আন্তর্জাতিক জনপ্রিয় দৈনিক ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের সংবাদকর্মীরা কিছুদিন আগে সাইবার হামলার শিকার হয়েছেন। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র মতে সিএনএন জানিয়েছে যে চীনের সংবাদ নিয়ে কাজ করেন ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এমন কয়েক ডজন সংবাদকর্মী ও সম্পাদক ওই সাইবার হামলার লক্ষ্য ছিলেন। তদন্তকারী এবং সংবাদপত্রটির মূল প্রতিষ্ঠান নিউজ কর্পোরেশন এর মতে এই ঘটনার মূলে সম্ভবত চীনের হ্যাকাররা রয়েছে। উক্ত হামলায় ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের সংবাদকর্মীদের ব্যবহৃত ইমেইল অ্যাকাউন্ট এবং গুগল ড্রাইভে রাখা নথিপত্রগুলোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
নিউজ কর্পোরেশন হামলার ঘটনা তদন্তে সাইবার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান ম্যানডিয়ান্টকে নিয়োগ দিয়েছিল। তদন্তকারীরা সন্দেহ করছেন যে হ্যাকাররা সম্ভবত গোয়েন্দা কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিল এবং চীনের স্বার্থের জন্য লাভজনক তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা করছিল। ভুক্তভোগী সংবাদকর্মীদের সঙ্গে কোন তথ্যগুলো ঘাটাঘাটি করা হয়েছে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল সেটি নির্ধারণের জন্য বৃহস্পতিবার কর্মীদের সঙ্গে ফরেনসিক ডেটা নিয়ে বৈঠকে বসেছিল। তদন্তের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট এক সূত্র অনুযায়ী সিএনএন জানিয়েছে যে তদন্তকারীরা পরিকল্পিত সাইবার আক্রমণের প্রথম ঘটনাটি ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের বলে চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছেন।
ইমেইলটিতে বলা হয়েছে যে সংবাদ কর্মী ও তাদের সূত্রসহ কর্মীদের নিরাপত্তাই আমাদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তদন্তকারীরা হ্যাকিং চেষ্টা সফলভাবে মোকাবেলা করা গেছে বলেও মনে করছেন। নিউজ কর্পোরেশন এ ধরনের সাইবার হামলা মোকাবেলার প্রস্তুতি নিতে সহযোগিতা করতে অন্যান্য বার্তা সংস্থাকে প্রয়োজনীয় তথ্য দেওয়ার কথা বলেছে। অন্যদিকে নিউজ কর্পোরেশন এর পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (এসইসি)’র কাছে জমা দেওয়া নথিপত্র অনুযায়ী, সেবাগ্রাহক ও আর্থিক ডেটা সংরক্ষণকারী কম্পিউটার সিস্টেমের উপর হ্যাকিংয়ের কোনো বিরূপ প্রভাব পড়েনি।
তবে, কেনেডি মূল প্রতিষ্ঠানের সাইবার নিরাপত্তা দলের পক্ষ থেকে কর্মীদের পাঠানো এক ইমেইল সিএনএন’কে দেখিয়েছেন তিনি। ওই ইমেইলে বলা হয়েছে যে সাইবার হামলায় নির্দিষ্ট সংখ্যার ব্যবসায়িক ইমেইল অ্যাকাউন্ট এবং নথিপত্রের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এদিকে ওয়াশিংটনে অবস্থিত চীনা দূতাবাসের মুখপাত্র লিউ পেংউ এই ঘটনা সম্পর্কে অবহিত নন বলে জানিয়েছেন। তিনি দাবি করেন যে চীন সব ধরনের সাইবার হামলা ও সাইবার চুরির কঠোর বিরোধী। নিউজ কর্পোরেশনের মুখপাত্র জেমস কেনেডি সাইবার হামলার শিকার সংবাদকর্মীদের সঠিক সংখ্যা বা তদন্ত সংশ্লিষ্ট গোপন কোনো বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
অন্যদিকে, ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই এফবিআই পরিচালক ক্রিস্টোফার রে অভিযোগ তুলেছেন যে চীন অত্যাধুনিক হ্যাকিং প্রকল্প পরিচালনা করছে যার পরিধি বিশ্বের অন্যান্য প্রভাবশালী দেশের সমন্বিত চেষ্টার চেয়েও বড়।