বৃহস্পতিবার বন্ধ হতে যাওয়া গুগলের ক্লাউড গেমিং সেবা স্টেডিয়া এই সেবার উন্মোচন ঘটে ২০১৯ সালের নভেম্বরে। সে সময় এটি গেমের নেটফ্লিক্স হিসেবে বিবেচিত হয়েছিল। আর পিসি বা কনসোলের সহায়তা ছাড়াই এতে বিভিন্ন গেম স্ট্রিম করা যেত। গুগলের জনপ্রিয় এই সেবা বন্ধ হয়ে যাওয়াতে যুক্তরাজ্যের গেমাররা বিমর্ষ। এটি নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে প্ল্যাটফর্মটিকে বিদায় জানাচ্ছেন যুক্তরাজ্যের গেমাররা। বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৯ নভেম্বর সকাল আটটার পর যুক্তরাজ্য থেকে এই সেবায় প্রবেশ করা যাবে না।
গেমারদের অনেকেই বিবিসিকে বলেন, সেবাটি চলে যাওয়ায় তাদের মন ভেঙে গেছে। স্টেডিয়া সেবা কেনা গ্রাহকদের আর্থিক ক্ষতিপূরণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে গুগল। এর মধ্যে রয়েছেন সেবাটি থেকে কন্ট্রোলার, গেম বা ডাউনলোডযোগ্য কনটেন্ট কেনা গ্রাহকরা। এর আগে গুগল অনুমান প্রকাশ করেছিল, ওইসব ক্ষতিপূরণ জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে দেওয়া হবে। স্টেডিয়া প্ল্যাটফর্মের চূড়ান্ত গেম উন্মোচনের মাধ্যমে বিদায়ের জানান দিয়েছে গুগল।
গত বছর ‘আউটকাস্টার’ নামের মাল্টিপ্লেয়ার গেমের লন্ডন ভিত্তিক গেম নির্মাতা কোম্পানি ‘স্প্ল্যাশ ড্যামেজ’ বলেছে, তারা অন্য কোথাও গেমটি আনার পরিকল্পনা করছে না। আরেক গেম নির্মাতা কোম্পানি ‘কিউ-গেমস’ এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী ডিলান কুথবার্ট বিবিসিকে বলেন, স্টেডিয়া এক্সক্লুসিভ গেম ‘পিক্সেলজাংক রেইডার্স’ তৈরির পেছনে তার দল দুই বছর খরচ করেছে। তিনি চাইছেন, গেমটি যেন চিরতরে হারিয়ে না যায়। গেমাররা যখন কয়েক বছর ধরে তৈরি করা গেম খেলতে পারেন না, তখন বিষয়টি সত্যিই লজ্জাজনক বলেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, আমরা সেইসব প্রকাশকের সঙ্গে যোগাযোগের প্রত্যাশা করছি, যারা পিসি এমনকি পিএস৫ বা অন্যান্য প্ল্যাটফর্মে তাদের গেম পৌঁছে দিতে সহায়তা করবে। এটি তাদের নিজস্ব আইপি হওয়ায় এর একটি উপায় খুঁজে দেখার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। গুগলে এটি কীভাবে কাজ করানো যায়, ওই বিষয়টির সমাধান নিয়ে তিনি আলোচনা ও চালানো হচ্ছে। তবে আরেকটি সমস্যা আছে। এই গেমটি নিয়ে আরো কিছু প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
সেবাটি উন্মোচনের সময় স্টেডিয়ার হার্ডওয়্যার কিনেছিলেন একজন গেমার। বিবিসি নিউজকে তিনি জানান, আট বছরে এই প্রথম কোনো গেম খেলেছেন তিনি। তিনি বলেন, স্টেডিয়া তার কেনার কারণ এটি ব্যবহারে সহজ। এতে কোনো ডাউনলোড বা ইনস্টল করার মতো আপডেট ছিল না। কেবল তিনি যখন গেম খেলতে চাইতেন, তখনই এটি আসতো। তিনি আরও বলেন, গেমের পেছনে সম্ভবত আটশ থেকে নয়শ ইউরো খরচ করেছেন তিনি। স্টেডিয়া থেকে সরে আসতে সম্প্রতি এক্সবক্স কেনার বিষয়টিও জানান কেন্ট।
ওয়ার্ম গেম নামের এই গেম সেবাটি উন্মোচনের আগে ডেভেলপাররা ব্যবহার কারতেন স্টেডিয়ার সেবা পরীক্ষার জন্য। স্টেডিয়া বন্ধ হলেও এর বিভিন্ন কন্ট্রোলারে ব্লুটুথ সুবিধা চালুর পরিকল্পনা করেছে গুগল। ফলে, কোনো তারের সহায়তা ছাড়াই বিভিন্ন পিসি গেম খেলতে পারবেন গেমাররা। সেপ্টেম্বরে গুগল বলেছে, তারা স্টেডিয়া সেবাটি বন্ধ করছে কারণ এটি কোম্পানির প্রত্যাশা অনুযায়ী গ্রাহক টানতে পারেনি। তবে, সেবাটির ভক্তরা বিষন্নতার সঙ্গে এই সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।
এর মধ্যে অনেকেই শঙ্কা প্রকাশ করেন, সেবাটি একবার বন্ধ হলে স্টেডিয়াতে এক্সক্লুসিভ হিসেবে থাকা বিভিন্ন গেমও বন্ধ হয়ে যাবে।