Reading Time: 2 minutes

সম্প্রতি ফেসবুক মূল প্রতিষ্ঠান মেটা বিশ্বের দ্রুততম এআই সুপার কম্পিউটার তৈরির দাবি করেছে। কয়েকমাস আগে ফেসবুক প্রতিষ্ঠানের নাম পরিবর্তন করে মেটা রাখা হয়েছিল। ফেসবুক প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ সোমবার নতুন এই সুপারকম্পিউটার মেটাভার্সের ভিত্তি তৈরিতে কাজ করার কথা জানান। সুপারকম্পিউটারগুলি অসম্ভব ক্ষমতাসম্পন্ন কম্পিউটার যেগুলো এমন সব জটিল হিসাব করার ক্ষমতা রাখে যা সাধারণ হোম কম্পিউটারে করা সম্ভব নয়। কম্পিউটারটি পুরোপুরি নির্মিত হলে এটি বিশ্বের দ্রুততম কম্পিউটার হবে বলেও সামাজিক মাধ্যম জায়ান্ট প্রতিষ্ঠানটি দাবি করেছে।

প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট সিনেট চলতি বছরের মাঝামাঝি সময়ে এর নির্মাণ সম্পূর্ণ হবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে। যদিও মেটা কম্পিউটারটি কোথায় অবস্থিত বা এটি তৈরি করতে কত খরচ হচ্ছে তা এখনো প্রকাশ করেনি। ফেসবুক আশা রাখছে যে রিসার্চ সুপারক্লাস্টার বা আরএসসি নামের এই সুপারকম্পিউটার প্রতিষ্ঠানটির এআই গবেষকদের নতুন এবং আরও উন্নত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মডেল তৈরি করতে সহায়তা করবে। সম্প্রতি চালু হলেও এর নির্মাণ এখনও শেষ হয়নি। মেটা বলছে যে সুপার কম্পিউটারটি তার এআই প্রশিক্ষণের জন্য নিজস্ব সিস্টেম থেকে বাস্তব-বিশ্বের উদাহরণ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করবে।

সুপারকম্পিউটারটি ট্রিলিয়ন সংখ্যক উদাহরণ থেকে শিখতে, একইসঙ্গে শত শত বিভিন্ন ভাষায় কাজ করতে এবং লেখা, ছবি এবং ভিডিও একসঙ্গে বিশ্লেষণ করতে পারে। মেটা যেভাবে এই সুপারকম্পিউটারের ক্ষমতা প্রকাশ করছে সেটি প্রচলিত এবং অপেক্ষাকৃত ক্ষমতাসম্পন্ন সুপারকম্পিউটারের ক্ষমতা পরিমাপ পদ্ধতির চেয়ে আলাদা। কার্নেগি মেলন বিশ্ববিদ্যালয়ের এআই সেন্টারের সহ-পরিচালক ও কম্পিউটার বিজ্ঞানের অধ্যাপক তুওমাস স্যান্ডহোম বলেন যে এই সিস্টেমটি নির্ভর করে এর গ্রাফিক্স-প্রসেসিং চিপের কার্যকারিতার ওপর এবং এর ফলে ছবি, লেখা ও ভাষা বোঝার ক্ষেত্রে এটি বাড়তি সুবিধা পাবে।

মেটাও প্রায় একই ধরনের আশা প্রকাশ করছে। এক ব্লগ পােস্টে প্রতিষ্ঠানটি বলেছে তারা আশা করছে যে আরএসসি তাদের সম্পূর্ণ নতুন এআই সিস্টেম তৈরি করতে সহায়তা করবে।

বিজ্ঞাপন (কেন?)

আগের উদ্যোগগুলোয় প্রতিষ্ঠানটি কেবল ওপেন-সোর্স এবং অন্যান্য মুক্ত ডেটাসেট ব্যবহার করেছিল। স্যান্ডহোম বলেন যে তারা প্রথমবারের মতো এআই গবেষণা কম্পিউটারে নিজেদের গ্রাহকের ডেটা রাখতে যাচ্ছে। এআই গবেষক এবং অ্যালগরিদমগুলোকে সেই সব ডেটায় অ্যাক্সেস দেওয়ার দৃষ্টিকোণ থেকে এটি সত্যিই একটি বড় পরিবর্তন হবে।

উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, অনেক মানুষের সমাবেশে এটি মুখে বলামাত্রই মৌখিক ভাষা অনুবাদের কাজ করতে পারে। এর ফলে, কোনো গবেষণা প্রকল্পে বিভিন্ন ভাষাভাষী গবেষকদের মধ্যে সহযোগিতা করতে পারে বা একসঙ্গে এআর গেইম খেলতে পারে। যদিও গত বছর থেকে এবছর পর্যন্ত ফেসবুক প্রতিষ্ঠান মেটা বিভিন্ন রকম আলোচনা ও সমালোচনার স্বীকার হয়েছে। ফেসবুকে বিভিন্ন রকম অভিযোগ আসা সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ তার যথাযথ পদক্ষেপ না নিয়ে বিষয়গুলো সম্পূর্ণ এড়িয়ে গিয়েছে। মেটাভার্স ভিআর তৈরি নিয়ে নানান রকম প্রতিশ্রুতি দিলেও ফেসবুক তার কিছুই এখনো করেনি।

সম্প্রতি ফেসবুক আসক্ত ১১ বছর বছর বয়সী এক বাচ্চার আত্নহত্যা বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছিল। আত্নহত্যার মূল হোতা হিসেবে মেটাকে তুলে ধরে বাচ্চার মা। মেটার ব্যাপারে অপ্রাপ্তবয়স্ক জিনিসপত্রের বিজ্ঞাপন সম্প্রচারের অভিযোগ করা হয়। অভিযোগটি পরবর্তীকালে আদালতে পৌঁছায়। আর এবারও মেটা এ বিষয়ে কোন মুখ খোলেনি। সেহেতু সুপারকম্পিউটার তৈরির ব্যাপারটি আদৌ উপযোগী এবং বাস্তব কিনা সেটিই এখন দেখার অপেক্ষায়।

সাবস্ক্রাইব করুন The Penguins Club খবরপত্রিকায়

প্রতি শুক্রবার বিশেষ খবর এবং আলোচনায় অংশগ্রহন করতে আপনার ইমেইল দিন।


Tagged:
About the Author

বিগত প্রযুক্তি বিষয়ক লেখালেখি করছি - বাংলা লেখিকা

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.