চীন-হুয়াওয়ে-নজরদারি-উইঘুর
Reading Time: 2 minutes

ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদন বলছে যে ফাঁস হওয়া প্রেজেন্টেশনের স্লাইড অনুযায়ী, অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জোট বেঁধে হুয়াওয়ে একাধিক প্রযুক্তি অবকাঠামো নির্মাণ করেছিল। চীনের শিনজিয়াংয়ের জাতিগত সংখ্যালঘুদের উপর রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন ইস্যুতে হুয়াওয়ে জড়িত রয়েছে এমনটা ফাঁস হওয়া নথিপত্র থেকে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। স্মার্টফোন উৎপাদনে বহুল পরিচিত প্রতিষ্ঠানটি

লেবার অ্যান্ড রিএডুকেশন ক্যাম্পের প্রযুক্তি অবকাঠামো ও নজরদারি ব্যবস্থা নির্মাণ প্রকল্পে জড়িত ছিল। শীর্ষস্থানীয় মার্কিন দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্ট হুয়াওয়ের একটি ওয়েবসাইট থেকে পাওয়ারপয়েন্ট প্রেজেন্টেশন সংগ্রহ করে অনুবাদ করেছে।

ফাইলগুলো ইতোমধ্যেই ওয়েবসাইটটি থেকে মুছে দেওয়া হয়েছে। হুয়াওয়ের একাধিক পণ্য ‘স্মার্ট প্রিজন ইউনিফায়েড প্ল্যাটফর্মের মূল ভিত্তি’ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। চীন সরকারের বিরুদ্ধে উইঘুর জনগোষ্ঠীর মানবাধিকার লঙ্ঘন, মুসলিম উইঘুরদের রিএডুকেশন ক্যাম্পে বন্দী রাখা এবং লেবার ক্যাম্পে কাজ করতে বাধ্য করার গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদন বলছে যে জেলখানাগুলোতে হুয়াওয়ের পণ্য বা সেবা ব্যবহৃত হয়েছে তার বেশ কয়েকটি শিনজিয়াং-এ অবস্থিত। এটি সংখ্যালঘু উইঘুর জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত অঞ্চল।

২০২০ সালে গবেষকদের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে হুয়াওয়ে’র ফেইশল রিকগনিশন প্রযুক্তির কার্যপ্রণালী নিয়ে বিস্তারিত কিছু তথ্য ছিল। উক্ত প্রযুক্তিটিতে কাউকে উইঘুর হিসেবে চিহ্নিত করতে পারলেই সংশ্লিষ্টদের সংকেত পাঠিয়ে বার্তা দেওয়ার সক্ষমতা ছিল। ওয়াশিংটন পোস্টের অনুবাদ করা আরেকটি স্লাইডে শিনজিয়াংয়ে ব্যবহৃত নজরদারি ব্যবস্থার বিস্তারিত দেওয়া ছিল। উক্ত স্লাইডে শিংনজিয়াংয়ের স্থানীয় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী পলাতকদের চিহ্নিত করতে কীভাবে ফেইশল রিকগনিশন প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে তার বিস্তারিত ব্যাখ্যা ছিল।

বিজ্ঞাপন (কেন?)

ওয়াশিংটন পোস্টের সংগ্রহ করা অন্য স্লাইডগুলোতে কণ্ঠস্বর চিহ্নিতকরণের মাধ্যমে মানুষের পরিচয় নির্ধারণ প্রসঙ্গে বিস্তারিত তথ্য রয়েছে । এ ছাড়াও স্লাইডগুলোতে ভিডিও ফুটেজ দেখে কারো অবস্থানের উপর নজর রাখা এবং কর্মস্থলে কর্মীদের উপর নজর রাখার প্রযুক্তি নিয়েও নানা তথ্য ছিল। ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী নজরদারি ব্যবস্থার উপর হুয়াওয়ের কাজ নিয়ে নির্মিত প্রেজেন্টেশনের কোথাও উইঘুরদের নাম উল্লেখ নেই। শিনজিয়াংয়ে সরাসরি কোনো প্রযুক্তি পণ্য বা সেবা সরবরাহের অভিযোগও হুয়াওয়ে সরাসরি অস্বীকার করে আসছে।

প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট ভার্জ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বনাম চীন রেষারেষিতে অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে’র মতো গুরুত্ব পায়নি বলে মন্তব্য করেছে। চীনের সঙ্গে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে হুয়াওয়ে লাইমলাইটে। শিনজিয়াংয়ের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর উপর চীন সরকারের নজরদারি ও নিপীড়ণে পরোক্ষভাবে জড়িত থাকার অভিযোগে মার্কিন সরকার চীনের বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভূক্ত করেছে। ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে কোনো ব্যবসায়িক লেনদেন করতে গেলে মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলোর নানা বিধি-নিষেধের মুখে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

হুয়াওয়ের বিরুদ্ধে মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারের মূল অভিযোগ, নিজস্ব যন্ত্রপাতিতে ব্যাকডোর নির্মাণ করছে। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে মার্কিন সরকার নিজ দেশের টেলিকম খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোকে হুয়াওয়ের বদলে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ব্যবসা চুক্তিতে অর্থ খরচের পরামর্শ দিয়েছিল। 

সাবস্ক্রাইব করুন The Penguins Club খবরপত্রিকায়

প্রতি শুক্রবার বিশেষ খবর এবং আলোচনায় অংশগ্রহন করতে আপনার ইমেইল দিন।


Tagged:
About the Author

বিগত প্রযুক্তি বিষয়ক লেখালেখি করছি - বাংলা লেখিকা

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.