পপ “Point-Of-Presence (POP)”, লাস্ট “Last Mile” মাইল ক্যাবল শেয়ার করার অনুমোদন পেতে যাচ্ছে ইন্টারনেট সেবাদাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো (আইএসপি)।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীর আশ্বাস এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থা-বিটিআরসির উদ্যোগে কাজটি বাস্তবায়িত হতে পারে বলে জানা গেছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটা চালু হলে ইন্টারনেট সেবার মান ভালো হবে। ঝুলন্ত তারের (ওভারহেড ক্যাবল) জঞ্জালও কমবে।
“Point-Of-Presence (POP)” হল একটি সীমানা বিন্দু, অ্যাক্সেস পয়েন্ট, বা ফিজিকাল লোকেশন যেখানে দুই বা তার অধিক নেটওয়ার্ক বা কমিউনিকেশন ডিভাইস একটি সংযোগ শেয়ার করে।
Last Mile– কমিউনিকেশন এবং মিডিয়া সার্ভিস প্রোভাইড করে এবং ঘন এলাকায় অবস্থিত গ্রাহকদের কাছে পণ্য সরবরাহের ছোট ভৌগলিক অংশকে বর্ণনাকারী একটি মাধ্যম। last mile লজিস্টিক জটিল এবং ব্যয়বহুল পণ্য এবং সার্ভিস প্রদানকারীর জন্য এসব এলাকায় বিতরণ করে। তৈরি হয়েছে টাওয়ার শেয়ারিং নীতিমালা। যেনো দেশে মোবাইল ফোন অপারেটররা বিভিন্ন টাওয়ার শেয়ার করতে পারে। এ জন্য টাওয়ার সেবা দিচ্ছে থার্ড পার্টি।
এ জন্য গঠিত হয়েছে একাধিক কোম্পানি। তারা একটি টাওয়ার নির্মাণ করে বিভিন্ন মোবাইল অপারেটরের কাছে ভাড়া দিচ্ছে। একটি টাওয়ার বিভিন্ন অপারেটর শেয়ার করায় টাওয়ার স্থাপন খরচ ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় কমেছে। টাওয়ারের সংখ্যাও তুলনামূলক ভাবে কমেছে।
মোবাইল অপারেটরগুলোর জন্য এই সুবিধা থাকলেও তা নেই আইএসপি প্রতিষ্ঠানগুলোর। আইএসপিগুলো এমনিভাবে একজনের অবকাঠামো অন্যরা ব্যবহার করতে চান কিন্তু তা করতে পারে না। শেয়ারের ফলে ঝুলন্ত তারের জঞ্জালও কমবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, অ্যাক্টিভ শেয়ারিংয়ের বিষয়টি বিটিআরসি’র (নিয়ন্ত্রক সংস্থা) সঙ্গে আলাপ করে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তিনি ইন্টারনেট ব্যবসায়ীদের অনুরোধ করেন, আপনারা ইন্টারনেট সেবাদানে ঝুলন্ত তার (ওভারহেড ক্যাবল) ব্যবহার করবেন না। মাটির নিচ দিয়ে ক্যাবল টেনে ইন্টারনেট সেবা দেবেন। তাহলে ওভারহেড ক্যাবলের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি স্থায়িত্ব পাবেন। জঞ্জাল কমবে। শহর সুন্দর হবে।
জানতে চাইলে দেশের ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন আইএসপিএবি’র সভাপতি ইমদাদুল হক বলেন, ‘অ্যাক্টিভ শেয়ারিংয়ের বিষয়টির কোনও অনুমোদন নেই। ফলে চালুও হতে পারছে না। লাস্ট মাইল অ্যাক্টিভ শেয়ারিংয়ের অনুমতি দিলে ইন্টারনেট সেবাদান সংক্রান্ত সব খরচ কমে আসবে। তিনি বলেন, সবাইকে পপ (পয়েন্ট অব প্রেজেন্স) তৈরি করতে হবে না। সংশ্লিষ্টরা পপ তৈরি করবে। পপ থেকে একই ক্যাবল ব্যবহার করে আইএসপিগুলো গ্রহীতাদের সেবা দেবে।’
তিনি আরও উদাহরণ দিয়ে বলেন, “ধরা যাক কোনও একটি এলাকায় একটি পপ তৈরি করা আছে। ওখান থেকে সেই প্রতিষ্ঠান ক্যাবল টেনে কোনও গ্রাহককে ইন্টারনেট সেবা দিচ্ছে। ওই এলাকায় যদি অন্য কোনও প্রতিষ্ঠান সেবা দিতে চায় তাহলে নতুন করে ক্যাবল না টেনে ওই ক্যাবল ব্যবহার করেই ইন্টারনেট সেবা দেওয়া সম্ভব। এটা সব দিক থেকেই লাভজনক।”
অ্যাক্টিভ শেয়ারিং চালু হলে দেখা যাবে কোনও এলাকায় ৫০টি প্রতিষ্ঠান যদি ইন্টারনেট সেবা দেয় এবং তাদের ৫০টি পপ তৈরি করতে হবে না। একটি পপ হলেই চলবে। জানা গেলো, অ্যাক্টিভ শেয়ারিং চালু হলে পপ তৈরির সংখ্যা কমবে, পরিচালন ব্যয়ও কমবে, সম্পদের সুষম বণ্টন হবে, সেবার মান ভালো হবে। যার ফল পাবে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা।
আইএসপিএবি সূত্র জানিয়েছে, অ্যাক্টিভ শেয়ারিং চালুর বিষয়ে বিটিআরসির চেয়ারম্যানের কাছে সংগঠনটি মৌখিক অনুমোদন চাইলে তিনি তাদের লিখিতভাবে অনুরোধ পাঠাতে বলেন। বিষয়টি বিবেচনা করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।