Reading Time: 2 minutes

টুইটারের প্রধান নির্বাহীর পদ থেকে সরে দাঁড়ানো উচিত কি না, সেই প্রশ্ন রেখে মাস্ক এই মাইক্রোব্লগিং প্ল্যাটফর্মের ব্যবহারকারীদের কাছে ভোট চেয়েছিলেন। সেই জরিপে ভোট পড়ে মোট পৌনে দুই কোটি। আর সাড়ে ৫৭ শতাংশ উত্তরদাতা মাস্কের সরে দাঁড়ানোর পক্ষে মত দেন। বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক বলেছেন অবজ্ঞা করে বলেন, টুইটারের প্রধান নির্বাহীর পদ নেওয়ার মত বোকা কাউকে খুঁজে পেলেই তিনি ওই দায়িত্ব ছেড়ে দেবেন। মঙ্গলবার এক টুইটে মাস্ক বলেছেন, সিইও পদের জন্য যোগ্য লোক পেলেই তিনি দায়িত্বটা ছেড়ে দেবেন।

তবে টুইটারের সফটওয়্যার আর সার্ভার টিমকে তিনি নিজের অধীনেই রাখবেন। দুদিন আগে ওই ভোটাভুটির ফল প্রকাশের পর এই প্রথম এ বিষয়ে মুখ খুললেন টুইটারের সিইও ইলন মাস্ক, যিনি কর্তৃত্ব নেওয়ার পর এ সোশাল মিডিয়া কোম্পানির খোলনলচে পাল্টে ফেলে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়ে চলেছেন। অক্টোবর মাসে টুইটারের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পরপরই কোম্পানির প্রায় অর্ধেক কর্মী ছাঁটাই করেছেন মাস্ক। তারপর গাঁটের পয়সা খরচ করে নামের পাশে টিক চিহ্ন বসানোর ফিচার চালু করতে গিয়েও বিপাকে পড়েছেন।

সাইবার প্রতারকরা নতুন ফিচারটি অপব্যবহার শুর করায় ১১ নভেম্বর থেকে ‘টুইটার ব্লু’ সেবা বন্ধ রেখেছিলেন মাস্ক। সেবাটি নতুন করে চালু হয়েছে গত সপ্তাহেই। সংবাদকর্মীদের টুইটার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে শুক্রবারে জাতিসংঘ আর ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের নিন্দার মুখেও পড়তে হয় মাস্ককে। ওই ঘটনায় জাতিসংঘ টুইট করে বলেছিল, সংবাদমাধ্যমে স্বাধীনতা খেলনা নয়,  আর টুইটারের ওপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়েছিল ইইউ।

মাস্কের কনটেন্ট মডারেশন কৌশল নিয়ে সমালাচনা করছেন নাগরিক অধিকারকর্মীরা। মাস্কের অধীনে টুইটারে যে পরিবর্তনগুলো এসেছে, তা মিথ্যাচার ও বিদ্বেষপূর্ণ ভাবধারার প্রচার বাড়াবে বলে তাদের শঙ্কা। আপাতদৃষ্টিতে সার্বিক পরিস্থিতি যখন মাস্কের বিরুদ্ধে যাচ্ছে, তখনই টুইটারের দায়িত্ব নেওয়ার মত যথেষ্ট বোকা কাউকে খুঁজে পেলেই দায়িত্ব হস্তান্তরের কথা বললেন চিফ টুইট। দুইবারের প্রধান নির্বাহী জ্যাক ডরসি পুরনো পদে ফিরতে পারেন বলে গুজব আছে প্রযুক্তি বাজারে।

২০২১ সালের নভেম্বরেই টুইটারের দায়িত্ব ছাড়েন ডরসি। বিবিসি লিখেছে, টুইটারের দায়িত্ব নেওয়ার যোগ্যতা এবং ইচ্ছা আছে এমন নতুন কাউকে খুঁজে পাওয়া কঠিন হবে। বিবিসি জানিয়েছে, টুইটারের পরবর্তী প্রধান নির্বাহী হিসেবে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে, তাদের মধ্যে আছেন মেটার সাবেক সিওও শেরিল স্যান্ডবার্গ, প্রকৌশলী ও ব্যক্তিগত জীবনে মাস্কের কাছের মানুষ শ্রীরাম কৃষ্ণান এবং সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের জামাতা জারেড কুশনার।

বিজ্ঞাপন (কেন?)

১৯ ডিসেম্বর জরিপ শুরু করার পরপরই মাস্ক টুইট করেছিলেন, টুইটারকে জ্যান্ত রাখতে পারবে এমন কেউ এ চাকরি নিতে আগ্রহী নয়। এদিকে টুইটার নিয়ে মাস্কের খামখেয়ালি আচরণের সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী সম্ভবত তার আরেক কোম্পানি টেসলা। গত এক বছরে বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা এ কোম্পানির শেয়ার ৬৫ শতাংশ দর হারিয়েছে। বিনিয়োগকারীদের শঙ্কা, টুইটারে মত্ত মাস্ক এখন হয়ত টেসলায় যথেষ্ট মনোযোগ দিচ্ছেন না। বিবিসি লিখেছে, টুইটারের ক্রয় তহবিল জোগাড় করতে টেসলার বিপুল সংখ্যক শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন মাস্ক।

শেয়ার বাজারে দরপতনের অন্যতম কারণ ছিল সেটা। আর টেসলার দরপতনের জেরে সম্প্রতি বিশ্বের শীর্ষ ধনীর সিংহাসনও হারিয়েছেন মাস্ক। মাস্কের নিয়ন্ত্রণে যাওয়ার আগে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি আর সেলিব্রেটিদের অ্যাকাউন্ট বিনা খরচে নিজ উদ্যোগে যাচাই করে স্বীকৃতি দিত টুইটার। নামের পাশের নীল টিক ছিল সেই স্বীকৃতির প্রমাণ। মাস্ক সেই সেবায় ফি আরোপ করার সঙ্গে সঙ্গেই এর সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করেছিল প্রতারকরা।

নতুন টুইটার ব্লু টিক সেবা চালু করার কয়েক দিনের মধ্যে মাস্কের নিজের নামে একাধিক ভুয়া অ্যাকাউন্ট চালু হয়েছিল টুইটারে, বাধ্য হয়ে ১১ নভেম্বর থেকে সেবাটি বন্ধ রেখেছিল টুইটার। এর আগে টুইটারের জরিপ থেকে আসা ফলাফল আগ্রহের সঙ্গেই কার্যকর করেছেন মাস্ক। বিভিন্ন সময় লাতিন প্রবচন ‘ভক্স পপুলি, ভক্স দেই’ ব্যবহার করেছেন তিনি; যার মানে দাঁড়ায় গণমানুষের কণ্ঠই ঈশ্বরের কণ্ঠ। কিন্তু প্রধান নির্বাহীর পদ নিয়ে জরিপে কার্যত তার ওপর ব্যবহারকারীদের অনাস্থার বিষয়টি উঠে এসেছে।

এখন জরিপ বা ভোটাভুটি আয়োজন ও অংশগ্রহণের প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনার কথা ভাবছেন মাস্ক।

সাবস্ক্রাইব করুন The Penguins Club খবরপত্রিকায়

প্রতি শুক্রবার বিশেষ খবর এবং আলোচনায় অংশগ্রহন করতে আপনার ইমেইল দিন।


Tagged:
About the Author

বিগত প্রযুক্তি বিষয়ক লেখালেখি করছি - বাংলা লেখিকা

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.