প্রযুক্তি বাজারে প্রায়ই নতুন মানের এবং ভিন্নধর্মী ফোন লঞ্চ হতে দেখা যাচ্ছে। ব্যবহারকারীদের পছন্দ, চাহিদার উপর ভিত্তি করে কোম্পানি বিভিন্ন ডিজাইনের ফোন বাজারে ছাড়ছেন। এই সুবাদে জাপান লঞ্চ করতে যাচ্ছে একটি ভিন্নধর্মী স্মার্টফোন যার নাম “বালমুডা”। এটি একটি অনন্য এবং আকারে ছোট কমপ্যাক্ট অ্যান্ড্রোয়েড ফোন হতে যাচ্ছে যা সব থেকে আলাদা। যে কোম্পানি এই ফোনটি লঞ্চ করবে সেই কোম্পানিটি মূলত একটি বিলাসবহুল টোস্টার কোম্পানি। সাধারণত র্যান্ডম কোন কোম্পানি স্মার্টফোন তৈরি করেছে এই ধরনের গল্পগুলো প্রায় একই হয়, তবে এবার এতে অন্য রকম এক গল্প জড়িত আছে। র্যান্ডম স্মার্টফোন অপারেশনগুলি আমাদের জন্য চমৎকার পণ্য এনেছে যেমনঃ KFC ফোন বা পেপসি P1, কিন্তু বালমুডা এখানে তা করছে না। কোম্পানি এই ফোন তৈরি করতে যাচ্ছে কারন তাদের ফোনের ডিজাইন সম্পর্কে নতুন ধারনা তৈরি করেছেন।
ফোনটিকে গোলাকার এবং বাকানো আকৃতিতে তৈরি করা হয়েছে। সাধারণত স্মার্টফোনের চারপাশ আয়তাকার হয় কিন্তু এই ফোনের আকারটি অন্যান্য ফোনের থেকে ভিন্ন। এটি এমন ভাবে তৈরি করা হয়েছে যেটি ব্যবহারকারীরা খুব সহজে হাতে নিতে পারবেন। এটি ওজনে হাল্কা এবং হাতের মূঠোয় সম্পূর্ণভাবে বহনযোগ্য একটি ফোন। কোম্পানি জানিয়েছে যে বালমুডা ফোনটি এমন একটি আকৃতির দিয়ে ডিজাইন করা হয়েছে যা আপনার হাতে স্বাভাবিকভাবেই এটে যাবে। সুতরাং ফোন ধরে রাখার বিষয়গুলোর দিক বিবেচনা করলে বালমুডা ফোন অন্যান্য ফোনের ডিজাইন এবং আকার আকৃতির তুলনায় আলাদা এবং বিরল একটি ফোন। গ্রাহকেরা ফোনটি ব্যবহারে বেশ স্বাচ্ছন্দ বোধ করবেন এমনটি আশা করা হচ্ছে।
ফোনটি আকারে ৪.৯ ইঞ্চি, দৈর্ধ্যের দিক দিয়ে এর আকার ১২৩ মিলিমিটার এবং প্রস্থে ৬৯ মিলিমিটার। ফোনটির ডিসপ্লে রেজুলেশন ১৯৮০×১০৮০পি। ফোনটিও বেশ পুরু যা দৈর্ঘ্যে ১৩.৭ মি.মি। যেহেতু ফোনের পিছন দিক দিয়ে একটু বাকানো এবং চারপাশ কিছুটা গোলাকৃতির সেহেতু এটি ব্যবহারকারীরা তাদের পকেটে খুব সহজেই বহন করতে পারবেন। এর স্ক্রিন বডির অনুপাত ৬৮.১% এবং এস্পেক্ট অনুপাত ১৬ঃ৯। এর ক্যামেরা ৪৮ মেগাপিক্সেল এফ/১.৮ অ্যাপারচারের যাতে প্যানোরামার মতো ফিচার ও রয়েছে এবং সামনে রয়েছে ৮ মেগাপিক্সেলের ওয়াইড ক্যামেরা। পিছনের ক্যামেরাটি ফোনের ডানদিকে এবং তার সাথে রয়েছে এলইডি ফ্ল্যাশ। তার বাম পাশে রয়েছে সাইড মাউন্টেইন ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর, তবে ফোনটিতে ফেস রেকোগ্নাইজ যোগ করা হয়নি।
