Reading Time: 2 minutes

সম্প্রতি বৃটিশ সরকার অনলাইন ব্যবহারকারীদের ভিনদেশের স্পাইদের নজরদারি শনাক্ত করতে নতুন একটি অ্যাপ চালু করেছে। নতুন এই অ্যাপের নাম দেয়া হয়েছে ‘দা থিংক বিফোর ইউ লিংক’। বর্তমানে অনলাইনে প্রচুর স্পাই রয়েছে যারা গোপনে মানুষের বিভিন্ন কার্যক্রমের উপর নজরদারি চালাচ্ছে। বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এসব স্পাইদের দল অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের প্রলোভন দেখিয়ে মানুষের কাছ থেকে স্পর্শকাতর তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছে। অনলাইন জগতে এই ধরনের ঘটনা বড় পরিসরে এবং নিয়মিতই ঘটছে। বিভিন্নভাবে ব্ল্যাকমেইল করে তারা মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।

যুক্তরাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থা এমআই৫ লিংকডইন ও ফেসবুকের মতো সামাজিক সাইটে ভুয়া প্রোফাইলের মাধ্যমে প্রায় ১০ হাজার ব্রিটিশ নাগরিককে লক্ষ্য করার কথা জানিয়েছে। এসব স্পাইয়ের কীভাবে অনলাইন ব্যবহারকারীদের স্পর্শকাতর তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছে যুক্তরাজ্য সরকার তা কিছু কেস স্টাডি এর সিরিজে সেই পরিস্থিতি তুলে ধরেছে। এসব কেস স্টাডির একটিতে দেখা যায় যে স্পাইয়েররা একটি থিংক ট্যাংক এর সদস্য সেজে দায়িত্বরত একজন নিরাপত্তা বিষয়ক সরকারী কর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। যেহেতু প্রোফাইলটিতে সেই কর্মীর একজন পরিচিত বন্ধু ছিলেন, তাই কিছুটা সন্দেহ থাকার পরও প্রোফাইলটিকে আসল হিসেবেই ধরে নিয়েছিলেন তিনি।

যা তাদের মধ্যে একাধিক আদান-প্রদান, এমনকি ব্যবসায়িক পরামর্শ দেওয়া পর্যন্ত গড়িয়েছে বলে বিবিসির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। এমআই৫ এর মহাপরিচালক কেন ম্যাকক্যালাম বলেন যে যারা সরকারের সঙ্গে কাজ করছে, তাদের সঙ্গে উচ্চ-প্রযুক্তির ব্যবসায়িক এবং শিক্ষাভিত্তিক সম্পর্ক তৈরিতে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে বাইরের দেশের স্পাইয়েরা। দা থিংক বিফোর ইউ লিংক অ্যাপটি তাদের সাহায্য করবে, যাদের সঙ্গে হয়ত ছদ্মবেশে যোগাযোগ চলছে। অ্যাপটি অনলাইনে কোনো অপরিচিত যোগাযোগ গ্রহনের আগে, নিরাপত্তা নিশ্চিতে সাহায্য করবে।

আরেকটি কেসে একজন সাবেক নিরাপত্তা বিষয়ক সরকারী কর্মীকে অনলাইনে একটি পেশাদার নেটওয়ার্কিং সাইটের মাধ্যমে যোগাযোগ করে স্পাইয়েরা তাকে বিদেশে দেখা করতে বলে। এরপর ছয় মাসের মধ্যেই স্পাইয়ের তাকে একটি গোপন যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রদান করে এবং তার কাছ থেকে বিভিন্ন স্পর্শকাতর সরকারী তথ্য জানতে চায়। অনলাইনে বিদেশী স্পাইয়েরদের চলমান হুমকির একটি উদাহরণ হিসেবে বিবিসি ঘটনাটিকে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে। সরাসরি উল্লেখ না করলেও, এই ধরনের কার্যক্রমের পেছনে বেশিরভাগ সময় চীনের ভূমিকা থাকে বলে বিবিসি প্রতিবেদনে লিখেছে।

বিজ্ঞাপন (কেন?)

সিপিএনআই (সেন্টার ফর প্রটেকশন অফ ন্যাশনাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার) এর নতুন এই অ্যাপ থিংক বিফোর ইউ লিংক প্রচারণার সর্বশেষ পদক্ষেপ। যুক্তরাজ্যের সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রী স্টিভ বার্কলে এসব ভুয়া প্রোফাইল বাণিজ্যিকভাবেই তৈরি হওয়ার কথা জানিয়েছেন। তিনি বলেন যে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অ্যাপ। নিজেদের এবং অন্যের তথ্য রক্ষা করতে যথাসাধ্য চেষ্টা করা হচ্ছে এই অ্যাপের মাধ্যেম। অনলাইনে কারো সঙ্গে পরিচিত হওয়ার আগে তাদের সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে। সেই ক্ষেত্রে, নতুন অ্যাপটি গুরুত্বপূর্ণ একটি টুল হিসেবে কাজ করবে।

ভবিষ্যতে ভুয়া প্রোফাইল শনাক্ত করা আরও কঠিন হতে পারে। কারণ এসব স্পাইয়েরা নতুন পরিচয় তৈরিতে এআই এবং শক্তিশালী ডিপ ফেক করতে পারে। স্পাইয়েরা ভুয়া পরিচয় তৈরিতে সাধারণত অন্যান্য সাইটের ছবি ব্যবহার করে। তাই, অন্যান্য সাইট থেকে ব্যবহৃত ছবি চিহ্নিত করতে, অ্যাপে একটি ইনবিল্ট ছবি সার্চের সুবিধা রয়েছে। মনোবিজ্ঞানীদের সহায়তায় নকশা করা এই অ্যাপটি বেশ কয়েকটি প্রশ্নের মাধ্যমে নির্ণয় করতে সাহায্য করে যে ব্যবহারকারীর সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাওয়া প্রোফাইল ভুয়া কি না। এসব পদ্ধতির মধ্যে রয়েছে মিথ্যে পরিচয়ের মাধ্যমে যোগাযোগ।

অথবা, এমন কোনো ভালো প্রস্তাবনা যেটি ভুল হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। অ্যাপটির ওয়েবসাইট অনুযায়ী, এই অ্যাপের মাধ্যমে ব্যবহারকারী বিভিন্ন পুরস্কার ও সার্টিফিকেট আয় করতে পারবেন, যা তাদের নিরাপত্তা দলের সঙ্গেও ভাগাভাগি করা যাবে।

সাবস্ক্রাইব করুন The Penguins Club খবরপত্রিকায়

প্রতি শুক্রবার বিশেষ খবর এবং আলোচনায় অংশগ্রহন করতে আপনার ইমেইল দিন।


Tagged:
About the Author

বিগত প্রযুক্তি বিষয়ক লেখালেখি করছি - বাংলা লেখিকা

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.