সম্প্রতি টুইটারের প্রধান নির্বাহীর পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন কি না তা নিয়ে মাইক্রোব্লগিং প্ল্যাটফর্মে এবার প্রশ্ন তুলেছেন চিফ টুইট ইলন মাস্ক। এ প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত মাস্কের জরিপে ভোট পড়েছে এক কোটি ৩০ লাখের বেশি, মাস্কের সরে দাঁড়ানোর পক্ষে ভোট দিয়েছেন ৫৬ শতাংশের বেশি অংশগ্রহণকারী। আর মাস্ক যদি নতুন টুইটার জরিপের ফলাফল মেনে সিদ্ধান্ত নেন, তবে সম্ভবত খুব শিগগিরই কোম্পানির কাণ্ডারীর পদ ছাড়তে যাচ্ছেন তিনি। সোমবার গ্রিনউইচ মান সময় ১১টা ২০ মিনিটে জরিপের সময় শেষ হবে বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
গত মাসেও যুক্তরাষ্ট্রের ডেলাওয়্যারের আদালতে মাস্ক বলেছিলেন, ধীরে ধীরে টুইটারে সময় দেওয়া কমিয়ে দেবেন তিনি এবং এক পর্যায়ে কোম্পানির নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য নতুন কাউকে খুঁজে নেবেন। জরিপের ফলাফল তাকে টুইটার প্রধানের পদ ছাড়তে বললে সেক্ষেত্রে কী করবেন, তার বিস্তারিত জানাননি টুইটার প্রধান। তবে, টুইটারের সম্ভাব্য নতুন প্রধান নির্বাহী নিয়ে এক ফলোয়ারের প্রশ্নের উত্তরে মাস্ক বলেছেন, এখনও কোনো উত্তরসূরী নির্বাচিত নেই।
রয়টার্স জানিয়েছে, রোববারের নীতিমালা পরিবর্তনের জেরে কঠোর সমালোচনার শুরু হওয়ার পর চিফ টুইট হিসেবে নিজের ভবিষ্যৎ নির্ধারণী জরিপটি চালু করেছেন মাস্ক। কোম্পানির মূল অ্যাকাউন্ট থেকে আরেকটি জরিপ চালু করে ভিন্ন প্ল্যাটফর্মের প্রচারণা এবং কনটেন্ট বিষয়ক নীতিমালা প্রসঙ্গে সাধারণ ব্যবহারকারীদের মতামত জানতে চেয়েছে টুইটার। নীতিমালা পরিবর্তন কার্যকর হলে এর ভুক্তভোগী হবে মেটা প্ল্যাটফর্মসের ফেসবুক ও ইনস্টাগ্রাম, মাস্টোডন, ট্রুথ সোশাল, ট্রাইবালস, নোস্টর এবং পোস্ট-এর মতো প্ল্যাটফর্মগুলো।
টুইটারের মূল অ্যাকাউন্ট থেকে দেওয়া পোস্টের পাল্টা উত্তরে কোম্পানির সাবেক প্রধান নির্বাহী জ্যাক ডরসি প্রশ্ন তুলেছেন “কেন?”। সম্প্রতি নোস্টরেও বিনিয়োগ করেছেন জ্যাক ডরসি। নীতিমালা পরিবর্তন প্রসঙ্গে অপর এক টুইটার ব্যবহারকারীর প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন, এর কোনো মানে হয় না। রোববারে নিজস্ব প্ল্যাটফর্মে প্রতিদ্বন্দ্বী সামাজিক মাধ্যমের প্রচারণা চালায় এমন অ্যাকাউন্ট এবং প্রতিদ্বন্দ্বী প্ল্যাটফর্মের লিংক বা ইউজারনেইম আছে এমন কনটেন্ট নিষিদ্ধ করেছিল মাস্কের টুইটার।
নতুন জরিপ চালু করার কয়েক মিনিট আগেই নীতিমালা পরিবর্তন নিয়ে ক্ষমা চেয়ে মাস্ক টুইট করেন, আগামী থেকে নীতিমালায় বড় পরিবর্তনের আগে ভোট নেওয়া হবে। ক্ষমা চেয়ে তিনি বলেন, আর এমন হবে না।
ইলন মাস্কের পদত্যাগের পক্ষে বেশিরভাগ ফলাফল
মাস্কের জরিপে ভোট পড়েছে মোট পৌনে দুই কোটি। মাস্কের সরে দাঁড়ানোর পক্ষে ভোট দিয়েছেন সাড়ে ৫৭ শতাংশ অংশগ্রহণকারী। তিনি সবার মতামত হিসেবে ভোট চেয়েছিলেন। লোকজন সে ডাকে সাড়াও দিয়েছেন। সে ফলাফল বলছে, ইলন মাস্কের উচিৎ টুইটার প্রধানের পদ ছেড়ে দেওয়া। এরই মধ্যে টেসলা, যে কোম্পানির উদ্যোক্তা হিসেবেই সবচেয়ে বেশি পরিচিত মাস্ক, তার শেয়ার মূল্য বেড়েছে শতকরা পাঁচ ভাগের বেশি। টুইটারের পেছনে সময় দিতে গিয়ে মাস্ক টেসলাকে দরকারি সময় দিতে পারছেন না, এমন ভয় আগে থেকেই ছিল টেসলায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে।
টুইটার কেনার সম্ভাবনা তৈরি হওয়ার পর থেকেই টেসলার শেয়ার মূল্য কমছিল। এর ধারাবাহিকতায় এ মাসের শুরুতে বিশ্বের শীর্ষ ধনীর অবস্থান হারান এ প্রযুক্তি উদ্যোক্তা। টেসলা এবং সম্প্রতি কেনা টুইটারের বাইরেও টানেল খনন কোম্পানি বোরিং, মস্তিষ্কে চিপ বসানোর কোম্পানি নিউরালিংক এবং মহাকাশ অভিযাত্রায় নিবেদিত স্পেসএক্সও তারই প্রতিষ্ঠিত। সোমবার গ্রিনউইচ মান সময় ১১টা ২০ মিনিটে জরিপের সময় শেষ হয়।
তবে, জরিপের ফলাফল তাকে টুইটার প্রধানের পদ ছাড়তে বললে তিনি কী করবেন তার বিস্তারিত জানাননি টুইটার প্রধান।