Reading Time: 2 minutes

টেক্সাসের হ্যারিসন কাউন্টি ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে সোমবার ফেসবুকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। দায়ের করা মামলায় উল্লেখ রয়েছে যে ফেসবুকের ফেসবুক ফটো-ট্যাগিং ফিচারটি ফেসিয়াল রিকগনিশন ডেটা সংগ্রহ করার আগে টেক্সাসের বাসিন্দাদের বিষয়টি জানিয়ে তাদের থেকে কোন অনুমতি নেয়নি। ফেসবুক অবৈধভাবে প্রায় দশ বছর ধরে লাখ লাখ টেক্সাস বাসিন্দার ফেসিয়াল রিকগনিশন ডেটা সংগ্রহ করেছে। আর এর প্রতিকার চেয়ে মার্কিন অঙ্গরাজ্যটি আদালতে উপস্থিত হয়েছে। মামলার জবাবে মেটার একজন নির্বাহী মামলার দাবিকে ভিত্তিহীন বলে দাবি করে নিজেদেরকে জোরালোভাবে রক্ষা করার কথা বলেন।

এক প্রতিবেদনে সিএনএন উল্লেখ করে যে ফেসবুক এই পদ্ধতিতে ব্যবহারকারী অথবা যারা ফেসবুক ব্যবহারকারী নন, তাদের ছবির চেহারাও বিশ্লেষণ করেছে এবং ফেসবুক ব্যবহারকারীদের বিভিন্ন ব্যক্তিকে ট্যাগ করার সুপারিশ করেছে। মামলায় অভিযোগে বলা হয়েছে যে ২০১০ সাল থেকে ২০১১ সালের জুন পর্যন্ত ফেসবুক গোপনে লাখ লাখ টেক্সাসবাসীকে তাদের অনুমতি ছাড়াই ফেসিয়াল রিকগনিশন স্কিমে বাধ্য করেছে। এই ফিচারের আওতায় ফেসবুক ব্যবহারকারী নন এমন ব্যক্তিদেরও চেহারাও বিভিন্ন ছবি থেকে ফেসবুক শনাক্ত করেছে এবং বায়োমেট্রিক ডেটা সংগ্রহ করেছে।

এর ফলে, পরবর্তী ১০ বছরে ফেসবুকে আপলোড করা ছবি থেকে টেক্সাসের লাখ লাখ অধিবাসীর মুখের জ্যামিতির রেকর্ড ফেসবুক ক্যাপচার করেছে এবং মামলার অভিযোগ উঠেছে ফেসবুক টেক্সাসের আইনের অধীনে গোপনীয়তা লঙ্ঘন করেছে। মামলায় আদালতের কাছে রাজ্যের বায়োমেট্রিক আইন লঙ্ঘনের জন্য মেটাকে প্রতিটি লঙ্ঘনের জন্য ২৫ হাজার ডলার এবং টেক্সাসের ভোক্তা সুরক্ষা আইন প্রতিবার লঙ্ঘনের জন্য ১০ হাজার ডলার জরিমানা করার ঘোষণা জানানো হয়েছে। প্যাক্সটন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন যে তিনি শত শত কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ চাইছেন।

টেক্সাসের অ্যাটর্নি জেনারেল কেন প্যাক্সটনের সোমবার দায়ের করা মামলা অনুযায়ী ফেসবুক ইতিমধ্যে রাজ্যের ভোক্তা সুরক্ষা এবং বায়োমেট্রিক ডেটা গোপনীয়তা আইন লঙ্ঘন করে কোটি কোটি বার বায়োমেট্রিক তথ্য সংগ্রহ করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় অঙ্গরাজ্যে ফেসিয়াল রিকগনিশন বিষয়ে একটি ক্লাস-অ্যাকশন মামলা ৬৫ কোটি ডলারে নিষ্পত্তি করার কয়েক মাস পর ২০২১ সালের নভেম্বরে ফেসবুক জানায় যে তারা ফিচারটি বন্ধ করে দেবে। ফেসবুক সেই সময়ে এ পদ্ধতিতে সংগ্রহ করা প্রায় ৬০ কোটি ব্যবহারকারীর তথ্যও মুছে ফেলার প্রতিশ্রুতি দেয়। 

বিজ্ঞাপন (কেন?)

