‘নেট জিরো’ সম্পর্কে সহজ ভাষায় বলতে গেলে বৈশ্বিক গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন শূন্যের কাছাকাছি নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রাকে বোঝায়। দ্বিমুখী সোলার প্যানেল উন্নত করার নতুন এক কৌশল খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তাদের দাবি, এটি নবায়নযোগ্য শক্তি উৎসের দীর্ঘমেয়াদী বিকল্প হিসেবে কাজ করতে পারে। দ্বিমুখী সৌর প্যানেলের দুই পাশেই আলোক শক্তি সঞ্চয়ের ব্যবস্থা থাকায় এটি একমুখী সৌর প্যানেলের চেয়ে ৩৫ শতাংশ বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে বলে উঠে এসেছে ব্রিটিশ সংবাদপত্র দ্যা ইন্ডিপেন্ডেন্টের প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, এখানে উন্নত দক্ষতা ও স্থায়িত্বের মানে হলো, এগুলো ২০৫০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক শক্তি চাহিদার ১৬ শতাংশেরও বেশি সরবরাহ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে, এখন পর্যন্ত দ্বিমুখী ফটোভোলটাইক বা সৌর সেলের মাধ্যমে উৎপাদিত শক্তির সঠিক পরিমাপ করা তুলনামূলক জটিলই ছিল। তুষার, ঘাস ও বালুর মতো ভূপৃষ্ঠ আবৃত করা বিভিন্ন পদার্থের প্রভাব বিবেচনায় নিয়ে দ্বিমুখী প্যানেলের পরিমাপ ব্যবস্থা উন্নত করার নতুন এক কৌশল খুঁজে পেয়েছে কানাডার ইউনিভার্সিটি অফ অটোয়ার এক গবেষক দল।
প্রতিফলিত আলোক শক্তি সঞ্চয়ের সুবিধা থাকার পাশাপাশি দ্বিমুখী প্যানেল গতানুগতিক যে কোনো প্যানেলের চেয়ে বেশি টেকসই। আর এটি ৩০ বছরেরও বেশি সময় পর্যন্ত বিদ্যুত উৎপাদন করতে পারে বলে গবেষকগণ জানান। এই কৌশলের বিভিন্ন সুবিধার মধ্যে রয়েছে বিদ্যমান ও উদীয়মান দ্বিমুখী প্রযুক্তির মধ্যে তুলনা, নির্দিষ্ট নকশা অপটিমাইজ করে কার্যদক্ষতা বাড়ানো ও অপ্রচলিত বাজারে সৌর প্যানেল স্থাপন বাড়ানোর মতো বিষয়গুলো।
বুধবার এই বিষয় সম্পর্কিত সর্বশেষ এ জেনারেল ইলুমিনেশন মেথড টু প্রেডিক্ট বাইফিসিয়াল ফটোভলটাইক সিস্টেম পারফর্মেন্স শিরোনামের গবেষণাপত্রটি প্রকাশ পেয়েছে ‘জুল’ নামের বৈজ্ঞানিক জার্নালে। গবেষণা সংস্থা সানল্যাবের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক কারিন হিনজার জানান, এই কৌশল বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ কারণ নবায়নযোগ্য শক্তির অনুপ্রবেশ ‘নেট-জিরো’ পৃথিবীর দিকে যাওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেবে। ২০৫০ সাল নাগাদ বৈশ্বিক শক্তি সরবরাহ ব্যবস্থায় দ্বিমুখী সৌর সেলের অবদান থাকবে ১৬ শতাংশ অথবা বার্ষিক প্রায় ৩০ হাজার টেরাওয়াট।
দ্বিমুখী সৌর প্যানেল পরিমাপে বিদ্যমান ‘ইন্টারন্যাশনাল ইলেকট্রোকেমিকাল কমিশনের মানদণ্ডকে প্রসারিত করবে এটি। আর এতে অ্যাপ্লিকেশন-ভিত্তিক অপ্টিমাইজেশন ব্যবস্থা ও দ্বিমুখী প্যানেল প্রযুক্তির সঠিক তুলনার পাশাপাশি প্যানেলের শক্তির রেটিংয়ের মান নির্ধারণ করা যাবে। এর আগের বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে, দ্বিমুখী সৌর প্যানেল স্থাপনের ফলে বিদ্যুতের খরচও ব্যপক হারে কমে আসে। তবে সোলার প্যানেল নিয়ে এত জল্পনা কল্পনা থাকলেও মূলত সোলার প্যানেল এখনো সাধারণ মানুষের হাতে পৌছায়নি।
এর দাম এখনো আকাশ সমান উর্ধ্বে এবং অনেকেরই ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। এছাড়াও, অনেক গবেষকগণ জানিয়েছেন পরীক্ষার মাধ্যমে তারা জেনেছেন সোলার প্যানেল মূলত বিশেষ কোন ফল দেয় না। অর্থাৎ, সোলার প্যানেলের মাধ্যমে যেকোন প্রজেক্টের ফল আশানুরূপ কোন সফলতা পাওয়া যায়নি।