২০২১ সালে মার্কিন নাসার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেয়া বিল নেলসন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র চীনের সঙ্গে নতুন এক মহাকাশ প্রতিযোগিতায় জড়িয়েছে। আর পৃথিবীতে দেশ দুটোর মধ্যে চলমান ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতার ব্যাপ্তি ছড়াতে পারে চাঁদ পর্যন্ত। চীন যদি যুক্তরাষ্ট্রের আগেই চন্দ্রপৃষ্ঠে স্থায়ী ঘাঁটি স্থাপন করে, তবে তারা ওই এলাকা দাবি করতে পারে এমন সতর্কবার্তাই দিলেন বিল নেলসন। তিনি বলেন, উভয় দেশই একটি মহাকাশ প্রতিযোগিতায় যুক্ত হয়েছে।
বৈজ্ঞানিক গবেষণার ছদ্মবেশে তারা যেন চাঁদে কোনো জায়গা দখল না করে, সেদিকে নাসাকে ভালোভাবে নজর রাখতে হবে। আর তাদের এটি বলার সম্ভাবনাও আছে যে, তাদের এই ধরনের প্রতিযোগিতা বন্ধ রাখা হোক, তাদের চলমান অস্থিরতার প্রভাব যেন মহাকাশে গিয়ে না পড়ে সেই বিষয়ে জার্মান ভিত্তিক সংবাদ সাইট পলিটিকোকে বলেন বিল নেলসন। চীনের তরফ থেকে সম্ভাব্য অপকর্মের বিষয়টি উল্লেখ করে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন বা আইএসএস এর সাবেক কমান্ডার টেরি ভার্টসও।
এইসব মন্তব্য এসেছে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে, যেখানে চাঁদের দূরবর্তী অংশে অবতরণে সক্ষম মহাকাশযান তৈরির সক্ষমতাসহ চীনের মহাকাশ কর্মসূচির বর্তমান পরিস্থিতির বিশদ বিবরণ আছে। এদিকে, নিজেদের উদ্দেশ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন শঙ্কার কথা ধারাবাহিকভাবেই অস্বীকার করে আসছে চীন। চীনের স্বাভাবিক ও বৈধ মহাকাশ কার্যক্রম ভুলভাবে প্রদর্শন করে কিছু সংখ্যক মার্কিন কর্মকর্তা দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় দিয়েছেন বলে ওয়াশিংটনে অবস্থিত চীনা দূতাবাসের এক মুখপাত্র জানান।
তিনি বলেন চীন সবসময় মহাকাশের শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের পক্ষে এবং অস্ত্রায়ণ ও অস্ত্র প্রতিযোগিতার বিরোধিতা করে। আর মহাকাশে মানবজাতির জন্য সমন্বিত ভবিষ্যত’সহ একটি কমিউনিটি গড়ে তুলতে দেশটি সক্রিয়ভাবে কাজ করে। গত বছরের নভেম্বরে মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের একশ ছিয়ানব্বই পৃষ্ঠার দীর্ঘ এই প্রতিবেদন প্রকাশ পেয়েছে। এতে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বিভিন্ন উদ্দেশ্য অনুমানের পাশাপাশি সম্ভাব্য দ্বিতীয় মহাকাশ প্রতিযোগিতার বিষয়টিও উল্লেখ আছে।
বেইজিংয়ের লক্ষ্য, একটি বিস্তৃত ও সক্ষম মহাকাশ শক্তিতে পরিণত হওয়া। এর দ্রুতবর্ধনশীল মহাকাশ কর্মসূচী, যুক্তরাষ্ট্রের পর মহাকাশে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্যাটেলাইট স্থাপন দেশটির জাতীয় গর্বের উৎস আর চীনকে একটি শক্তিশালী ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে চেয়ারম্যান শি জিনপিংয়ের চায়না ড্রিমের অংশও এটি উল্লেখ রয়েছে প্রতিবেদনে।