রবিনহুড মার্কেটস ইনক গ্রাহক সহায়তায় ত্রুটির জন্য গত বছর বেশ সমালোচিত হয়েছিলো। এত কিছুর পর এখন আবার তাদের পরতে হচ্ছে নতুন সমস্যার মুখে, একজন কাস্টমার সার্ভিস রিপ্রেজেন্টেটিভ একজন হ্যাকার কে তাদের প্রায় সাত মিলিয়ন গ্রাহকের গুরুত্বপুর্ণ এবং ব্যক্তিগত ডেটা চুরি করার পথ খুলে দিয়েছিলো।
ক্যালিফোর্নিয়ার মেনলো পার্ক ভিত্তিক এই ব্রোকারেজ অ্যাপ্লিকেশনটি তাদের ইতিহাসের বৃহত্তম হ্যাক এর স্বীকার হয়েছে, যেখানে তাদের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত বিবরণের তথ্য ফাস হয়ে গিয়েছে। কোম্পানিটির একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে ডেটা ব্রিচের সুত্রপাত হয়েছিলো একটি ফোন কলে যেখানে হ্যাকার একজন গ্রাহক সহায়তা কর্মীকে প্রতারিত করেছিল। কিন্তু তারা নির্দিষ্ট এবং বিস্তারিত কোনো তথ্য দেয়নি যে কিভাবে এই ঘটনাটি ঘটেছে।
অনুপ্রবেশকারী প্রায় পাঁচ মিলিয়ন রবিনহুড ব্যবহারকারীদের ইমেল এবং সেইসাথে প্রায় দুই মিলিয়নের একটি পৃথক গ্রুপের ব্যবহারকারীদের সম্পূর্ণ নাম সংগ্রহ করে নিয়েছে। কিছু গ্রাহকের জন্য, এমনকি আরও ব্যক্তিগত তথ্য উন্মোচিত হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে তাদের নাম, জন্ম তারিখ এবং প্রায় ৩১০ জনের জিপ কোড, এবং সাথে প্রায় ১০ জনের আরও বিস্তারিত তথ্য।
সাইবার সিকিউরিটি ফার্ম র্যাপিড-৭ ইনকর্পোরেটেড এর প্রধান তথ্য বিজ্ঞানী বব রুডিস বলেন, “আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠানগুলো এরূপ আক্রমণের বিশাল লক্ষ্য হওয়ার কারণ হচ্ছে এখানে সবসময় নতুন গ্রাহক আসছেঃ নতুন এবং সতেজ পরিচয়, নতুন তথ্য”। তিনি আরও বলেন, “সবাই র্যানসমওয়্যার সম্পর্কে কথা বলে, কিন্তু ব্যক্তিগত তথ্য এবং পরিচয় এখনও ডার্ক ওয়েব এবং ক্রিমিনাল ফোরামে বিক্রি করা হচ্ছে। এগুলো খুব মূল্যবান ডেটা।”
রবিনহুড তাদের ব্যবহারকারীদের সবসময় বোঝানোর চেষ্টা করে যে “সুরক্ষা প্রথমে” মন্ত্রটি মেনে চলতে পারাই তাদের প্রথম অগ্রাধিকার। কিন্তু এই তাদের এই ডেটা লিক হওয়ার ঘটনাটি প্রমাণ করে দিচ্ছে যে তাদের এই মন্ত্রটি এখনো কাজে দিচ্ছে না। বরং তারা নিরাপত্তার দিকটিকে লক্ষ না করেই যেন এগিয়ে চলছে। আরো অবাক এর বিষয় হচ্ছে এটি যে তারা এখনও ভক্তদের তাদের উপর আশ্বাস রাখতে এবং তাদের অ্যাপ এ ফাইন্যান্সিয়াল সমর্থন দিয়ে যাওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছে। রবিনহুডের ক্রিপ্টোকারেন্সি ওয়ালেটগুলির জন্য একটি ওয়েটিংলিস্ট রয়েছে, এবং ভবিষ্যতে অবসর অ্যাকাউন্টসহ অন্যান্য পণ্য সরবরাহ করারও পরিকল্পনা করেছে তারা।
রবিনহুড বলেছে যে তারা বিশ্বাস করে যে হ্যাকটিতে কোনও সামাজিক সুরক্ষা, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা ডেবিট-কার্ড নম্বর প্রকাশ করা হয়নি বা গ্রাহকরা কোনো প্রকার আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হননি।
নিউ ইয়র্কে রবিনহুডের শেয়ার ৩% কমে $৩৬.৮৫ ডলারে দাঁড়িয়েছে।
মান্ডিয়েন্টের চিফ টেকনোলজি অফিসার চার্লস কারমাকাল রবিনহুড এর ঘটনাটির তদন্ত করেছেন এবং বলেছেন যে তাদের ফার্ম সন্দেহ করছে অনুপ্রবেশকারীরা আগামী বেশ কয়েক মাসের মধ্যে অন্যান্য সংস্থাকেও লক্ষ্য করে জোর করে টাকা আদায় করতে পারে।
গত বছর প্রায় ২,০০০ রবিনহুড অ্যাকাউন্ট হ্যাকিং-এর ঘটনা ঘটেছিলো, যেখানে গ্রাহকদের অ্যাকাউন্ট লুট করে নেয়া হয়। কেউ কেউ অভিযোগ করেছিলেন যে তখন ফোন করার মতো কেউ উপলব্ধ ছিলো না।
ঘটনাটি সত্যিই হতাশাজনক যে একটি আর্থিক সাহায্যকারী পৃষ্ঠানের নিরাপত্তা খাত এতটা কমজোর। তবে বর্তমানে বিশ্বে সাইবার অ্যাটাক দিন দিন বেড়েই চলেছে। এতে ক্ষতি হচ্ছে অনেক গ্রাহকদের। বিষয়টি নিয়ে আপনাদের কি মতামত টা অবশ্যই জানাবেন। আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।