সম্প্রতি ইলন মাস্ক টুইটারের পরিচালনা পর্ষদে নতুন সদস্য হিসেবে যোগ দিয়েছেন। টুইটার পোল চালু করে ব্যবহারকারীরা আদৌ ফিচারটি চান কি না সে সম্পর্কে মাস্ক প্রশ্ন তোলার পরপরই টুইটার নিশ্চিত করেছে যে আগে থেকেই ফিচারটি নিয়ে কাজ চলছে। এডিট বাটন নামক ফিচারটি নিয়ে কাজ চলছে বলে টুইটার নিশ্চিত করে। ফিচারটি বড় পরিসরে চালু হলে ব্যবহারকারী নিজের প্রয়োজন মতো টুইট এডিট করার সুবিধা পাবেন। আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই ফিচারটি চালু হবে বলে নিশ্চিত করেছে টুইটার। টুইটার ব্যবহারকারীদের একটা অংশ এডিট বাটন এর দাবি করে আসছেন দীর্ঘ সময় ধরে।
তবে ফিচারটি কিভাবে কার্যকর হবে, সে প্রশ্নেই নানা অশ্চিয়তা ছিল বলে বিবিসি জানিয়েছে। বিবিসির প্রতিবেদন বলছে যে ব্যবহারকারীরা টাইপো বা অনিচ্ছাকৃত বানান ভুল এডিট ফিচারের মাধ্যমে ঠিক করতে পারবেন। এর ফলে টুইটের কোনো রিপ্লাই, রিটুইট বা লাইকে কোনো প্রভাব পড়বে না। সোমবার টুইটারের বৃহত্তম অংশীদার হিসেবে ইলন মাস্ক আত্মপ্রকাশ করেছেন। মাইক্রোব্লগিং সেবাটির ৯.২ শতাংশ শেয়ার টেসলা ও স্পেসএক্স প্রধানের মালিকানায় রয়েছে। এর পরপরই তিনি এডিট বাটন নিয়ে টুইটার পোল চালু করেন। মঙ্গলবারেই ঘোষণা এসেছে যে মাস্ক টুইটারের পরিচালনা পর্ষদে যোগ দিয়েছেন।
টুইটারে ইলন মাস্ক নিজের শেয়ার নিয়ে কোনো টুইট করেননি। যারা ব্যাপারটি নিয়ে আগ্রহী ছিলেন ছিলেন, তাদের কাছে বিষয়টি কিছুটা হাস্যকর লেগেছে। হয়ত সামাজিক মাধ্যমটিতে তার ৯ দশমিক দুই শতাংশ মালিকানাকে নিষ্ক্রিয় শেয়ার হিসেবে আখ্যায়িত করায় এমনটি হয়েছে। মাস্ক সম্পর্কে যারা ভালভাবে জানেন, তারা চাইবেন না যে তিনি এভাবে দীর্ঘ সময় থাকেন। শেয়ার কেনার পর তার প্রথম পদক্ষেপ ছিল মানুষের মতামতের ভিত্তি একটি পোল চালু করা। তাই টুইটারে তিনি পোস্ট দিয়ে কারা এডিট বাটনের প্রতি ইচ্ছুক তা জানতে চান, অনেক আগেই এমন দাবি উঠেছিল।
ইতোমধ্যেই ৪০ লাখেরও বেশি ভোট পড়েছে মাস্কের টুইটার পোলে। টুইট এডিট করার প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে শঙ্কায় ২০১৮ সালে সাবেক টুইটার প্রধান জ্যাক ডরসি বলেছিলেন যে তার প্রতিষ্ঠান সম্ভবত কখনোই ফিচারটি যোগ করবে না। তবে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমের বাজারে টুইটারের প্রতিদ্বন্দ্বী ফেইসবুক ও ইনস্টাগ্রামে পোস্ট এডিট করার ফিচার আগে থেকেই চালু আছে। টুইটারের বর্তমান প্রধান পরাগ আগরওয়ালও এডিট ফিচারের বিরোধী নন এমন খবর বিবিসির এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। এপ্রিলের প্রথম তারিখেই টুইটার এডিট বাটন বিবেচনা করে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছিল।
তবে বিষয়টিকে এপ্রিল ফুলস হিসেবে নিয়েছিলেন অনেকেই। মঙ্গলবার টুইটারের ভোক্তা পণ্যবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট জে সালিভান এক টুইটার থ্রেডে মন্তব্য করেন যে এটি বেশ কয়েক বছর ধরেই টুইটারের সবচেয়ে আকাঙ্খিত ফিচার। তার প্রতিষ্ঠান ফিচারটি নিরাপদভাবে নির্মাণের বিষয়টি বিবেচনা করছে বলে তিনি জানিয়েছেন। কী এডিট করা হয়েছে সে বিষয়ে নির্দিষ্ট সময় সীমা, নিয়ন্ত্রণ এবং স্বচ্ছতা না থাকলে এডিট ফিচারের অপব্যবহার করে উন্মুক্ত আলোচনার প্রমাণ পরিবর্তন করা হতে পারে। জনসমুক্ষে উন্মুক্ত আলোচনার বিশুদ্ধতা ধরে রাখা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
সামাজিক মাধ্যমটির গণযোগাযোগ বিভাগ টুইট করেছে যে সবাই যেহেতু জিজ্ঞেস করছে তখন নিশ্চিত করা হচ্ছে যে গত বছর থেকে এডিট ফিচারটি নিয়ে কাজ করছে টুইটার। তবে কোনো পোল থেকে বুদ্ধিটা পাননি এমনটাও যোগ করেছে টুইটার কর্তৃপক্ষ। তারা বলেন যে সামনের মাসগুলোতে টুইটারব্লু ল্যাবসে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করা হবে এড়ি দেখার জন্য যে, কী কাজ করছে আর কী করছে না। টুইটার ব্লু মাইক্রোব্লগিং প্ল্যাটফর্মটির সাবস্ক্রিপশন সেবা। এই শ্রেনীভুক্ত গ্রাহকরা টুইটারের পরীক্ষামূলক ফিচারগুলো আগেভাগেই ব্যবহারের সুযোগ পান।