আইফোন ১৩ বিক্রি বর্তমানে আকাশ ছুঁয়েছে কারণ সারা বিশ্ব জুড়ে লক্ষ লক্ষ ব্যবহারকারী অ্যাপলের সর্বশেষ স্মার্টফোন কেনার জন্য প্রতিযোগিতা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্ত এর ব্যবহারকারীরা এই মুহূর্তে খুব বাজে রকম বিস্ময়ের মধ্যে রয়েছে। আইফিক্সিট এর থেকে একটি চোখ খুলে দেয়ার মত রিপোর্টে জানা গেছে যে প্রতিটি আইফোন ১৩ মডেল একটি নতুন স্ক্রিন রিপেয়ারিং ফাঁদ দিয়ে বানানো, যা মোবাইল রিপেয়ার ইন্ডাস্ট্রিকে চিরতরে পরিবর্তন করে দিতে পারে। এই ফাঁদে ব্যবহারকারীদের সময় এবং অর্থ ব্যয় হবে। আইফোন ১৩ মডেলগুলি বাদ দিয়ে আইফিক্সিট যা আবিষ্কার করেছে তা হল অ্যাপল তাদের ১৩ এর স্ক্রিনের নীচে একটি ছোট চিপ (একটি টিক-ট্যাকের সাইজের) যুক্ত করে দিয়েছে। এই চিপটি হচ্ছে একটি মাইক্রোকন্ট্রোলার যা একটি ফোনের সাথে শুধু সেই ফোনের সাথে আসা ডিসপ্লেটি সংযুক্ত করে। চিপটি ফোনের এই দুইটি পার্ট এর জোড়া শনাক্ত করে এবং এ দুটি পার্ট আলাদা হয়েছে কিনা তার হিসাব রাখে।
যখন ডিসপ্লেটি ড্যামেজ হবে বা ভেঙে যাবে এবং পরিবর্তন করার প্রয়জন পড়বে, তখন ঐ মাইক্রোকন্ট্রোলারটিকে নতুন ডিসপ্লে গ্রহন করতে প্রোগ্রাম করার প্রয়োজন হয়। এটি করার জন্য প্রয়োজন ‘অ্যাপল সার্ভিসেস টুলকিট ২’ [এএসটি২], এটি একটি ব্যয়বহুল মালিকানাধীন পরিষেবা যার জন্য অ্যাপল কোম্পানি থেকে সম্মতি এবং প্রশংসাপত্র প্রয়োজন। যদি আইফোন ১৩ মাইক্রোকন্ট্রোলারের সাথে নতুন স্ক্রিন যুক্ত না করা হয় তবে ফেস আইডি, যেটি আইফোনের নিরাপত্তার প্রাথমিক এবং প্রধান রূপ সেটি ডিজাবল হয়ে যাবে। এবং ব্যবহারকারীরা একটি মেসেজ পাবেন যেটিতে বলা হবে যে এই আইফোনটিতে ফেস আইডি অ্যাক্টিভ করা সম্ভব নয়। অ্যাপলের জেনুইন ডিসপ্লে হওয়া সত্ত্বেও এই সমস্যাটি হয় যা খুবই অনর্থক। প্রকৌশলীরা মনে করেন যে, ফেস আইডিজনিত এই সমস্যাটির কোন ভিত্তি নেই, স্ক্রীন সোয়াপ করার পরও এটি কাজ করার কথা।
বিশ্বজুড়ে হাজার হাজার রিপেয়ারিং প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবহারকারীর স্ক্রীন প্রতিস্থাপন করে মুনাফা অর্জন করছে, কিন্তু অ্যাপলের এই পদক্ষেপ প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। আইফোনের ব্যবহারকারীদের এই বিষয়ে চিন্তা করতে হবে যেহেতু তারা ডিভাইসগুলো অ্যাপল থেকে রিপেয়ার করছে এবং এখানে শুধু এক জনের লাভের বিষয়টি আসছে না। প্রথমত, ব্যবহারকারীদের আর কোন দ্বিতীয় অপশন থাকলো না। দ্বিতীয়ত, যেসব ব্যবহারকারীদের নিকটস্থ অ্যাপলের রিপেয়ার সেন্টার নেই তারা অনেক বড় এক সমস্যার মুখে পড়বে। কোম্পানি ইতিমধ্যেই আইফোন ১১ প্রো ম্যাক্সে ওয়ারেন্টি গ্লাস প্রতিস্থাপনের জন্য ৬০০ ডলার মূল্য নির্ধারণ করে রেখেছে। অ্যাপল ব্যবহারকারীদের বাধ্য করে প্রতি বছর ২০০+ ডলার ইন্সুরেন্স ফী (অ্যাপল কেয়ার) চার্জ দেওয়ার জন্য।
আসলে এই ঘটনাটি নতুন নয়, অ্যাপল এর আগেও টাচ আইডি ক্যামেরা এবং ব্যাটারি নিয়ে এরকম ঝামেলার সৃষ্টি করেছিল। প্রতিবারই জনসাধারন অ্যাপলের বিরুদ্ধাচারণ করেছিল কিন্তু অ্যাপল ও প্রতিবারের মত এটিকে বাগ সমস্যা বলে চালিয়ে দিয়েছে। আইফোন বারবার একই কথা চালিয়ে যেতে থাকে এবং এটি ফিক্স করবে বলে জনসাধারণকে আশ্বাস দিয়ে যায়। অ্যাপলের এরকম বারবার অবহেলার জন্য অ্যাপল ১৩ এর ব্যবহারকারীরা এখন ক্ষুব্ধ।