ইতালির শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো গোপনীয়তা ও নিরাপত্তা বিষয়ের জের ধরে সম্প্রতি কয়েকটি কেলেঙ্কারীর ঘটনায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বাজার পর্যবেক্ষক ও নিয়ন্ত্রকদের সমালোচনা ও অনুসন্ধানের মুখে পড়ছে। সেই সাথে অ্যামাজন প্রতিষ্ঠানটি ইতালির বাজার পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে কড়াকড়িভাবে দ্বিমত পোষণ করে তাদের বিরুদ্ধে জরিমানা আপিল করার কথা জানিয়েছে। কিছু প্রতিষ্ঠান বাজারে নিজেদের দক্ষতার অপব্যবহার করে প্রতিযোগিতাবিমুখ কর্মকাণ্ডে জরিয়ে পড়ছে এমন অভিযোগও উঠেছে।
ইতালির বাজার পর্যবেক্ষক সংস্থা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে যে অ্যামাজন ইতালির বাজারে নিজের দৃঢ় অবস্থান ব্যবহার করে অ্যামাজন ডটআইটি-তে উপস্থিত বিক্রেতাদের নিজস্ব লজিস্টিক সেবা ‘ফুলফিলমেন্ট বাই অ্যামাজন’ ব্যবহারে বাধ্য করেছে। রয়টার্স জানায় যে সাম্প্রতিক সময়ে অ্যামাজনের পাশাপাশি ইউরোপের বাজারে অ্যালফাবেট ইনকর্পোরেটেড’র গুগল, ফেইসবুক ইনকর্পোরেটেড, অ্যাপল ইনকর্পোরেটেড এবং মাইক্রোসফট কর্পোরেশনের মতো শীর্ষ প্রতিষ্ঠানগুলো সমালোচনা ও অনুসন্ধানের মুখে পড়েছে।
অ্যামাজন তাদের আইটিতে পণ্যের প্রচারণা এবং বিক্রি বাড়াতে প্রাইম লেবেল এর মতো নানা বাড়তি সুবিধা দিতো। বাজার পর্যবেক্ষক সংস্থাটি এটিও বলছে যে এফবিএ-র সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা না থাকলে অ্যামাজন তৃতীয়-পক্ষীয় বিক্রেতাদের ‘প্রাইম’ লেবেলের সঙ্গে সংযুক্ত হতে দিত না। এছাড়াও অ্যামাজন এফবিএ (ফুলফিলমেন্ট বাই অ্যামাজন) ব্যবহারের জন্য বিক্রেতাদের অতিরিক্ত আন্তরিকতা এবং অপ্রয়োজনীয় খাতিরদারি করতো। ইতালির অ্যান্টিট্রাস্ট কর্তৃপক্ষ বলছে যে তারা অ্যামাজনের উপর সংশোধনমূলক নির্দেশনা আরোপ করবে।
যদিও অ্যামাজন বলছে যে এফবিএ সম্পূর্ণ ঐচ্ছিক একটি সেবা এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তৃতীয়-পক্ষীয় বিক্রেতা এটি ব্যবহার করেন না। রয়টার্স জানায় ‘প্রাইম’ লেবেল থাকলে অ্যামাজন আইটিতে ৭০ লাখেরও বেশি অ্যামাজন লয়্যালটি প্রোগ্রাম ক্রেতার কাছে বিক্রেতাদের জন্য পণ্য তুলে ধরা ও বিক্রি সহজ হয়। এই ক্রেতাদের প্রায় সবাই সাইটটিতে তুলনামূলকভাবে বেশিই অর্থ ব্যয় করেন। অ্যামাজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে ইউরোপিয়ান কম্পিটিশন নেটওয়ার্ক অবকাঠামোর মধ্যে থেকেই ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ) কমিশন ইতালির অ্যান্ট্রিটাস্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কাজ করেছে।
রয়টার্স জানিয়েছে যে নিজস্ব তদন্তের সঙ্গে ইতালিয়ান কর্তৃপক্ষের তদন্তের সামঞ্জস্য রাখতে সংস্থাটি এ কাজ করেছে। অ্যামাজনের ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ড নিয়ে ইইউ কমিশন আলাদা দুটি তদন্ত চালাচ্ছে। ২০১৯ সালের জুলাই মাসে ইইউ কমিশনের প্রথম তদন্তটি শুরু হয়। ওই তদন্তের মাধ্যমে অ্যামাজন স্বাধীন বিক্রেতাদের সেন্সিসিটিভ ডেটা সংগ্রহ করে যেভাবে ব্যবহার করে তা ইউরোপের বাজার প্রতিযোগিতা নীতিমালার সাথে যায় কি না সে ব্যাপারে সংস্থাটি তদন্ত করে দেখছে। এরপর ২০২০ সালের শেষের দিকে দ্বিতীয় তদন্তটি শুরু হয়।
এই তদন্তের মাধ্যমে অ্যামাজনের নিজস্ব বিক্রয় প্রস্তাব এবং যে বিক্রেতারা অ্যামাজনের নিজস্ব সরবরাহ করা সেবা ব্যবহার করে, তাদের পক্ষপাতমূলক সুবিধা দেওয়া হচ্ছে কি না সেটি যাচাই করে দেখা হচ্ছে।