যুক্তরাষ্ট্রের আলোচিত স্বাস্থ্য প্রযুক্তি কোম্পানি থেরানোসের প্রতিষ্ঠাতা এলিজাবেথ হোমস
বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্রতারণার মামলার জের ধরে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। আদালত বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্রতারণার ষড়যন্ত্র এবং ইলেকট্রনিক মাধ্যমে প্রতারণার তিন ঘটনাসহ তার বিরুদ্ধে চারটি অভিযোগের সন্দেহাতীত প্রমাণ পেয়েছেন। ক্যালিফোর্নিয়ার ফেডারেল আদালতে কয়েক মাস ধরে চলা বিচার শেষে জুরিরা এ রায়ের ঘোষণা দেন। বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয় যে এসব অপরাধের প্রতিটির জন্য হোমসের সর্বোচ্চ ২০ বছর করে সাজা হতে পারে।
সে পরিপ্রেক্ষিতে তার কারাদন্ডের মেয়াদ হতে পারে ৮০ বছর। হোমস মিডিয়া মুগল রুপার্ট মারডক ও টেক মুগল ল্যারি এলিসনের মতো কোটিপতিদের কাছ থেকে তিনি ৯০ কোটি ডলারের তহবিল সংগ্রহ করেন। স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির রসায়ন প্রকৌশল থেকে ঝরে পড়ার পরপরই কিশোরী হোমস থেরানোস প্রতিষ্ঠা করেন। এই দূর্ঘটনার পর ২০১৮ সালে কোম্পানির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এলিজাবেথ হোমসের বিরুদ্ধে ১১টি অভিযোগ আনা হয়েছিল। এর মধ্যে জনগণকে প্রতারণা বিষয়ের চারটিতে তিনি নির্দোষ প্রমাণিত হন। এরপরে তিনটির বিষয়ে জুরিরা ঐক্যমতে পৌঁছাতে পারেননি।
পরবর্তীকালে চারটি অভিযোগ বিষয়ে যথাযথ রায় দেয়া হয়। রাষ্ট্রপক্ষের কৌশলবীদদের অভিযোগ রক্তের কয়েক ফোঁটা দিয়ে রোগ শনাক্ত করা যাবে এমন প্রযুক্তি নিয়ে হোমস জেনেশুনে মিথ্যা বলেছিলেন। তবে হোমস তার বিরুদ্ধে করা অভিযোগগুলো অস্বীকার করছেন। যদিও রায় ঘোষণার পরও হোমসকে জেলহাজতে নেওয়া হয়নি। সাজা ঘোষণার দিন এখনো ঠিক হয়নি, পরের সপ্তাহে শুনানির দিন হবে বলে জানা গেছে। সিলিকন ভ্যালির একসময়ের প্রিয় কোম্পানি থেরানোসের মূল্য এক সময় ৯০০ কোটি ডলার হয়েছিল। কোম্পানিটি স্বাস্থ্যসেবা খাতে সর্বোপরি পরিবর্তন আনার প্রতিশ্রুতি দিয়ে শুরু করেছিল।
কিন্তু এর প্রধান পণ্য রক্ত পরীক্ষার প্রযুক্তি অকার্যকর বলে ২০১৫ সালে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রতিবেদন ছাপার পর বিষয়টি মিথ্যা বলে ফাঁস হয়ে যায়। আসামীপক্ষ হোমসের সাবেক বিজনেস পার্টনার ও দীর্ঘদিনের বয়ফ্রেন্ড রমেশ সানি বলওয়ানির ঘাড়েও দোষ চাপাতে চেয়েছিল। হোমসের চেয়ে বয়সে ১৯ বছরের বড় বলওয়ানির বিরুদ্ধে মানসিক ও যৌন নিপীড়নের অভিযোগ তুলেছিল হোমস নিজেই, যেটা তিনি অস্বীকার করেছেন। প্রায় চার মাস ধরে চলা এই ২০১৬ সালের মে মাসে সিইও হিসেবে পদত্যাগের সময়ে হোমস এবং তার বয়ফ্রেন্ডের মধ্যে ১০ বছরের সম্পর্কের সমাপ্তি ঘটে।
আগামী মাসে অন্য মামলায় তার বিচার হবে। বিচারে আটজন পুরুষ ও চারজন নারী জুরিদের মধ্যে ছিলেন। হোমস আত্মপক্ষ সমর্থনে থেরানোস পরিচালনায় ত্রুটির কথা স্বীকার করলেও জেনেশুনে রোগী বা বিনিয়োগকারীদের সাথে প্রতারণা করেননি বলে জোরালোভাবে দাবী করছিলেন।