২০০৯ সালে টেক্সাস ক্যাপচার অর ইউজ অফ বায়োমেট্রিক আইডেন্টিফায়ারের আইন নামে বায়োমেট্রিক ডেটা আইন পাস করে। যদিও ফেসবুক ফেসিয়াল রিকগনিশন প্রোগ্রাম স্থগিত করেছে, তবে মামলা প্রসঙ্গে মেটা বলছে যে তাদের অধীন ইনস্টাগ্রাম, হোয়াটসঅ্যাপ, ফেইসবুক রিয়েলিটি ল্যাবস বা তার আসন্ন ভার্চুয়াল-রিয়েলিটি মেটাভার্সের মতো অন্য কোনও প্ল্যাটফর্ম বা ক্রিয়াকলাপের ক্ষেত্রে এই ধরনের কোনও প্রতিশ্রুতি দেয়নি। এর আগেও ব্যবহারকারীর অনুমতি ছাড়া ফেস রিকগনাইজের জন্য আরো অসংখ্যবার সমালোচিত হয়েছে ফেসবুক।

ফেসবুকের ট্যাগ অনুমতি নেয়ার ফিচারটি বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। যদিও ফেসবুকের এখন একের পর এক ঝামেলার মুখে পড়তে হচ্ছে। বিভিন্ন কারনে মেটা প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন রকম আলোচনা সমালোচনার মুখে পড়ছে। মেটার সাবেক কর্মী প্রতিষ্ঠানের ভেতরকার কূকীর্তি ফাঁস করার পর থেকে একের পর এক কুকর্ম বেড়িয়ে এসেছে মেটা সম্পর্কে। বিনা অনুমতিতে ব্যবহারকারীর ডেটা ও ছবি সংগ্রহ রাখাসহ, ট্র‍্যাকিং, ফিশিং এর মাধ্যমে অবৈধভাবে অনেক মুনাফা আত্নসাত করছে। ব্যবহারকারীদের ট্র‍্যাকিং এর উদ্দেশ্যে মেটা বিভিন্ন রকম গোয়েন্দা সংস্থাদের সাথে সম্পর্ক রেখেছে।

এছাড়াও মেটাভার্স প্রজেক্টের প্রতিশ্রুতি বিষয়েও ফেসবুক ব্যাপক সমালোচিত হয়েছে। ভ্যাক্সিন নিয়ে মিথ্যা গুজব, বৈষম্যে ইত্যাদি বিষয়েও মেটার উপরে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। মেটার অপ্রাপ্তবয়ষ্কদের জন্য বিজ্ঞাপন প্রচারের ফলে ১১ বছর বছর বয়সী এক শিশুর আত্নহত্যার কারনে মামলার মুখে পড়েছে। এতকিছুর পরেও মেটার প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহীরা বিষয়গুলো এড়িয়ে গিয়েছে শুধুমাত্র মুনাফা অর্জনের লোভে। বেশ কিছুদিন আগে ফেসবুকের ব্যাপক দরপতনের ফলে এর ব্যবহারকারীর সংখ্যা বিপুল সংখ্যক পরিমাণে কমেছে।

সাবস্ক্রাইব করুন The Penguins Club খবরপত্রিকায়

প্রতি শুক্রবার বিশেষ খবর এবং আলোচনায় অংশগ্রহন করতে আপনার ইমেইল দিন।


Tagged:
About the Author

বিগত প্রযুক্তি বিষয়ক লেখালেখি করছি - বাংলা লেখিকা

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.