“কিলার রোবট” নামক প্রাণনাশকারী রোবট যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকো শহরের পুলিশদের ব্যবহার করতে দেওয়ার পক্ষে ভোট দিয়েছিল সেখানকার পর্যবেক্ষকদের দল বা রুলিং বোর্ড অফ সুপারভাইজার। তবে সম্প্রতি জানা যায় যে স্যান ফ্রানসিসকো শহরে এখনই আসছে না কিলার রোবট নামক সেই প্রাণনাশকারী রোবট। আন্দোলন ও তীব্র সমালোচনায় বিতর্কিত আইনের ঘোষণা দেওয়ার কয়েক দিনের মধ্যেই ইউ-টার্ন নিয়েছে শহরটির আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
মঙ্গলবার এই বিতর্কিত আইন বন্ধের পক্ষে ভোট দিয়েছে শহর কর্তৃপক্ষ। তবে, এ বিষয়ে বিশদ আলোচনার উদ্দেশ্যে প্রস্তাবিত এ আইন এখন একটি কমিটির কাছে ফেরত যাবে। ফলে, আইনটি ফেরত আসার শঙ্কা এখনই মিলিয়ে যাচ্ছে না। এর আগে, চরম পরিস্থিতিতে সহিংস, সশস্ত্র বা বিপজ্জনক অপরাধীদের অজ্ঞান বা বিভ্রান্ত করতে বিস্ফোরকবাহী রোবট মোতায়েনের কথা বলেছিল শহরটির পুলিশ বিভাগ, এসপিডিএফ। গত সপ্তাহে, চরম পরিস্থিতিতে কিলার রোবট ব্যবহারের পক্ষে ভোট দিয়েছিল শহরের পরিচালনা পর্ষদ।
তবে, পদক্ষেপটি প্রযুক্তি ও পুলিশিংয়ের ভবিষ্যৎ প্রশ্নে বিতর্কের মুখে ঠেলে দেয় এই উদারপন্থী শহরকে। এমনকি কেউ কেউ একে তুলনা করেন ডিস্টোপিয়ান সায়েন্স ফিকশন এর খুব কাছাকাছি একটি ধাপ হিসেবেও। দেশটিতে পুলিশিংয়ের সময় বিভিন্ন রোবট ভিত্তিক প্রযুক্তি ব্যবহারের নজির থাকলেও, কাউকে মোকাবেলা বা হত্যার উদ্দেশ্যে এটি খুব কমই ব্যবহৃত হয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজ।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে এখন ডজনখানেক গ্রাউন্ড রোবট রয়েছে, যেগুলো বিভিন্ন বোমা চেনায় বা তুলনামূলক অস্পষ্ট পরিবেশে কাউকে উদ্ধারের বেলায় ব্যবহৃত হয়। পর্ষদকে এই সিদ্ধান্ত পাল্টাতে বাধ্য করতে স্যান ফ্রানসিসকো সিটি হল এ জড়ো হন অনেক আন্দোলনকারী। তাদের সঙ্গে আরও যোগ দেন আইনটি নিয়ে শুরু থেকেই আপত্তি জানানো তিন পর্ষদ কর্মকর্তা। আমরা সবাই সিনেমাটি দেখেছি, তাই কোনো কিলার রোবট নয় বলে শ্লোগান দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।
তাদের মধ্যে ছিলেন ডিন প্রেস্টন নামের এক পর্ষদ কর্মকর্তা। স্যান ফ্রানসিসকোর জনগণ স্পষ্ট ভাষায় বলেছে যে শহরে কিলার পুলিশ রোবটের কোনো জায়গা নেই বলে জানান তিনি। তাদের হাতে মানুষ হত্যার বিভিন্ন নতুন হাতিয়ার তুলে না দিয়ে উচিত, স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার মাধ্যমে সহিংসতার মাত্রা কমানোর বিভিন্ন উপায় নিয়ে কাজ করা। এই বছর ক্যালিফোর্নিয়ায় নতুন এক আইন কার্যকরের পর, রোবটকে এক ধরনের বাহিনী হিসেবে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে বিশেষ অনুমোদনের প্রয়োজন পড়েছিল দেশটির বিভিন্ন পুলিশ ও শেরিফ বিভাগকে।
এ ছাড়া, সামরিক শ্রেণিভূক্ত অস্ত্র তালিকা দেওয়ার পাশাপাশি সেগুলোর ব্যবহারেও অনুমোদনের প্রয়োজন পড়েছিল।