অ্যাপল বিভিন্ন সময়ে বিপাকেও পড়েছে।

বিজ্ঞাপন (কেন?)

চীন দেশের সরকারের বিভিন্ন নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্তে অ্যাপলের ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত হচ্ছিল। কুকের ওই চীন ভ্রমণ নিয়ে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হলেও অ্যাপল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমঝোতায় আসা তার এই ভ্রমণের মূল উদ্দেশ্য ছিল। বিভিন্ন খাতে কুক পাঁচ বছরে সাতাশ হাজার পাঁচশ কোটি ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়ে চীন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছান। নিজেদের ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে চীন সরকারের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি বন্ধ করা তার মূল উদ্দেশ্য ছিল।

চীনের ভূখণ্ডে অ্যাপল প্রতিষ্ঠানটি রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সেন্টার নির্মাণ করার পাশাপাশি এখন চীনের ব্যবহারকারীদের ডেটা চীনের ভূখণ্ডেই সংরক্ষণ করতে শুরু করেছে। প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট ভার্জ জানিয়েছে যে দ্যা ইনফর্মেশনের দাবিগুলো যে সঠিক সেটি ইঙ্গিত করছে কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের এই গবেষণা ডেটা। কয়েক মাস আগে সংস্থাটি জানিয়েছিল যে ছয় বছরের মধ্যে অ্যাপল প্রথমবারের মতো চীনের বাজারে বিক্রয়ের সবার শীর্ষে স্থান দখল করে নিয়েছে। তবে, চীনে অ্যাপলের ডেটা সংরক্ষণ করার বিষয়টি একেবারেই মিথ্যে নয়।

বাজারে সবার শীর্ষে স্থান নিলেও অ্যাপল ব্যবহারকারী সকল ডেটা ব্যবহারকারীর অনুমতি ছাড়াই সংরক্ষণ করে। ব্যবহারকারীর নিরাপত্তা এবং গোপনীয়তা বিষয়টি অ্যাপল পুরোটাই নজর আন্দাজ করছে। সেই সাথে চীনের সঙ্গে গোপন সম্পর্কের বিষয়টি তুলে ধরে অনেক প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে অ্যাপলকে। চীনের বাজারের অ্যাপ স্টোর থেকে নির্দিষ্ট কিছু অ্যাপ মুছে দিয়েও অ্যাপল নানানভাবে বিতর্কিত হয়েছে। এছাড়াও চীনের যে প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে অ্যাপল একত্রিত হয়ে কাজ করছে ওই প্রতিষ্ঠানগুলোতে সংখ্যালঘু উইঘুরদের জোরপূর্বক শ্রম দিতে বাধ্য করা হচ্ছে এমন অভিযোগ ও উঠেছে। 

সাবস্ক্রাইব করুন The Penguins Club খবরপত্রিকায়

প্রতি শুক্রবার বিশেষ খবর এবং আলোচনায় অংশগ্রহন করতে আপনার ইমেইল দিন।


Tagged:
About the Author

বিগত প্রযুক্তি বিষয়ক লেখালেখি করছি - বাংলা লেখিকা

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.