ব্যবহারকারীর গতিবিধি নজর রাখার জন্যে মাইক্রোসফটের সঙ্গে একটি গোপন চুক্তির খবর ফাঁস হয়ে যাওয়ায় চাপের মুখে পড়েছে জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন ডাকডাকগো।
ডাকডাকগো (DuckDuckGo), নিরাপত্তা এবং স্বচ্ছতার জন্য ব্যবহারকারীদের কাছে বেশ জনপ্রিয় এই সার্চ ইঞ্জিনটি। সম্প্রতি এক টেক প্রতিবেদনে জানা গেছে যে ডাকডাক গো এর সাথে মাইক্রোসফট এর গোপন চুক্তির বিষয়টি ব্যবহারকারীদের কাছে ফাঁস হয়ে গেছে। দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে গোপন চুক্তি আবিষ্কার করেছেন নিরাপত্তা গবেষকরা।
বিতর্কের মুখে মাইক্রোসফটের সঙ্গে গোপন চুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডাকডাকগো’র প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও ‘গ্যাব্রিয়েল উইনবার্গ’ “Gabriel Weinberg”।এ খবর প্রকাশের পর ব্যবহারকারীদের ক্ষোভের মুখে পড়েছে ডাকডাকগো। খবরটি নিশ্চিত হওয়ার পর সার্চ ইঞ্জিনটি নিয়ে ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার শঙ্কাও বাড়ছে।
প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট টেকরেডার প্রো-এর প্রতিবেদনে মাইক্রোসফটের সঙ্গে সার্চ ইঞ্জিনটির গোপন চুক্তির বিষয়টি উঠে এসেছে। সার্চ ইঞ্জিন সুবিধার পাশাপাশি একই নামের একটি মোবাইল ব্রাউজারও চালু করেছে ডাকডাকগো। শুরু থেকে ডাকডাকগো ‘থার্ড-পার্টি ট্র্যাকার’ ব্লক করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছিলো । তবে, নিরাপত্তা গবেষকরা বলছেন, প্রতিশ্রুতির ব্যতিক্রমী ছিল মাইক্রোসফট।
সাইবার নিরাপত্তা গবেষকদের তথ্য মতে, সফটওয়্যার জায়ান্ট মাইক্রোসফটের সঙ্গে একটি ‘সার্চ সিন্ডিকেশন’ এর চুক্তি রয়েছে ডাকডাকগোর। এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে– স্বচ্ছতার জন্য এক ভিন্ন পরিচিতি পাওয়া ডাকডাকগো কেনো মাইক্রোসফটের সঙ্গে চুক্তির বিষয়টি এতোদিন গোপন রেখেছে।
এ প্রসঙ্গে গ্যাব্রিয়েল উইনবার্গ বলেন, “ব্রাউজ করার সময় কখনই পরিচয় প্রকাশ না করার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা সব সময় অত্যন্ত সতর্ক ছিলাম; কারণ এটা সম্ভবও নয়। আমরা যে টুলগুলো দেই সেগুলো এড়াতে ট্র্যাকারগুলো যতো দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে সেই পরিপ্রেক্ষিতে এটা সম্ভবও নয়।”
“বাজারের অন্যান্য ব্রাউজার যখন ট্র্যাকিং নিরাপত্তার কথা বলে, তারা সাধারণত ‘থার্ড-পার্টি কুকি’ এবং ‘ফিঙ্গারপ্রিন্ট’ নিরাপত্তাকেই বোঝায়। আর আমাদের আইওএস, অ্যান্ড্রেয়েড, নতুন ম্যাক বেটা ব্রাউজার সংস্করণ তৃতীয় পক্ষীয় ট্র্যাকিং স্ক্রিপ্টগুলোর ওপর এই বিধিনিষেধ আরোপ করে; এর মধ্যে মাইক্রোসফটও আছে।”
“কিন্তু আমরা এখানে এমন একটি নিরাপত্তা ব্যবস্থার কথা বলছি যা বেশিরভাগ ব্রাউজার অর্জনের চেষ্টাও করে না। অর্থাৎ, তৃতীয় পক্ষীয় ওয়েবসাইট লোড করার আগেই তৃতীয় পক্ষীয় স্ক্রিপ্টগুলো ব্লক করা।”– যোগ করেন তিনি।
ডাকডাকগো এই কৌশল অবলম্বন করায় বেশিরভাগ ব্যবহারকারী অন্যান্য ব্রাউজার তুলনায় অনেক বেশি প্রাইভেসি নিরাপত্তা পাচ্ছেন বলে দাবি করেছেন ওয়েইনবার্গ।
এতোদিন ব্যবহারকারীর সার্চ বা অন্যান্য গতিবিধির ওপর নজরদারি না করার দাবি করে এসেছে ডাকডাকগো।
প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব ওয়েবসাইটের বিবরণীতেই লেখা আছে, “ইয়োর পারসোনাল ডেটা ইজ নোবডি’জ বিজনেস।” বাংলা তর্জমা করলে যার মানে দাঁড়ায়, “আপনার ব্যক্তিগত তথ্য অন্য কারও মাথাব্যাথার বিষয় নয়।”