ভিডিওর রেজুলেশনের দিক দিয়ে এটি ৪কে ৩০এফপিএস পর্যন্ত রেকর্ড করতে সক্ষম। ফোনের হার্ডওয়ারের দিকে নজর দিলে এতে রয়েছে অক্টা কোর সিপিইউ এবং এর চিপসেট স্ন্যাপড্রাগন ৭৬৫ ৫জি কোয়ালকম। এর জিপিইউ অ্যাড্রেনো ৬২০। স্টোরেজ বিবেচনায় এ ফোনে র্যাম ৬ জিবি এবং রম ১২৮ জিবি। তবে ইন্টারনাল স্টোরেজ ফোন ম্যামোরি ছাড়া আর কোনো ম্যামোরি নেই। অর্থাৎ আলাদা এসডি কার্ডের স্লট এতে দেয়া হয়নি। আকারে ছোট ফোনটির ওজন ১৩৮ গ্রাম যা আইফোন ১৩ মিনি এর কাছাকাছি। ফোনের ব্যাটারি ২৫০০ এমএএইচ মিলি অ্যাম্প বা ১০ ওয়াট। ৫জি নেটওয়ার্ক কানেক্টিভিটিসম্পন্ন এই স্মার্টফোনটিতে রয়েছে ৫.০ ব্লুটুথ, টাইপ-সি ইউএসবি পোর্ট, সিঙ্গেল স্পিকার এবং ইয়ারফোন সংযোগ ৩.৫ মি.মি.। স্মার্টফোনটির অপারেটিং সিস্টেম হসেবে রয়েছে স্টক অ্যান্ড্রোয়েড ১১ এবং এতে গুগল প্লে ও একটি আকর্ষণীয় হোম-স্ক্রীন ইন্টারফেস আছে।
আইপিএস-৪ ওয়াটার রেসিটেন্স সহ স্মার্টফোনটি ওয়্যারলেস চার্জ সমর্থন করে। ভিন্নধর্মী জিনিস তৈরি করার সময় খরচ সাধারণত বেশিই হয়, তাই বালমুডা ফোনের মূল্য এখন ১০৪৮০০ ইয়ান অর্থাৎ ৯১৫ ইউএস ডলার (প্রায়), যদিও জাপান কোম্পানি ইউএস এ ফোনটি এখনো বাজারজাত করেনি। ফোনটির প্রথম হোমস্ক্রীনে রয়েছে অ্যাপের আইকন সমূহ এবং সাধারণ উইজেট। ফোনের সাইড থেকে সোয়াইপ করলে ক্যালেন্ডার, ঘড়ি এবং ফোনের মতো অন্তর্নির্মিত অ্যাপগুলি পাওয়া যাবে। ছোট ফোন হিসেবে স্মারটফোনটি এখন উতসাহীদের কাছে বর্তমানে ব্যাপক ভালোবাসার বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং অনলাইন মার্কেটে বেশ সাড়া যুগিয়েছে। যদিও কোম্পানিরা এই ধরনের ফোন তৈরি করলেও গ্রাহকদের তা খুব একটা কিনতে দেখা যায় না।
বলা হয়েছিল আইফোন ১৪ বাজারে আসার পর আইফোন মিনি ১৩ আর থাকবে না। যার ফলে গ্রাহকেরা বড় ডিসপ্লেসমৃদ্ধ ফোনের দিকে ঝুকেছিল, যার মধ্যে ৬ ইঞ্চির ফোনগুলো পুরো বাজারের মাত্র ১০% দখল করেছে। সংস্থাটির ধারণা এমতাবস্থায় তারা ছোট স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের নজর কারতে পারবে এবং স্মার্টফোন মার্কেটে তাদের একটি নাম তৈরী করতে পারবে। তাদের এই পদক্ষেপ কতটুকু সফল হয় এটিই দেখার বিষয় এখন। স্মার্টফোন টির ব্যাপারে আপনাদের কি ধারনা আমাদের অবশ্যই জানাবেন।