Reading Time: 2 minutes

২৫টি শীর্ষ কর্পোরেশনের ওপর চালানো এক গবেষণায় বিশ্বের বড় প্রতিষ্ঠানগুলো জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় নিজস্ব লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হচ্ছে বলে উঠে এসেছে। বিবিসি এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করে যে পরিবেশবান্ধব পণ্যের চাহিদা দিনদিন বাড়ার ফলে প্রতিষ্ঠানগুলো নিজ নিজ পরিবেশগত প্রভাব হ্রাস করার প্রশ্নে চাপের মধ্যে রয়েছে। অলাভজনক সংস্থা নিউ ক্লাইমেট ইনস্টিটিউট এবং কার্বন মার্কেট ওয়াচ গবেষণাটি পরিচালনা করেছে। নিউ ক্লাইমেট ইনস্টিটিউটের প্রতিবেদনে কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিনিয়তই তাদের অগ্রগতি সম্পর্কে ভুল তথ্য প্রচার করে বলে উল্লেখ রয়েছে।

গবেষণায় গুগল, অ্যামাজন, আইকিয়া, অ্যাপল এবং নেসলের মতো প্রতিষ্ঠান সুসম্মত পরিবর্তন আনতে ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ এসেছে। গবেষণা প্রতিবেদনের লেখক টমাস ডে বিবিসিকে বলেন যে তার দল মূলত কর্পোরেট জগতে উন্নত অনুশীলনের খোঁজ করছিলেন। কিন্তু তারা সোজা কথায় বলতে গেলে প্রতিষ্ঠানগুলোর দাবির সামগ্রিক সততার প্রশ্নে অবাক এবং হতাশ দুটোই হয়েছেন। এর জবাবে বার অ্যামাজন বলছে তাদের লক্ষ্য উচ্চাভিলাষী, কারণ তারা জানেন যে জলবায়ু পরিবর্তন একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ এবং আগের তুলনায় এখন আরও বেশি উদ্যোগ নেওয়া উচিত।

২০৪০ সালের মধ্যে শতকরা শূন্য ভাগ কার্বনে পৌঁছানোর অংশ হিসেবে ২০২৫ সালের মধ্যে শতকরা একশ’ ভাগ নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহার করার পথে রয়েছে বলে জানিয়েছে অ্যামাজন। তালিকায় থাকা ২৫টি প্রতিষ্ঠানের কয়েকটি বিবিসির প্রতিবেদন প্রসঙ্গে বলেছে যে তারা এই গবেষণায় ব্যবহৃত কিছু পদ্ধতির সঙ্গে একমত নয়, তবে তারা জলবায়ু পরিবর্তন রোধে পদক্ষেপ নিতে সর্বোপরি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এই ২৫ টি প্রতিষ্ঠান বিশ্বব্যাপী যে গ্রিনহাউস-গ্যাস নির্গমন ঘটে, তার শতকরা পাঁচ ভাগের জন্য দায়ী। এর মানে দাঁড়ায়, এদের বিশাল কার্বন ফুটপ্রিন্ট রয়েছে এবং পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তন ঠেকানোয় নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের আরও কাজ করার যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন যে বিশ্বব্যাপী জলবায়ুর গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি থামাতে হলে অবশ্যই কার্বন নিঃসরণ ২০৫০ সালের মধ্যে শূন্যে নামিয়ে আনতে হবে। সহজ ভাষায় এটিকে জিরো নেট বলা হয়ে থাকে। বিশ্বে কার্বনের পরিমাণ বেড়েই চলছে প্রতিনিয়ত। যা পৃথিবীতে বেঁচে থাকা কিংবা খাপ খাইয়ে চলা সকল প্রানীর জন্য হুমকি স্বরূপ। বিজ্ঞানীদের মতে তাপমাত্রা বৃদ্ধি থামাতে বিশ্বে কার্বন নেট-জিরোতে আনলে যতোটা সম্ভব নির্গমন হ্রাস করা এবং যে কার্বন বাতাসে মেশে সেটুকু অপসারণ করে ভারসাম্য বজায় রাখার ব্যাপারে বিশেষভাবে জোর দিতে হবে। এ হিসেব থেকেই প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের নিজস্ব লক্ষ্য নির্ধারণ করে।

বিজ্ঞাপন (কেন?)

গবেষণায় প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে একটি সততা রেটিং দিয়েছেন গবেষকরা। এর মাধ্যমে কোন কোন প্রতিষ্ঠান কার্বন নিঃসরণ কমানোয় তুলনামূলকভাবে ভাল কাজ করছে সেটি নির্ণয় করা হয়। আর প্রতিবেদনে এতে সবারই উন্নতির সুযোগ রয়েছে বলে উল্লেখ রয়েছে। এর মধ্যে, কোনো প্রতিষ্ঠানই উচ্চ সততা মান পায়নি। পণ্য তৈরি, পণ্য পরিবহন থেকে শুরু করে কারখানা বা দোকানে ব্যবহৃত শক্তি পর্যন্ত প্রতিটি ধাপেই কার্বন নির্গমন ঘটে। গবেষণার হিসেবে ফসল ফলানো বা গাছ কাটার কার্বন ফুটপ্রিন্টও এসেছে। গবেষণা মতে তালিকার প্রতিষ্ঠানগুলোতে হতেই কোন না কোন ভাবে ব্যাপক ভাবে কার্বন নিঃসরণ হচ্ছে।

নেসলে বলছে যে জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে তাদের কর্মকাণ্ড ও প্রতিশ্রুতির বিশদ বিশ্লেষণকে তারা অবশ্যই স্বাগতম জানাবেন। তবে নিউ ক্লাইমেট ইনস্টিটিউটের কর্পোরেট ক্লাইমেট রেসপনসিবিলিটি মনিটর প্রতিবেদনে তাদের পদ্ধতি বোঝার কোন উপায় তারা পাচ্ছে না এবং এতে উল্লেখযোগ্য ত্রুটিও রয়েছে বলে জানান তিনি। কার্বন নির্গমন ও গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ শূন্যে নামিয়ে আনার লক্ষ্যে কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো প্রকাশ্যে যেসব প্রতিশ্রুতি ও কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ করেছে এই গবেষণায় সেই বিষয়গুলোর অগ্রগতি বিবেচনায় এসেছে।

উদাহরণ দিতে গেলে আইকিয়া ২০৩০ সালের মধ্যে নিঃসরিত কার্বন কমানোর দিকে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। গুগল ২০৩০ সালের মধ্যে নেট-জিরো কার্বন হওয়ায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছে। 

সাবস্ক্রাইব করুন The Penguins Club খবরপত্রিকায়

প্রতি শুক্রবার বিশেষ খবর এবং আলোচনায় অংশগ্রহন করতে আপনার ইমেইল দিন।


Tagged:
About the Author

বিগত প্রযুক্তি বিষয়ক লেখালেখি করছি - বাংলা লেখিকা

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.