Reading Time: 2 minutes

মার্কিন সংবাদপত্র নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুক্রবার সকালে যুক্তরাষ্ট্রের ‘স্পেস কমান্ড’ নিশ্চিত করেছে, চীনের তিয়ানগং মহাকাশ স্টেশনের তৃতীয় ও চূড়ান্ত অংশ কক্ষপথে নিয়ে যাওয়া রকেটের বিভিন্ন টুকরা পুনরায় বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে দক্ষিণ-মধ্য প্রশান্ত মহাসাগরে গিয়ে পড়েছে। তবে, এর ধ্বংসাবশেষ পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় কারও ক্ষতি হয়নি। ২০২২ সালে এ নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো চীনের‘লং মার্চ ৫বি’ রকেটের অনিয়ন্ত্রিত অবশিষ্টাংশ আছড়ে পড়েছে পৃথিবীপৃষ্ঠে।

আর এর ফলে, নিজেদের আকাশসীমা সাময়িকভাবে বন্ধ রেখেছিল দক্ষিণ ইউরোপের দেশ স্পেন। মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা রকেটের ধ্বংসাবশেষ পৃথিবীতে আছড়ে পড়ার বিষয়টি শুধুমাত্র এই প্রথমই নয়। অগাস্টে ‘স্পেসএক্স ক্রু ড্রাগন’ নভোযানের একটি টুকরো খুঁজে পেয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার গ্রামের এক কৃষক, যেটি গিয়ে পড়েছে তার ফসলের জমিতে। অনেক বিশ্লেষক বলছেন, ওই সব ঘটনার চেয়ে শুক্রবারের ঘটনা একেবারে আলাদা।

নিউইয়র্ক টাইমসকে অ্যারোস্পেস কর্পোরেশনের পরামর্শক টেড মুয়েলহপ্ট বলেন, এই বিষয়ে যা বলা যায় তা হলো, প্রয়োজনের চেয়ে অতিরিক্ত বেশি আকারের রকেট উৎক্ষেপণ না করাই উচিত, যেটি যে কোনো জায়গায় আছড়ে পড়বে। গত ৫০ বছরেও এরকম কাজ করা হয়নি। ২০২০ সালে উদ্বোধনের পর থেকে চীনের সবচেয়ে শক্তিশালী এই হেভি-লিফট রকেট পৃথিবীতে অনিয়ন্ত্রিত প্রবেশের চতুর্থ ঘটনা এটি। এনগ্যাজেটের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ‘জুনতিয়ান’ নামের মহাকাশ টেলিস্কোপ কক্ষপথে পৌঁছাতে আগামী বছর আরেকটি লং মার্চ ৫বি উৎক্ষেপণ করবে চীন।

নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, স্পেসএক্স-এর ফ্যালকন ৯ রকেটের মতো আধুনিক রকেটগুলোর সঙ্গে তফাৎ হচ্ছে, ভূপৃষ্ঠে নিয়ন্ত্রিত উপায়ে ফেরার জন্য নতুন করে ইঞ্জিন চালু করতে পারে না লং মার্চ ৫বি। গেল শুক্রবার, এই অভিযানে বিদ্যমান ঝুঁকির কারণে নিজেদের আকাশসীমার কয়েকটি অংশ বন্ধ করে দেয় স্পেন। এর ফলে, বিলম্বিত হয় শত শত ফ্লাইট। ভূপৃষ্ঠে রকেটের অনিয়ন্ত্রিত প্রবেশ ঠেকাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেওয়ায় চীনের সমালোচনা করেছেন নাসা প্রধান বিল নেলসন।

এই বছরের শুরুতে ‘ওয়েনতিয়ান’ অভিযানের পর একই কথা বলেছিলেন তিনি। নভোযাত্রায় সক্ষম দেশগুলোর নিজস্ব মহাকাশ কার্যক্রমের জন্য দায়বদ্ধ ও স্বচ্ছ থাকা গুরুত্বপূর্ণ বলেন তিনি। আর দরকার চলতি সেরা অনুশীলনগুলোর অনুসরণ করা। বিশেষ করে, বড় আকারের রকেটের ধ্বংসাবশেষ পৃথিবীতে অনিয়ন্ত্রিত প্রবেশের বেলায়। বড় ক্ষতি বা প্রাণহানির কারণ হতে পারে এসব ধ্বংসাবশেষ। প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট এনগ্যাজেটের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত কাউকে ক্ষতির মুখে ফেলেনি এই রকেট, হয়তো ভবিষ্যতেও ফেলবে না।

এর পরও, চীন যতোবার একে মহাকাশে পাঠায়, ততবারই ভূপৃষ্ঠে এটি ফিরে আসার কার্যক্রম গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেন বিভিন্ন জোতির্বিজ্ঞানি ও দর্শক। তবে ভয় থাকে যে, এটি হয়তো মানব বসতিপূর্ণ কোনো জায়গায় গিয়ে পড়বে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে এনগ্যাজেট। 

সাবস্ক্রাইব করুন The Penguins Club খবরপত্রিকায়

প্রতি শুক্রবার বিশেষ খবর এবং আলোচনায় অংশগ্রহন করতে আপনার ইমেইল দিন।


Tagged:
About the Author

বিগত প্রযুক্তি বিষয়ক লেখালেখি করছি - বাংলা লেখিকা

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.