Reading Time: 2 minutes

ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি বা ইএসএ পুরো মিল্কি ওয়ে গ্যালাক্সির ম্যাপ আঁকার চেষ্টা করছে। আর সেই প্রচেষ্টা থেকেই আমাদের সৌরজগতের একমাত্র নক্ষত্রটির অন্তিম মুহূর্তের নানা তথ্য উঠে এসেছে। এক হাজার থেকে এক হাজার একশ কোটি বছর বয়সে সৌরজগতের সূর্য তাপ হারাতে শুরু করবে, কিন্তু তাপ হারালেও বাড়তে থাকবে আকার। আমাদের সৌরজগতের একমাত্র নক্ষত্রটি জীবদ্দশার শেষ পর্যায়ে গিয়ে রেড জায়ান্টে পরিণত হবে। মহাকাশ গবেষকরা বলছেন, বয়সের হিসেবে সূর্যকে মধ্যবয়স্ক বলা যেতে পারে।

বিশাল এই নক্ষত্রটি আরও পাঁচশ থেকে সাতশ কোটি বছর পরে জীবনের শেষ প্রান্তে পৌঁছে যাবে। এর জ্বালানী হাইড্রোজেনও ফুরিয়ে আসবে। শীতল হয়ে আসবে সূর্য, হারাবে উজ্জ্বলতা; তারপর হয় একটি মহাজাগতিক মৃতদেহ অথবা শক্তির শেষ টুকু একীভূত করে এটি একটি হোয়াইট ডোয়ার্ফ বা বামন নক্ষত্রে পরিণত হবে। রেড জায়ান্ট আদতে জীবনের শেষ পর্যায়ে পা দিতে যাওয়া একটি নক্ষত্র; এ পরিস্থিতিতে নক্ষত্রের পৃষ্ঠের তাপমাত্রা কমে আসে, কিন্তু বেড়ে যায় উজ্জ্বলতা।

নিউক্লিয়ার ফিউশনের জন্য কোনো হাইড্রোজেনও অবশিষ্ট থাকে না এর কেন্দ্রে। ঘটনা প্রবাহ দুঃখজনক শোনালেও এর কোনোটিই এখনকার সময়ের মানুষের জীবদ্দশায় ঘটবে না। ইএসএর মিল্কি ওয়ে গ্যালাক্সির ম্যাপ আঁকার প্রকল্পে অংশ নিচ্ছেন ক্রিভেহ। ‘গায়্যা’ নামের প্রকল্পটির অংশ হিসেবে মহাকাশের প্রতিবেশীদের নিয়ে ডায়াগ্রাম বানাতে গিয়েই বিশাল এই সৌরজগতের নক্ষত্রটির ভবিষ্যৎ উদঘাটন করেছেন তারা। মহাকাশ গবেষকদের হিসাবে সূর্য এখন নিজের জীবনের ভরা যৌবন কাটাচ্ছে।

বয়সও খুব একটা বেশি নয়, ৪৫৭ কোটি বছর, কিন্তু তারপরও সূর্যের ভবিষ্যৎ নিয়ে কৌতূহলী মহাকাশ গবেষকরা। তবে, প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট সিনেট জানিয়েছে, কৌতূহলী হলেও দূরের অন্য যে কোনো নক্ষত্রের তুলনায় আমাদের সৌরজগতের নক্ষত্রটি নিয়ে গবেষণা বেশ কষ্টসাধ্য কেবল এর উজ্জ্বলতার কারণেই। তাই এর ওপর নজর রাখতে বিশেষায়িত যন্ত্রপাতির ও দরকার রয়েছে। হিসাব অনুসারে, সূর্য তার সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পৌঁছাবে আটশ কোটি বছর বয়সে গিয়ে। 

বিজ্ঞাপন (কেন?)

তারপর তাপ হারাতে শুরু করবে নক্ষত্রটি, কিন্তু একই সঙ্গে এর আকার বাড়তে থাকবে। ফরাসি মহাকাশ গবেষক ওরলাহ ক্রিভেহর জানান যে মানুষ যদি নিজের নক্ষত্রকেই বুঝতে না পারেন এবং যার ব্যাপারে অনেকেই অনেক কিছুই জানেনা, তাহলে তো তাদী গ্যালাক্সির অন্য নক্ষত্রগুলো সম্পর্কে বোঝার আশা করাটা একদমই অসম্ভব। গায়্যার তথ্য বলছে এক হাজার থেকে এক হাজার একশ কোটি বছর বয়সে গিয়ে একটি চোখ ধাঁধানো রেড জায়ান্ট এ পরিণত হবে সৌরজগতের সুবিশাল এই নক্ষত্র সূর্য।

তারপর জীবনের শেষ অংশে পা দেবে নক্ষত্রটি। ইএসএ জানিয়েছে, গবেষকগণ সূর্যের সঙ্গে মিল আছে এমন পাঁচ হাজার ৮৬৩টি নক্ষত্রের খোঁজ পেয়েছেন। গায়্যা প্রকল্পে অংশগ্রহণকারীরা বলছেন, এতে কেবল আমাদের সৌরজগতের নক্ষত্রটির ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জানা যাচ্ছে, এমনটা নয়। বরং মহাকাশের অন্যান্য নক্ষত্র নিয়ে গবেষকদের নানা প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবে গায়্যা প্রকল্পে অধীনে সংগৃহীত তথ্য উপাত্ত। সিনেট জানিয়েছে, সূর্যের ভবিষ্যৎ নিয়ে জানতে গায়্যা প্রকল্পের অংশ হিসেবে সংগৃহিত বিশাল তথ্যভাণ্ডার থেকে গবেষকগণ তথ্য নিয়েছিলেন।

তারপর সূর্যের সঙ্গে মাধ্যাকর্ষণ, রাসায়নিক গঠন, তাপমাত্রা, আকার ও ভরের হিসেবে মিল আছে এমন নক্ষত্রগুলোর সঙ্গে তুলনা বিচার করেছেন তারা। তবে, নানা বিষয়ে সূর্যের সঙ্গে মিল আছে এমন নক্ষত্র বাছাই করলেও গবেষকগণ একই বয়সের নক্ষত্র নির্বাচন করেননি। বরং একই রকমের কিন্তু বিভিন্ন বয়সের নক্ষত্রের তথ্য বিশ্লেষণ করে তারা একটি নক্ষত্রের পুরো জীবনের বিস্তারিত সময়রেখা আঁকার চেষ্টা করেছেন।

সাবস্ক্রাইব করুন The Penguins Club খবরপত্রিকায়

প্রতি শুক্রবার বিশেষ খবর এবং আলোচনায় অংশগ্রহন করতে আপনার ইমেইল দিন।


Tagged:
About the Author

বিগত প্রযুক্তি বিষয়ক লেখালেখি করছি - বাংলা লেখিকা

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.