Reading Time: 2 minutes

১৯৭২ সালের পর চাঁদের বুকে আবার মানুষ পাঠানোর জন্য নাসার প্রথম মুন মিশন আরো এক বছরের জন্য পিছিয়ে দিয়েছে। মুন মিশন ২০২৪ থেকে ২০২৫ সালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। স্বল্প অর্থ এবং অবতরন যান নিয়ে কিছু আইনি ঝামেলা কাটিয়ে উঠতে ২০২৪ সালকে নির্ধারন করা হয়েছিল চাঁদে মানুষ পাঠানোর অভিযান চালনার জন্য। পরে নাসার প্রধান বিল নেলসন এক সংবাদ সম্মেলনে মুন মিশন আরো এক বছর পিছিয়ে দেয়ার কথা ঘোষণা করেন। আর্টেমিস নামে এক অভিযানের অংশ হিসেবে চাঁদে মানুষ পাঠানোর জন্য যে মিশন এর পরিকল্পনা করা হয়েছে, তাতে নাসা প্রথম বারের মত তাদের একজন নারী নভোচারীকে পাঠাবে। পুরুষ নভোচারী হিসেবে যিনি থাকবেন তিনি হবেন চাঁদের মাটিতে পা দেয়া ১৩তম নভোচারী।

এই মিশনে মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা চাঁদে নামার জন্য অবতরণ যানটি তৈরির চুক্তি ইলন মাস্কের স্পেস এক্স সংস্থাকে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। পরবর্তীতে আমেরিকার একজন ফেডারেল বিচারক তার স্বপক্ষে রায় দেন। অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস নাসার এই সিদ্ধান্ত আদালতে নিয়ে চ্যালেঞ্জ করেছেন। স্পেস এক্স-এর সঙ্গে নাসার এই চুক্তির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে তার কিছুটা আপত্তি ছিল, যদিও এই কাজের জন্য দরপত্র একাধিক সংস্থার জন্য খুলে দেয়া হয়নি। জেফ বেজোসের কোম্পানি ব্লু অরিজিন এই গুরুত্বপূর্ণ চন্দ্রাভিযানের জন্য অবতরণ যান তৈরির চুক্তি পেয়েছিলেন এবং তিনি আরো তিনটি এয়ারস্পেস সংস্থার সাথে অংশীদারী ভিত্তিতে দরপত্র দেয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। তবে স্পেস এক্স এর সাথে চুক্তির ঘোষণা জানানোর সময় নাসা জানিয়েছিল যে মার্কিন কংগ্রেস এই প্রকল্পের জন্য যথেষ্ট অর্থ প্রদান করতে না পারায় তাদের দরপত্র ডাকার প্রক্রিয়ায় যাওয়া সম্ভব নয়।

চন্দ্রাভিযানের নির্ধারিত সময়সূচিতে দেরি হবার জন্য নেলসন এই মামলা মোকদ্দমাকে অনেকটাই দায়ী করে বলেন যে তাদের মহাকাশ সংস্থা অগ্রাধিকার দিতে চায় দ্রুত এবং নিরাপদে চাঁদে নামার অভিযান কর্মসূচিতে ফেরত যেতে, কিন্তু সাম্প্রতিক মামলা এবং অন্যান্য কারণে ২০২৫ এর আগে আর্টেমিস কর্মসূচির অংশ হিসেবে চাঁদে নতুন করে মানুষ পাঠানোর কাজটি করা সম্ভব হবে না। গত সপ্তাহে রায় দিয়েছে আদালত। অর্থাৎ টেক্সাসের দক্ষিণ পূর্বে একটি জায়গায় স্পেস এক্স এর তৈরি যে স্টারশিপ মহাকাশযানটি নিয়ে বর্তমানে পরীক্ষার কাজ চলছে, সেই যানটিই নাসার মুন মিশনে ব্যবহার করা হবে। এই যানটিই মানুষ নিয়ে ১৯৭২ সালের পর আবার চাঁদের মাটি স্পর্শ করবে। নাসা এটিতে তার শক্তিশালী স্পেস লঞ্চ সিস্টেম এর রকেট ব্যবহার করে মানব বিহীন ওরিয়ন মহাকাশযান পৃথিবীর উদ্দেশ্যে যাত্রা কেউ করবে।

আর্টেমিসস প্রকল্পের অংশ হিসাবে চন্দ্রাভিযানে আগামী বছর ফেব্রুয়ারী মাসে এই প্রথম নভোযান উড়তে চলছে। ফেব্রুয়ারির এই মিশনে ওরিয়ন তিন সপ্তাহ ধরে চাঁদের চারপাশে ঘুরবে বলে জানা গেছে। এই অভিযানে নাসা তার সিস্টেম ঠিকমত কাজ করছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখতে চাইছে। ২০২৪ সালে প্রথম নভোচারীদের নিয়ে আর্টেমিস-২ নভোযান মহাকাশে যাত্রা করবে বলে জানিয়েছেন নেলসন। এরপরে আর্টেমিস-৩ চন্দ্রাভিযানে পাঠানো হবে এবং সেটি ১৯৭২ সালে অ্যাপোলো ১৭ এর চাঁদের পৃষ্ঠে অবতরণ করার সময়কার মত চাঁদের মাটিতে প্রথম এক অন্যতম অবতরণ, যেটি চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে গিয়ে নামবে। ধারনা করা হয় চাঁদের গহ্বরে প্রচুর পরিমাণে পানি আছে এবং তা হতে জ্বালানি তৈরি করার গবেষণার উপাত্ত্ব সংগ্রহ করতে এই মিশন কাজে আসবে।

সাবস্ক্রাইব করুন The Penguins Club খবরপত্রিকায়

প্রতি শুক্রবার বিশেষ খবর এবং আলোচনায় অংশগ্রহন করতে আপনার ইমেইল দিন।


Tagged:
About the Author

বিগত প্রযুক্তি বিষয়ক লেখালেখি করছি - বাংলা লেখিকা

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.