Reading Time: 3 minutes

বর্তমানে সারা বিশ্বে জ্বালানি তেলের দাম ব্যাপকভাবে বেড়েছে। যার ফলে মানুষ সিএনজিচালিত গাড়ির প্রতি বেশি দৃষ্টি দিচ্ছে। জ্বালানি সাশ্রয় বা ভিন্ন কোনো কারণে অনেকেই গাড়িকে কম্প্রেসড ন্যাচারাল গ্যাস বা সিএনজিতে চালানোর উপযোগী করতে চান। সাশ্রয়ের কথা চিন্তা করে এখন বেশির ভাগ মানুষ তাদের নিজস্ব গাড়িকে সিএনজি ব্যবহার উপযোগী করে নিচ্ছেন। এতে করে পেট্রল, ডিজেল ও অকটেনচালিত গাড়িকে সিএনজিতে রূপান্তর করার ফলে খরচ অনেকাংশেই কমে যাচ্ছে।

যদিও সব গাড়িতে সবসময় সিএনজি ট্রান্সফরমেশন কিট ব্যবহার করা সম্ভব হয় না। সেজন্য আগে গাড়ির বিষয়ে ভালো করে জেনে নেয়া জরুরি। সদ্য কেনা কিংবা গাড়ি যদি নতুন হয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে সিএনজি ট্রান্সফরমেশন কিট লাগাতে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়। কারন খুব পুরোনো গাড়িতে সাধারণত সিএনজি কিট লাগানো সম্ভব হয় না। আর সিএনজি ট্রান্সফরমেশন কিট লাগানোর পূর্বে সবচেয়ে জানা জরুরি যেটি সেটি হচ্ছে এটি সরকার কর্তৃক অনুমোদিত কিনা।

সরকার অনুমোদিত সিএনজি ট্রান্সফরমেশন কিট না হলে তা গাড়িতে সেট আপ করা বিপদজনক। গাড়ি সিএনজিচালিত করতে আরো অন্যান্য যেসকল বিষয় জানা জরুরি সেগুলো মোটামুটি তুলে ধরা হলো-

সিএনজি মান যাচাই

প্রচলিত জ্বালানির চেয়ে অর্ধেক বা এর কম খরচে এই জ্বালানি ব্যবহার করা যায় বলে গাড়িতে সিএনজির চাহিদাও বেড়েছে। এই চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে যেখানে সেখানে গড়ে উঠেছে অননুমোদিত সিএনজি রূপান্তর প্রতিষ্ঠান। আরও আছে অদক্ষ মেকানিকদের পাল্লায় পড়ে প্রতারিত হওয়ার ঘটনা। আর এসব জায়গা থেকে সেবা নিতে গিয়ে বিপাকে পড়ছে সাধারণ মানুষ। যার খেসারত জীবনের মূল্যে দিতে হচ্ছে। সম্প্রতি কয়েকটি গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা জানিয়ে গেল সেই সতর্কবার্তা।

অনেকেরই তেলচালিত গাড়িকে সিএনজিতে রুপান্তর করার মূল কারন অতিরিক্ত জ্বালানি খরচ কমানো। রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান গাড়ি সিএনজিতে রূপান্তর করে দেয়। নিজস্ব গাড়িকে সিএনজিতে পরিবর্তন করলে তার প্রতিদিনের খরচ অনেকটাই কমে আসে। গাড়ি সিএনজিতে রূপান্তর করতে স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। নির্ভরযোগ্য ও বিশ্বস্ততার সঙ্গে যারা গ্রাহকসেবা দিচ্ছে, সেসব প্রতিষ্ঠান থেকে সিএনজি গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহার করা হলে গাড়ি নিরাপদ থাকে।

অনেকেই আছেন, যারা সিএনজিতে রূপান্তরের সময় খরচ বাঁচানোর কথা ভাবেন, অল্প কিছু টাকা বাঁচিয়ে নিম্নমানের সিএনজি ট্রান্সফরমেশন সেন্টারের শরণাপন্ন হন। মানসম্মত সিলিন্ডারগুলোতে সেফটি ভালভ বা শাট অফ ভালভ থাকে। সিলিন্ডারে কোনো যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে এই ভালভ সিলিন্ডারের গ্যাসকে বাইরে বেরোতে দেয় না। ফলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে না। ভালোভাবে খোঁজ নিয়ে মান এবং মেকানিকদের দক্ষতা যাচাই করে তারপর গাড়িকে রূপান্তরের দায়িত্ব দেওয়া উচিত।

বিজ্ঞাপন (কেন?)

