সম্প্রতি অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোসের বিরুদ্ধে এবার তারই একজন গৃহকর্মী মামলা করেছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই সপ্তাহে সিয়াটল শহরে অ্যামাজন প্রতিষ্ঠাতা ও তার সম্পদের দেখভাল করা দুটি কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করেন মার্সেডিস ওয়েদা নামক জেফ বেজোসের সাবেক গৃহকর্মী। উক্ত কর্মীর দায়ের করা মামলা অনুযায়ী, তাকে ও সেখানকার অন্যান্য কর্মীকে অনিরাপদ ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কাজ করতে বাধ্য করা হয়েছে।
পাশাপাশি, বাথরুমে যেতে হলে লন্ড্রি রুমের জানালা টপকে যেতে হয় এমন এক অভিযোগও তুলেছেন তিনি। মার্সেডিস এর অন্যান্য অভিযোগের মধ্যে রয়েছে-
- গৃহকর্মীদের বিশ্রামের কোনো জায়গা নেই।
- কখনও কখনও খাবার খেতে হয়েছে লন্ড্রি রুমে।
- বর্ণ বৈষম্যের শিকার হতেন স্প্যানিশভাষী কর্মীরা।
অনথিভুক্ত কর্মীদের চুক্তিভিত্তিক আনা, বিশ্রামের অভাব ও অনিরাপদ কাজের পরিবেশ নিয়ে মালিকপক্ষের কাছে অভিযোগ করেছেন তিনি। অভিযোগ বলছে, ২০১৯ সালে গৃহকর্মীর ভূমিকায় মার্সেডিস ওয়েদা নিয়োগ পান বাসিন্দাদের দৃষ্টির আড়ালে থেকে পরিবারের জন্য কাজ করার শর্তে। কখনও কখনও তার কাজের সময় ১৪ ঘন্টা পর্যন্ত দীর্ঘ হতো, সেটিও কোনো বিরতি ছাড়া। এর মধ্যে এমন সময়ও এসেছে, যখন গৃহকর্মীদের যাওয়ার মতো কোনো টয়লেটও ছিল না।
উক্ত অভিযোগে উল্লেখ আছে, টয়লেটে যাওয়ার এই বিড়ম্বনায় দিনের বেশিরভাগ সময় টয়লেট ব্যবহার করতে পারতেন না তিনি ও অন্যান্য গৃহকর্মী। এর ফলে, ইউটিআই বা মুত্রথলির সংক্রমণে বার বার আক্রান্ত হয়েছেন তিনি। জেফের পরিবার বাসায় অবস্থানকালে গৃহকর্মীরা কেবল পরিচ্ছন্নতার কাজে বাড়িতে প্রবেশের অনুমতি পেতেন। এর মানে, টয়লেটে যেতে হলে লন্ড্রি রুমের দরজা ব্যবহার করতে পারতেন না তারা। কারণ, এটি ছিল বাড়ির ভেতর যাওয়ার পথ।
ফলে, কখনও কখনও লন্ড্রিরুমের জানালা টপকে নামতেন তিনি, যেখান থেকে যাওয়া যায় মেকানিকাল রুম ও নিচতলায় বাথরুমে। মার্সেডিসের দাবি, এমন পরিস্থিতিতে তিনি ছিলেন প্রায় দেড় বছর। অভিযোগে উল্লেখ আছে, টয়লেটে যাওয়ার এই বিড়ম্বনায় দিনের বেশিরভাগ সময় টয়লেট ব্যবহার করতে পারতেন না তিনি ও অন্যান্য গৃহকর্মী। এর ফলে, ইউটিআই বা মুত্রথলির সংক্রমণে বার বার আক্রান্ত হয়েছেন তিনি। জেফ পক্ষের আইনজীবি হ্যারি করেল বলেন, বছরে লাখ ডলারের বেশি বেতন পাওয়া মার্সেডিস ছিলেন গৃহকর্মীদের দলনেতা।
মার্সেডিস এর অভিযোগ অযৌক্তিক। কাজ ছাড়ার সময় তার দাবি করা ৯০ লাখ ডলার পেতে ব্যর্থ হয়েই মামলা করেছেন তিনি। অন্যদিকে, মার্সেডিস এর আইনজীবি প্যাট্রিক ম্যাকগুইগান বলেছেন, “তার মক্কেল সারা জীবন কঠোর পরিশ্রম করেছেন। তিনি একজন বিশ্বাসযোগ্য ব্যক্তি ও বিভিন্ন প্রমাণ তার দাবিকে সমর্থন করে।” কাজের পারফর্মেন্স নিয়ে কখনও শাস্তি না পেলেও এই অভিযোগের কারণে তাকে পদাবনতি ঘটানো হয়েছে, যদিও তার কাজ নিয়ে কখনোই কোনো প্রশ্ন ওঠেনি।
এসব অভিযোগের বিপরীতে ক্ষতিপূরণ চাইতে মার্সেডিস হাজির হয়েছেন আদালতে।