কিছুদিন আগে প্লাটফর্মের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে টুইটার বাজার নিয়ন্ত্রক ও সেবাগ্রাহক দুই পক্ষের কাছেই ‘মিথ্যাচার করে বিভ্রান্ত করছে’ বলে এসইসির কাছে কোম্পানির সাবেক হেড অফ সিকিউরিটি পিটার জ্যাটকো অভিযোগ করেছিলেন। ভারত সরকার টুইটারকে চাপ দিয়ে একজন সরকারি এজেন্টকে কোম্পানির বেতনভুক্ত পদে নিয়োগ দিতে বাধ্য করেছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল। বলা হচ্ছে, ব্যবহারকারীদের স্পর্শকাতর ডেটায় প্রবেশাধিকার পেয়েছিলেন উক্ত ভারতীয় এজেন্ট।
আলোচিত এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিরুদ্ধে এমন আরও গুরুতর অভিযোগ তুলেছিলেন কোম্পানির সাবেক নিরাপত্তা প্রধান। প্ল্যাটফর্মের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েও বাজার পর্যবেক্ষক এবং সেবাগ্রাহকদের কাছে মিথ্যাচার করেছে টুইটার বলে অভিযোগ এসেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিচারবিভাগ, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সেচেঞ্জ কমিশন বা এসইসি এবং ফেডারেল ট্রেড কমিশনের বা এফটিসি এর কাছে জমা দেওয়া সাক্ষ্যে পিটার টুইটারকে গণতন্ত্র এবং জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
আর এরই জের সম্প্রতি সাবেক নিরাপত্তা প্রধানের সঙ্গে ৭০ লাখ ডলারের বিনিময়ে সমঝোতা করেছিল মাইক্রোব্লগিং প্ল্যাটফর্ম টুইটার। সমঝোতার অংশ হিসেবে টুইটারে নিজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণ গোপন রাখার এবং প্ল্যাটফর্মটির প্রতি কোনো নেতিবাচক মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকার কথা ছিল পিটারের। কিন্তু, জুলাই মাসেই যুক্তরাষ্ট্রের বাজার নিয়ন্ত্রকসংস্থা ‘সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (এসইসি) ৮৪ পাতার অভিযোগ তিনি জমা দেন।
উক্ত সমঝোতার কয়েক দিনের পরেই তথ্য ফাঁসকারী হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে টুইটারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করেন পিটার জ্যাটকো। বৃহস্পতিবারের এক প্রতিবেদনে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, জুন মাসেই পিটার জ্যাটকোকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৭০ লাখ ডলার দিতে সম্মত হয়েছিল টুইটার কর্তৃপক্ষ। যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রতিনিধিদের টুইটারের অনিয়ম ও মিথ্যাচার সম্পর্কে জানাতে ১৩ সেপ্টেম্বর মার্কিন সিনেটের এক বিশেষ কমিটির সঙ্গে দেখা করার কথা রয়েছে তার।
বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্কের সঙ্গেও আইনি লড়াই চলছে টুইটারের। চার হাজার চারশ কোটি ডলারে কোম্পানির সব শেয়ার কিনে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়ে চুক্তি করেছিলেন মাস্ক। প্ল্যাফর্মটি বট অ্যাকাউন্ট নিয়ে সঠিক তথ্য দিচ্ছে না অভিযোগ তুলে সেই চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছেন মাস্ক। সেই মামলায় সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য জ্যাটকোকে উকিল নোটিসও পাঠিয়েছেন মাস্কের আইনজীবীরা। সাক্ষী হিসেবে পিটারকে উপস্থিতি হওয়ার অনুমতিও দিয়েছে ডেলাওয়্যারের আদালত।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল জানিয়েছে, জুন মাসের সমঝোতার মূল বিষয় ছিল টুইটারের কাছে পিটারের পাওনা অর্থ। চাকরিচ্যুত হওয়ার পর টুইটার কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে পাওনা বুঝে নিতে কয়েক মাস ধরে আলোচনা চলছে সাবেক নিরাপত্তা প্রধানের। এ বিষয়ে টুইটারের প্রতিক্রিয়া জানার চেষ্টা করেছিল বার্তাসংস্থা রয়টার্স। কিন্তু কোম্পানি তাৎক্ষণিক কোনো সাড়া দেয়নি।