Reading Time: 2 minutes

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ডিজিটাল জায়ান্ট মেটার একের পর এক সমস্যা ঘটে চলছে। বিভিন্ন রকম অভিযোগ, শেয়ার ধ্বস, প্রতিযোগিতার ব্যর্থতার ফলে বর্তমানে মেটার খুব খারাপ সময় যাচ্ছে। এতদিন চুপ থেকে বিষয়টি নিয়ে এবার চিন্তিত ফেসবুক প্রতিষ্ঠানের জায়ান্ট মেটার প্রধান নির্বাহী মার্ক জাকারবার্গ। তিনি সামাজিক মাধ্যমের ডিজিটাল দুনিয়ায় নিজের আলাদা রাজত্ব গড়ে তুলেছেন। কিন্তু বর্তমানে ডিজিটাল মুদ্রাখাতে এই ঘটনা ঘটার আর সম্ভবনা নেই। সম্প্রতি ফেসবুক প্রতিষ্ঠান মেটার নিজস্ব ক্রিপ্টো মুদ্রা ডিয়েমের সময় ঘনিয়ে এসেছে।

ডিয়েম প্রধান নির্বাহী স্টুয়ার্ট লেভি এক সংবাদ বিবৃতিতে জানিয়েছেন প্রকল্পটি যে আর সামনে এগোতে পারবে না সরকারি পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা থেকে সেটি পরিষ্কার হওয়ার পরই সম্পদ বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সোমবার দ্যা ডিয়েম অ্যাসোসিয়েশন নিজেদের সব সম্পদ প্রায় ২০ কোটি ডলারের বিনিময়ে বিক্রি করে দেওয়ার খবর জানিয়েছে। মেটার ক্রিপ্টোকারেন্সি প্রকল্প ডিয়েম একাধিক রিব্র্যান্ডিং, কংগ্রেস শুনানী আর গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের প্রস্থানের পর হাল ছেড়ে দিয়েছে। প্রকল্পটির সব সম্পদ ক্রিপ্টোকারেন্সিমুখী ব্যাংক সিলভারগেট এর কাছে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে।

ডিয়েম অ্যাসোসিয়েশন যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রা মানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে একটি স্টেবল কয়েন প্রচলনের লক্ষ্যে ওই ব্যাংকটির সঙ্গেই কাজ করছিল। দিন শেষে মেটার দুর্নাম ডিজিটাল মুদ্রাটির জন্য কাল হয়ে দাঁড়ালেও ডিয়েম-এর লেনদেন ব্যবস্থা অন্যান্য স্টেবলকয়েনের তুলনায় স্বচ্ছ এবং বাজার পর্যবেক্ষকদের নজরদারির উপযোগী ছিল বলে সাইটটি জানিয়েছে। কিন্তু প্রকল্পটি শীর্ষ কর্মকর্তাদের প্রায় সবাই একে একে মেটা থেকে সরে আসায় ডিজিটাল মুদ্রাটির ফিরে আসার সম্ভাবণা একেবারেই ক্ষীণ বলে জানিয়েছে ভার্জ। প্রযুক্তিভিত্তিক সাইট ভার্জ মেটা’র ডিয়েম অধ্যায়ের অবসান হলেও সিলভারগেট বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান প্রকল্পটিকে পুনরুজ্জীবিত করতে পারে বলে জানিয়েছে।

ডিয়েম অধ্যায়ের অবসান এমন একটি চেষ্টার উপসংহার টানলো যা শুরু থেকেই ব্যর্থ হওয়ার পথে ছিল। লেনদেন ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণের জন্য মেটা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জোট বেঁধে লিব্রা অ্যাসোসিয়েশন বানিয়েছিল। মেটা তাদের নিজস্ব ক্রিপ্টো টোকেন লেনদেনের মূল মাধ্যম হিসেবে ব্যবহারের লক্ষ্য নিয়ে ক্রিপ্টো মুদ্রা লেনদেনের অ্যাপ বানিয়েছিল। প্রতিষ্ঠানটি লেনদেন ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণের জন্য অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জোট বেঁধে লিব্রা অ্যাসোসিয়েশন বানিয়েছিল। সোশাল মিডিয়া জায়ান্ট মেটা পরবর্তীতে লিব্রা নামটি পরিবর্তন করে ডিয়েম নামকরণ করেছিল।

কিন্তু বিতর্কিত হওয়া এই প্রযুক্তি জায়ান্টকে সংশ্লিষ্টরা লিব্রা আরো ক্ষমতার অধিকারী করে তুলবে বলে শুরু থেকেই আশঙ্কা করছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ নভেম্বর মাসেই বলেছিল যে তারা স্টেবলকয়েন মূল ধারার ব্যাংকের মতো নিয়ন্ত্রিত হওয়া উচিত বলে মনে করেন। অন্যদিকে খবর রটেছে যে হোয়াইট হাউজ সরকারি সংস্থাগুলোকে ক্রিপ্টো মুদ্রা বাজারকে জাতীয় নিরাপত্তার বিষয় হিসেবে বিবেচনা করে নিয়ন্ত্রণে রাখতে বলার পরিকল্পনা করেছে। বাজারে লিব্রার অভিষেকের সময় স্টেবলকয়েন এর ধারণাটি একেবারেই নতুন ছিল।

তাই শুরুতে এই ডিজিটাল মুদ্রাগুলো নিয়ে মাথা ঘামাননি বাজার পর্যবেক্ষকরা। স্টেবল কয়েনে নিয়মিত লেনদেন নিশ্চিত করতে এবং মূল্য স্থিতিশীল রাখতে মূল ধারার আর্থিক ব্যবস্থায় প্রচলিত মুদ্রার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মান নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু পর্যবেক্ষণ সংস্থাগুলোর ২০১৯ সাল থেকে স্টেবলকয়েন বাজারের পরিধি বাড়তে থাকায় এর উপর নজরদারি বেড়েছে।

সাবস্ক্রাইব করুন The Penguins Club খবরপত্রিকায়

প্রতি শুক্রবার বিশেষ খবর এবং আলোচনায় অংশগ্রহন করতে আপনার ইমেইল দিন।


Tagged:
About the Author

বিগত প্রযুক্তি বিষয়ক লেখালেখি করছি - বাংলা লেখিকা

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.