সম্প্রতি হংকং সরকার খুচরা বিনিয়োগকারীদের ক্রিপ্টো মুদ্রা এবং ক্রিপ্টো সম্পদে লেনদেনের অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় এনেছে। এর আগে ক্রিপ্টো লেনদেন কেবল পেশাদার বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার প্রস্তাব দিয়েছিল হংকং। ক্রিপ্টো খাতে কড়াকড়ি আরোপের উদ্যোগ নিয়ে এ প্রযুক্তির সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের কঠোর সমালোচনার মুখে পড়েছিল চীনের বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চলটি। এ উদ্যোগের মাধ্যমে হংকং ‘ফিনটেক হাব’ এর পুরনো উপাধি ফিরে পাওয়ার আশা করছে বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
শহরটি থেকে বেশ কিছু স্টার্ট-আপ কোম্পানি ইতোমধ্যেই নিজেদের ব্যাগপত্র গুছিয়ে সিঙ্গাপুর ও দুবাইয়ে পাড়ি জমিয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। কিন্তু হংকংয়ের অর্থমন্ত্রী পল চ্যান সম্প্রতি ‘হংকং ফিনটেক উইক’ সম্মেলনে বলেছেন, খুচরা বিনিয়োগকারীদের ভার্চুয়াল সম্পদে উপযুক্ত মাত্রার প্রবেশাধিকার দিতে পরামর্শ প্রক্রিয়া চালু করবে স্থানীয় সরকার। তিনি বলেন, বিশ্ববাজারের জন্য তাদের নীতিমালাগত অবস্থান স্পষ্ট করতে চান।
সাথে আন্তর্জাতিক অঙ্গনের ভার্চুয়াল সম্পদ কমিউনিটির সঙ্গে আর্থিক প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণায় যে দৃঢ়সংকল্প রয়েছে তা দেখাতে চান। খুচরা বিনিয়োগকারীদের ক্রিপ্টো লেনদেনের অনুমতি দিয়ে রেখেছে সিঙ্গাপুর। তবে, জনসাধারণকে ক্রিপ্টো লেনদেনে অনুৎসাহী করার চেষ্টা করছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক। জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত জায়গায় ক্রিপ্টো মুদ্রানির্ভর ব্যবসার বিজ্ঞাপন প্রচারে কড়াকড়ি আরোপ করেছে ব্যাংকটি। রয়টার্স বলছে, খুচরা ক্রিপ্টো মুদ্রার লেনদেনকে বৈধতা দেওয়ার প্রস্তাবে চীনের মূল ভূ-খণ্ডের সঙ্গে হংকংয়ের দূরত্ব আরও বাড়ল।
কারন চীন ক্রিপ্টো মুদ্রার লেনদেন নিষিদ্ধ করে রেখেছে। ক্রিপ্টো সম্পদের লেনদেনকারী প্রতিষ্ঠান মেটাফার প্রধান নির্বাহী আড্রিয়ান ওয়াং রয়টার্সকে জানান, এটা একটা ইতিবাচক পদক্ষেপ এবং এটা একটা শক্তিশালী বার্তা দিচ্ছে য়ে মূলধন বাজার নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে ভিন্ন কৌশল বেছে নিচ্ছে হংকং। সাম্প্রতিক উদ্যোগ হংকংকে সিঙ্গাপুরের সমপর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন ক্রিপ্টো এক্সচেঞ্জ জেমিনাই এর চিফ কমপ্লায়েন্স অফিসার অ্যান্ডি মেহান।
শিল্প সংশ্লিষ্টরা বৈশ্বিক নীতিমালায় সামঞ্জস্য দেখতে চায়। অন্যথায়, সুযোগসন্ধানীদের জন্য তুলনামূলক দুর্বল আইন নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলগুলোতে আইনের ফাঁক-ফোকর অপব্যবহারের সুযোগ থেকে যাবে বলে রয়টার্সকে জানান তিনি। রয়টার্স জানিয়েছে, ডিজিটাল টোকেনে পরিণত হওয়া ভার্চুয়াল সম্পদের ওপর আইনি অধিকার এবং স্মার্ট কনট্র্যাক্ট কে আইনি বৈধতা দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করছে হংকং সরকার। স্মার্ট-কনট্র্যাক্ট এর ক্ষেত্রে আগে থেকেই প্রয়োজনীয় ইনপুট প্রোগ্রাম করা থাকে এবং নিজে থেকেই ক্রিপ্টো লেনদেন সম্পন্ন করে এই ডিজিটাল চুক্তিগুলো।
শিল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ উদ্যোগের ফলে রিয়াল এস্টেট সিকিউরিটি টোকেন অফারিং বা এসটিও প্রচলনের পথ সুগম হবে। রিয়াল এস্টেট থেকে আসা আয়ের দাবিদার বা মালিকের প্রতিনিধিত্ব করে ব্লকচেইনভিত্তিক এসটিও টোকেন।