স্যামসাং, অপ্পো এবং রিয়েলমের মতো অন্যান্য বিখ্যাত ব্র্যান্ডঅনুসরণ করে নোকিয়া বাংলাদেশে তাদের প্রথম উৎপাদন ইউনিট চালু করতে চলেছে। ভাইব্র্যান্ট সফটওয়্যারের (বিডি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ইউনিয়ন গ্রুপ) রকিবুল কবির নিশ্চিত করেছেন যে ভাইব্র্যান্ট সফটওয়্যার (বিডি) লিমিটেড বাংলাদেশে একটি মোবাইল ফোন কারখানা স্থাপনের জন্য বিটিআরসির কাছ থেকে অস্থায়ী অনুমোদন পেয়েছে এবং নোকিয়া ব্র্যান্ডটি একত্রিতকরণ/উৎপাদনের অনুমতি পেয়েছে। পরীক্ষামূলক প্রথম স্লটের উৎপাদন শেষে এখন দ্বিতীয় স্লটের উৎপাদন শুরুর প্রক্রিয়া চলছে। অপরদিকে শাওমি ব্র্যান্ডও দেশে মোবাইল ফোনের কারখানা চালু করতে যাচ্ছে। খুব দ্রুতই প্রতিষ্ঠানটি এ বিষয়ে ঘোষণা দিতে পারে বলে জানা গেছে।
এক সূত্র হতে জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানটি সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি নিজস্ব কারখানায় মোবাইল ফোন তৈরি (একত্রিতকরণ) করা শুরু করে। প্রথমবার নকিয়ার ৩.৪ মডেলের স্মার্টফোন তৈরি করা হয়। এই মডেলের ১০ থেকে ১২ হাজার ইউনিট মোবাইল প্রতিষ্ঠানটির বাজারে ছাড়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানা গেছে। প্রতিদিন প্রায় ৩০০-৫০০ ইউনিট মোবাইল কারখানায় তৈরি হয় বলে জানা যায়। এসকল ফোন বাজারে ছাড়ার পরে ভালো সাড়া পড়েছে বলে জানিয়েছে নকিয়া কর্তৃপক্ষ। নভেম্বর মাসে এই ব্র্যান্ডটি জি-১০ মডেলের স্মার্টফোন তৈরি শুরু করতে পারে।
ইলেকট্রনিক্স ব্র্যান্ড ওয়ালটন বাংলাদেশে উৎপাদন চালু করার মাধ্যমে ২০১৭ সালে স্থানীয় মোবাইল হ্যান্ডসেট উৎপাদন শিল্প যাত্রা শুরু হয়। তারপর থেকে, স্যামসাং, অপ্পো, রিয়েলমি, টেকনো, ইটেল সহ মোট দশটি ব্র্যান্ড এখানে উৎপাদন শুরু করে বাংলাদেশে। বিটিআরসি-র মতে, ২০১৯-২০ অর্থবছরে দেশে মোট হ্যান্ডসেট তৈরি ও আমদানির সংখ্যা ছিল ২৯.৪৮ মিলিয়ন ইউনিট। যার মধ্যে ১৬.২১ মিলিয়ন ইউনিট স্থানীয়ভাবে ১০টি কোম্পানি দ্বারা উৎপাদিত হয়েছিলো, যেখানে ১৩.২৭ মিলিয়ন ইউনিট আমদানি করা হয়েছিলো। জানা গেছে যে যুক্তরাজ্যভিত্তিক ভাইব্র্যান্ট সফটওয়্যার ও বাংলাদেশের ইউনিয়ন গ্রুপের জয়েন্ট ভেঞ্চার ভাইব্র্যান্ট সফটওয়্যার (বিডি) লিমিটেড নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি থেকে চলতি বছরের মার্চ মাসে নকিয়া ফোন উৎপাদনের জন্য ৩ বছরের জন্য লাইসেন্স নেয়। গাজীপুরের কালিয়াকৈরের বঙ্গবন্ধু হাইটেক সিটির ৫ নম্বর ব্লকে পাঁচ একর জমি বরাদ্দ নিয়ে কারখানা গড়ে তুলেছে ভাইব্র্যান্ট।
শীঘ্রই কারখানা চালু করতে যাচ্ছে শাওমিও
বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় স্মার্টফোন ব্র্যান্ড শাওমি খুব দ্রুত বাংলাদেশে তাদের কারখানা চালু করতে যাচ্ছে। শীঘ্রই প্রতিষ্ঠানটি এ বিষয়ে ঘোষণা দিতে পারে। কবে নাগাদ শাওমির কারখানা চালু হতে পারে জানতে চাইলে বাংলাদেশের শাওমির কান্ট্রি জেনারেল ম্যানেজার জিয়া উদ্দিন চৌধুরী কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
জানা গেছে, আগামী ২১ অক্টোবর রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে একটি জমকালো অনুষ্ঠান আয়োজন করতে যাচ্ছে শাওমি। উক্ত অনুষ্ঠানে কয়েকটি ঘোষণা আসতে পারে এমনটি আশা করা যায়। তার মধ্যে একটি হতে পারে দেশের স্থানীয় কারখানায় শাওমি মোবাইল তৈরির ঘোষণা। যদিও এ বিষয়ে শাওমির বাংলাদেশ অফিস কোনও মন্তব্য করেনি। তবে আয়োজনের ঘনঘটা দেখে সংশ্লিষ্টরা ধারণা করেছেন এমনটা। ব্র্যান্ডটির নতুন পরিকল্পনা, অফার ও ঘোষণার অপেক্ষায় প্রযুক্তি বাজার।
ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, “শাওমি মোবাইল উৎপাদনের জন্য লাইসেন্সপ্রাপ্ত একটি প্রতিষ্ঠান। শাওমি শিগগিরই উৎপাদনে যাবে বলে আমরা জানি। মন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের এখানে উৎপাদন মানে তো অ্যাসেমব্লিং (একত্রিতকরণ)। আমরা আপাতত এতেই খুশি।” তিনি আরও জানান যে, “দেশেই এখন ফাইভ-জি ফোন তৈরি হচ্ছে। আমি আশা করবো, শাওমি এ দেশে ফাইভ-জি স্মার্টফোন তৈরি করবে।” তিনি এও যুক্ত করেন যে, “দেশের মোবাইল ফোনের কারখানাগুলোতে তৈরি ফোন এখন বাজার দখল করতে শুরু করেছে। এটা একটা ভালো দিক যে দেশের মানুষ দেশে তৈরি ফোনে আস্থা রাখতে শুরু করেছেন।”
পরিশেষ
যদি প্রতিষ্ঠান দুটি শীঘই তাদের কারখানা চালু করতে পারে তবে আশা করা যায় অতি দ্রুত বাংলাদেশের বাজারে এই বিশ্বখ্যাত স্মার্টফোন প্রতিষ্ঠান গুলো বেশ ভালো প্রভাব ফেলতে পারবে। এবং স্বাভাবিক মানুষ দেশীয় ফোনের পাশাপাশি বেশ ভালো দামেই তাদের পছন্দের মোবাইল ফোন গুলো ক্রয় করতে পারবে। আপনাদের মতামত অবশ্যই আমাদের জানাবেন। সকলকে ধন্যবাদ আমাদের সাথে থাকার জন্য।