জার্মানিতে করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন বিরোধী প্রচারণায় ব্যবহারের জের ধরে টেলিগ্রাম অ্যাপটির উপর অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। ভ্যাকসিন বিরোধীর ষড়যন্ত্র তাত্ত্বিকরা ভ্যাকসিন বিরোধী নানা কন্টেন্ট আদান-প্রদান এবং জনসমক্ষে প্রতিবাদ সংগঠনের কাজে অ্যাপটি ব্যবহার করছেন। এর ফলে জার্মানির এক রাজনীতিবিদ উগ্রপন্থী কন্টেন্ট ট্র্যাক করতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা না করলে মেসেজিং অ্যাপ ‘টেলিগ্রাম’ অ্যাপল ও গুগলের অ্যাপস্টোর থেকে সরিয়ে দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন। কিন্তু টেলিগ্রাম কর্তৃপক্ষ বলছে ‘সরকারি সেন্সরশিপের’ সামনে তারা মাথা নত করতে চান না।
ফেসবুকের মতো অন্যান্য প্ল্যাটফর্মগুলো বিভিন্ন দেশের সরকারের চাপের মুখে বিদ্বেষপূর্ণ বক্তব্য, মিথ্যাচার ও ষড়যন্ত্র তত্ত্ব মোকাবেলায় প্রতিবাদ গড়ে তোলায় টেলিগ্রামের জনপ্রিয়তা বেড়েছে। অধিকারকর্মী আর প্রতিবাদকারীদের অ্যাপটির অন্যরকম জনপ্রিয়তা রয়েছে। লোয়ার স্যাক্সনির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বোরিস পিস্টোরিয়া বলছেন যে টেলিগ্রামের গ্রুপ ও চ্যানেলগুলোতে যা হচ্ছে তা অ্যাপল ও গুগলের নীতিমালা লঙ্ঘন করে, তারাই নিজেদের স্টোরে অ্যাপটি রেখেছে। তিনি আরো বলেন যে জরুরীভিত্তিতে তাদের সঙ্গে কথা বলবেন এবং টেলিগ্রাম বাজারজাতকরণ বন্ধ করতে তাদের রাজি করাবেন।
নভেম্বর মাসেই স্যাক্সনির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসস্থানের সামনে একদল প্রতিবাদকারী মশাল জ্বালিয়ে হাজির হয়েছিলেন। রয়টার্স বলছে যে উক্ত ঘটনাকে স্বরাস্ট্রমন্ত্রীর প্রতি সহিংসতার হুমকি হিসেবেই বিবেচনা করা হচ্ছে। টেলিগ্রাম বাজারজাত বন্ধ করার কথা উঠলেও এই ব্যাপারে টেলিগ্রাম কর্তৃপক্ষ রয়টার্সকে তাৎক্ষণিক কোনো কিছু জানায়নি। প্ল্যাটফর্মে উগ্রপন্থী কন্টেন্টের উপস্থিতি থাকলে সে বিষয়ে দ্রুত পদেক্ষেপ নিতে বাধ্য প্রতিষ্ঠানগুলো। জার্মানিতে যেকোন সামাজিক মাধ্যমের বেলায় বিশ্বের সবচেয়ে কঠোর বেশ কয়েকটি নীতিমালা রয়েছে।
টেলিগ্রাম কর্তৃপক্ষ মূল ধারার সামাজিক মাধ্যমের বিকল্প হিসেবে নিজস্ব অ্যাপ বাজারজাত করে আসছে। বেলারুশ এবং রাশিয়ার মতো দেশগুলোতে কর্তৃত্ববাদী সরকার বিরোধী অধিকারকর্মীদের কাছেও অ্যাপটির জনপ্রিয়তা আছে। অ্যাপটির নিজস্ব সাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী শুরুটা সেইন্ট পিটার্সবার্গে হলেও প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে দুবাই থেকে পরিচালিত হচ্ছে। জার্মানীর বিচার মন্ত্রণালয় থেকে উগ্রপন্থী কন্টেন্টের লেখকদের চিহ্নিত করতে একাধিকবার সাহায্যের আবেদন পেলেও টেলিগ্রাম টিম তাতে সারা দেয়নি। এ ব্যাপারে টেলিগ্রাম টিম জার্মান সরকারকে কোন সহযোগিতা করছেনা বলে দাবি করা হচ্ছে।