খরচ কমাতে গিয়ে যেন সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি না হয়, সেই বিষয়কে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে।

ছাড়পত্র সংগ্রহ

একজন গাড়ির মালিক যেখানেই তার গাড়িকে সিএনজিতে রূপান্তর করান না কেন, এর আগে অবশ্যই সিলিন্ডার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সেই সিলিন্ডারসংক্রান্ত ছাড়পত্র সংগ্রহ করবেন। এ ছাড়া রূপান্তরকারী প্রতিষ্ঠান সিলিন্ডারের ওপর আরও একটি ছাড়পত্র প্রদান করে। এই ছাড়পত্রগুলো থাকলে গ্রাহক সিলিন্ডারের ব্যাপারে নিশ্চিত থাকতে পারেন।

সিএনজি ট্রান্সফরমেশন কিট ব্যবহারে সাবধানতা

শুধু সরকার অনুমোদিত সিএনজি ডিলারের কাছ থেকেই গাড়ির জন্য সিএনজি ট্রান্সফরমেশন কিট কেনা উচিত। গাড়িতে সিএনজি কিট সেটআপ করার মত জটিল বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে যেমন তেমন কিট ক্রয় এবং ব্যবহার অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। এ ছাড়া যে সিএনজি কিটটি গ্রাহক কিনবেন সেটি আসল কি না, তাও যাচাই করে দেখা জরুরি। সিএনজি কিট কেনার পর নিজে কখনোই তা গাড়িতে লাগানো এবারেই উচিত নয়। এই কাজের জন্য একজন অভিজ্ঞ মেকানিকের সাহায্য অবশ্যই নিতে হবে।

সিএনজি কিট ছাড়াও সিলিন্ডারের সঙ্গে থাকা যন্ত্রাংশগুলো উন্নত মানের কি না, সেটি জানার পদক্ষেপ নিতে হবে। ইন্টারনেটের যুগে সহজেই সিএনজি রূপান্তরের যন্ত্রাংশগুলো সম্পর্কে ধারণা নেওয়া যায়। একটি সিলিন্ডার সিএনজি রূপান্তরের জন্য উপযোগী ও টেকসই কি না, গ্রাহকের বোঝার উপায়ের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক গ্যাস সিলিন্ডার নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো সিলিন্ডারে মান নির্ধারণ করতে পাঁচ-ছয় ক্যাটাগরির মানদণ্ডের কথা উল্লেখ করে। এই মানদণ্ডের পরীক্ষায় যে গ্যাস সিলিন্ডারগুলো উত্তীর্ণ হয়, সেগুলো নির্দ্বিধায় ১৫ থেকে ২০ বছর ব্যবহার করা যায়।

সিলিন্ডার রি-টেস্টিং

গাড়িতে সিলিন্ডার বসানোর পর যদিও বাড়তি কোনো যত্ন নিতে হয় না। তবে দাহ্য পদার্থ বা স্ফুলিঙ্গ তৈরি করতে পারে, এমন পদার্থ থেকে গাড়ি বা সিলিন্ডারের নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা উচিত। শতভাগ নিরাপদ ব্যবহারের জন্য প্রতি পাঁচ বছর পরপর সিলিন্ডারের পুনর্নিরীক্ষণ বা রি-টেস্টিং করা জরুরি। এতে গাড়ির সিএনজি পরিচালনপ্রক্রিয়ার ত্রুটি, সিলিন্ডার গ্যাসের অবস্থাসহ বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে যথাযথ ধারণা পাওয়া যায়। 

সাবস্ক্রাইব করুন The Penguins Club খবরপত্রিকায়

প্রতি শুক্রবার বিশেষ খবর এবং আলোচনায় অংশগ্রহন করতে আপনার ইমেইল দিন।


Tagged:
About the Author

বিগত প্রযুক্তি বিষয়ক লেখালেখি করছি - বাংলা লেখিকা

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.