Reading Time: 2 minutes

সম্প্রতি আরো একটি মামলা হতে যাচ্ছে টেসলা নিয়ে। ক্লাস অ্যাকশন মামলা হচ্ছে বিদ্যুচ্চালিত গাড়ি নির্মাতা টেসলার বিরুদ্ধে। রয়টার্স জানিয়েছে, স্যান ফ্রান্সিসকোর ফেডারেল আদালতে বুধবার টেসলার বিরুদ্ধে ক্লাস অ্যাকশন মামলার আবেদন করা হয়েছে। অটোপাইলট ও ফুল সেলফ-ড্রাইভিং বা এফএসডি ফিচারের নামে ভুয়া বিজ্ঞাপনী প্রচারণায় কোম্পানিটি জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করছে বলে মামলায় অভিযোগ করেছেন চালকরা।

ক্লাস-অ্যাকশন এমন একটি মামলা যেখানে বাদীপক্ষ একজন হলেও তিনি একই ধরনের ঘটনার শিকার অনেকের প্রতিনিধিত্ব করেন ও বাদী জয়ী হলে মামলার রায় ভুক্তভোগী সবার জন্যই প্রযোজ্য হয়। আবেদনে বাদীপক্ষ অভিযোগ করে যে ২০১৬ সাল থেকে প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক এবং টেসলা নিজস্ব প্রযুক্তিকে সম্পূর্ণ কার্যক্ষম অথবা খুব শিগগিরি আসছে বলে বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চালিয়ে আসছেন, যেখানে তারা জানতেন যে তাদের প্রযুক্তি সম্পূর্ণ কার্যক্ষম তো নয়ই, বরং যানবাহনকে অনিরাপদ করে তুলছে।

ক্লাস অ্যাকশন মামলাটিতে ২০১৬ সালের পর থেকে যারা টেসলার অটোপাইলট, এনহ্যান্সড অটোপাইলট এবং ফুল সেলফ-ড্রাউভিং ফিচারবাহী গাড়ি কিনেছেন বা ভাড়া নিয়েছেন, তাদের সকলের পক্ষে ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। মামলার আবেদনের মূল বাদী ব্রিগস মাটসকো আরও বলেছেন যে টেসলা নিজের গাড়ির প্রচারণা নিয়ে ব্যাপক সাড়া পেতে এ কাজটি করেছে এবং এর মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করে, বিক্রি বাড়িয়ে, দেউলিয়া হওয়া এড়িয়ে এবং শেয়ারের দাম বাড়িয়ে বিদ্যুচ্চালিত গাড়ি শিল্পে নিজেদের সবচেয়ে প্রভাবশালী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে।

পুরোপুরি স্বচালিত গাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে টেসলা এখনও পুরোপুরিভাবে তৈরি নয়, সফলতা তো দূরের কথা বলে মন্তব্য করেছেন মাটসকো। অন্যদিকে, বিজ্ঞাপনী প্রচারণায় টেসলা দাবি করে আসছে, দিক নিয়ন্ত্রণ, গতি বাড়ানো এবং নিজের লেনেই ব্রেক করতে সক্ষম অটোপাইলট প্রযুক্তি। আর ট্রাফিক সিগনালের পরিবর্তন মেনে চলার আর লেন পরিবর্তনের সক্ষমতা আছে এফএসডি ফিচারের। তবে, টেসলা আরও বলে আসছে যে উভয় প্রযুক্তির ক্ষেত্রে একজন চালকের সক্রিয় অংশগ্রহণ সবসময়ই প্রয়োজন।

বিজ্ঞাপন (কেন?)

সাথে ফিচারগুলো চালু থাকা অবস্থাতেও ড্রাইভিং হুইলে হাত থাকতে হবে চালকের। ফিচারগুলো গাড়িকে স্বয়ক্রিয় করে না, এমনটাও বলে আসছে টেসলা। আর মামলা প্রসঙ্গে টেসলার প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়েও তাৎক্ষণিক কোনো উত্তর পায়নি রয়টার্স। ২০২০ সালেই কোম্পানির জনসংযোগ বিভাগ ভেঙে দিয়েছে কোম্পানিটি। ২৮ জুলাই ক্যালিফোর্নিয়ার ডিপার্টমেন্ট অফ মোটর ভেহিকল বা ডিএমভি আনুষ্ঠানিকভাবে টেসলার বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ আনার পর ক্লাস অ্যাকশন মামলার মুখে পড়ল টেসলা।

ডিএমভির অভিযোগ বলছে, নিজস্ব অ্যাডভান্সড অ্যাসিস্ট্যান্স সিস্টেমস বা এডিএএস এর সক্ষমতা নিয়ে বাড়িয়ে বলছে টেসলা। ক্যালিফোর্নিয়ার ডিএমভির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অঙ্গরাজ্যটিতে টেসলার লাইসেন্সও বাতিল হতে পারে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। ২০১৬ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ৩৮টি টেসলা গাড়ির দুর্ঘটনা নিয়ে তদন্ত করে দেখেছে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ন্যাশনাল হাইওয়ে ট্রাফিক সেইফটি অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’। এর প্রতিটি ঘটনাতেই টেসলার এডিএএস প্রযুক্তি জড়িত ছিল। ওই দুর্ঘটনাগুলোতে প্রাণ হারিয়েছেন ১৯ জন।

রয়টার্স জানিয়েছে, ২০১৮ সালের টেসলা মডেল এক্স গাড়িটির জন্য পাঁচ হাজার ডলার প্রিমিয়াম দিয়ে এনহ্যান্সড অটোপাইলট ফিচার কিনেছিলেন ক্যালিফোর্নিয়ার র‌্যাঞ্চো মুয়ের্তোর বাসিন্দা ব্রিগস মাটসকো। ভুক্তভোগী এই ক্রেতা আরও অভিযোগ করেছেন, যে চালকরা সফটওয়্যার আপডেট পাচ্ছেন তারা কার্যত প্রশিক্ষণহীন টেস্ট ইঞ্জিনিয়ার এর ভূমিকা পালন করছেন এবং নানা অপ্রত্যাশিত জটিলতার মুখে পড়ছেন। বিপরীত দিক থেকে আসার গাড়ির দিকে ধেয়ে যাওয়া, রেড লাইটে গাড়ি ঘুরে যাওয়া এবং সময় মতো বাঁক না নেওয়ার মতো বিপজ্জনক পরিস্থিতিতেও পড়েছেন ভুক্তভোগীরা।

সাবস্ক্রাইব করুন The Penguins Club খবরপত্রিকায়

প্রতি শুক্রবার বিশেষ খবর এবং আলোচনায় অংশগ্রহন করতে আপনার ইমেইল দিন।


Tagged:
About the Author

বিগত প্রযুক্তি বিষয়ক লেখালেখি করছি - বাংলা লেখিকা

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.